Posts

Showing posts from March, 2020

লবণের জলীয় দ্রবণের প্রকৃতি কিভাবে সহজে বের করা যায়।

যেকোনো লবণের জলীয় দ্রবণের প্রকৃতি কিভাবে সহজে বের করা যায়। আমরা জানি, অম্ল ও ক্ষারক বিক্রিয়া করে লবণ গঠন করে।  অম্ল ও ক্ষারকের মধ্যে যেটি শক্তিশালী উৎপন্ন লবণের জলীয় দ্রবণের প্রকৃতি ওই শক্তিশালী অম্ল ও শক্তিশালী ক্ষারকের প্রকৃতির মত। যেমনঃ অ্যালুমিনিয়াম ক্লোরাইড (AlCl₃) লবণ দুর্বল ক্ষারক অ্যালুমিনিয়াম হাইড্রোক্সাইড Al(OH)₃ ও শক্তিশালী অম্ল হাইড্রোক্লোরিক এসিডের (HCl) বিক্রিয়ায় উৎপন্ন হয়।  এখানে, অ্যালুমিনিয়াম হাইড্রক্সাইড Al(OH)₃ দুর্বল হওয়ায় জলীয় দ্রবণে আংশিক বিয়োজিত হয়। Al(OH)₃ (aq) <-------> Al³+ (aq) +3OH-(aq)   কিন্তু হাইড্রোক্লোরিক এসিড (HCl) সবল হওয়ায় জলীয় দ্রবণে সম্পূর্ণরূপে বিয়োজিত হতে পারে।      HCl (aq) ------> H+(aq)+Cl - (aq)   এ কারণে জলীয় দ্রবণে প্রোটনের (H+) ঘনমাত্রা বেশি থাকে।  এজন্য অ্যালুমিনিয়াম ক্লোরাইড এর জলীয় দ্রবণ অম্লীয়। আবার, সোডিয়াম কার্বনেট (Na₂CO₃) এর জলীয় দ্রবণ ক্ষারীয়। কারণ, সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড (NaOH) ও দুর্বল কার্বনিক অ্যাসিডের (H₂CO₃) সমন্বয়ে সোডিয়াম কার্বনেট লবণ গঠিত। জলীয় দ্রবণে সোডিয়াম

সোডিয়াম কার্বনেট(Na₂CO₃)এর জলীয় দ্রবণ ক্ষারীয় কেন?

সোডিয়াম কার্বনেট(Na₂CO₃)এর জলীয় দ্রবণ ক্ষারীয় কেন?   সোডিয়াম কার্বনেট (Na₂CO₃) লবণটি সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড (NaOH) ও কার্বনিক অ্যাসিডের (H₂CO₃) বিক্রিয়ায় উৎপন্ন হয়। NaOH + H₂CO₃  -------> Na₂CO₃ +H₂O আবার, সোডিয়াম কার্বনেট লবণ পানিতে আর্দ্রবিশ্লেষিত হয়ে সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড ও কার্বনিক অ্যাসিড উৎপন্ন করে। Na₂CO₃ +H₂O -------> NaOH + H₂CO₃ সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড শক্তিশালী ক্ষার হওয়ায় পানিতে সম্পূর্ণরূপে আয়নিত হতে পারে। NaOH(aq) -------> Na+(aq) + OH-(aq) অপরদিকে, কার্বনিক এসিড দুর্বল হওয়ায় পানিতে সম্পূর্ণ আয়নিত হতে পারে না। H₂CO₃(aq) --------> H+(aq) + HCO₃-(aq) যেহেতু সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড সম্পূর্ণ আয়নিত হয়, সেহেতু পানিতে হাইড্রোক্সিল আয়নের ঘনমাত্রা বেশি থাকে।  সেজন্য সোডিয়াম কার্বনেটের জলীয় দ্রবণ ক্ষারীয়।

কপার পাইরাইটস আকরিক থেকে কপার নিষ্কাশন কষ্টকর কেন?

কপার পাইরাইটস আকরিক থেকে কপার নিষ্কাশন কষ্টকর কেন? কপার পাইরাইটস (Cu₂S) আকরিক থেকে কপার নিষ্কাশন কষ্টকর কারণঃ ১. কপার পাইরাইটস নিম্নমানের আকরিক। এতে আকরিকের সম্পূর্ণ ভরের মাত্র 2% থেকে 3% কপার থাকে। কপার পাইরাইটস এর সাথে অপদ্রব্য রূপে ফেরিক সালফাইড (Fe₂S₃) থাকে। ২. তাপজারণে উৎপন্ন ফেরাস অক্সাইড (FeO) সিলিকা (SiO₂) এর সাথে বিক্রিয়া করে ফেরাস সিলিকেট (FeSiO₃) গঠন করে। সমস্ত ফেরাস সালফাইড (FeS) অপসারণ করতে প্রক্রিয়াটি জটিল হয়ে পড়ে।         FeO (s) +SiO₂ (s) ----> FeSiO₃(l)

মরিচাবিহীন ইস্পাত কাকে বলে?

মরিচাবিহীন ইস্পাত কাকে বলে?   মরিচাবিহীন ইস্পাত হল একটি সংকর ধাতু। এতে লোহা (Fe) 74 %, ক্রোমিয়াম (Cr) 18% ও নিকেল (Ni) 8 % বিদ্যামান।  মরিচাবিহীন ইস্পাতে নিকেল স্টিলের কাঠিন্য বৃদ্ধি করে এবং ক্রোমিয়াম মরিচা প্রতিরোধ করে। এটি ছুরি, কাটা চামচ, ঘরের সিঙ্ক, অস্ত্রোপচারের যন্ত্রপাতি, বিভিন্ন মরিচাবিহীন পাত্র তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।

ভস্মীকরণ ও তাপজারণ কি?

ভস্মীকরণ ও তাপজারণ কি?   ভস্মীকরণঃ  যে প্রক্রিয়ায় কোন আকরিকে বায়ুর অক্সিজেনের অনুপস্থিতিতে উত্তপ্ত করে ধাতুর অক্সাইডে পরিণত করা হয় তাকে ভস্মীকরণ বলে।   সাধারণত কার্বনেট যুক্ত ও আর্দ্র আকরিককে ভস্মীকরণ করা হয়। ভস্মীকরণ করলে আকরিক থেকে কার্বনেট এবং জলীয় বাষ্প দূর হয় এবং ধাতুর অক্সাইড পরিণত হয়।   তাপজারণঃ  যে প্রক্রিয়ায় বায়ুর অক্সিজেনের উপস্থিতিতে আকরিকে উত্তপ্ত করে ধাতুর অক্সাইডে পরিণত করাকে তাপজারণ বলে।  সাধারণত যেসব আকরিকে কার্বনেট বা পানি থাকে না তাদেরকে তাপজারণ করা হয়।

খনিজ মল ও ধাতুমল কাকে বলে?

খনিজ মল ও ধাতুমল কাকে বলে?   খনিজমলঃ  বিচূর্ণ আকরিকের মধ্যে মাটি, বালি, পাথর এবং কতিপয় অধাতু ভেজাল হিসেবে থাকে যাদেরকে খনিজমল বলে।   ধাতুমলঃ  শিলাস্তূপে প্রচুর পরিমাণ যৌগ বা মুক্ত মৌল হিসেবে মূল্যবান ধাতু ও অধাতু পাওয়া যায়। এ বিশাল শিলাখণ্ড ভেঙ্গে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণায় রূপান্তর করা হয়।  পরবর্তীতে বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে ধাতু নিষ্কাশন করা হয়।  শিলা থেকে অপদ্রব্যসহ প্রাপ্ত ধাতুকে ধাতুমল বলে।

তেল ও চর্বি কাকে বলে?

তেল ও চর্বি কাকে বলে? তেলঃ  দীর্ঘ শিকল বিশিষ্ট অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বনের ট্রাই গ্লিসারাইড এস্টারকে তেল বলে। তেল সাধারণ তাপমাত্রায় তরল থাকে। চর্বিঃ  দীর্ঘ শিকল বিশিষ্ট সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বনের ট্রাই গ্লিসারাইড এস্টারকে তেল বলে। চর্বি সাধারণ তাপমাত্রায় কঠিন অবস্থায় থাকে।

ইথানল পানিতে দ্রবণীয় কিন্তু মিথেন, ইথেন পানিতে অদ্রবণীয়।

ইথানল পানিতে দ্রবণীয় কিন্তু মিথেন, ইথেন পানিতে অদ্রবণীয়।   পানি একটি পোলার সমযোজী যৌগ। আমরা জানি পোলার দ্রাবকে পোলার যৌগ এবং অপোলার দ্রাবকে অপোলার যৌগ দ্রবীভূত হয়। ইথানলে হাইড্রোক্সিল মূলক (OH-) বিদ্যমান থাকায়, ইথানল পোলার সমযোজী যৌগ। ইথানল পোলার হওয়ায় পানির সাথে হাইড্রোজেন বন্ধন গঠন করে এবং পানিতে দ্রবীভূত হয়।        H-O ----H-O ----H-O ----H-O          |           |           |          |         C₂H₅      H          C₂H₅    H   এজন্য ইথানল পানিতে দ্রবণীয় কিন্তু মিথেন, ইথেন, প্রোপেন, বিউটেন ইত্যাদি যৌগসমূহ অপোলার হওয়ায় এরা পানিতে অদ্রবণীয়।  ইথানল থেকে মিথানল এর পানিতে দ্রবণীয়তা বেশি। কারণ মিথানলের হাইড্রোকার্বন শিকল ইথানলের থেকে ছোট।  আবার ইথানল থেকে প্রোপানল এর পানিতে দ্রবণীয়তা কম। এক্ষেত্রে প্রোপানল এর হাইড্রোকার্বন শিকল ইথানল থেকে বড়।  অর্থাৎ অ্যালকোহলের অপোলার হাইড্রোকার্বন শিকলের দৈর্ঘ্য যত ছোট হয় অ্যালকোহল এর পানিতে দ্রবণীয়তা তত বৃদ্ধি পায়।

কৃষিক্ষেত্রে অ্যামোনিয়াম সালফেট এর ব্যবহার কি?

কৃষিক্ষেত্রে অ্যামোনিয়াম সালফেট এর ব্যবহার কি?   আমরা সাধারণত কৃষিকাজে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য রাসায়নিক সার প্রয়োগ করি। রাসায়নিক সার গুলোতে উদ্ভিদের মুখ্য পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান থাকে।  এছাড়াও মাটির pH নিয়ন্ত্রণের জন্য রাসায়নিক সার প্রয়োগ করা হয়। মাটির pH মান 7 এর চেয়ে বেশি হলে মাটি ক্ষারীয় হয়। ক্ষারীয় মাটিতে ভাল ফসল উৎপাদন হয় না। অ্যামোনিয়াম সালফেট (NH₄)₂SO₄ অম্লীয় সার। এই সার মাটিতে দিলে মাটির pH নিয়ন্ত্রিত হয় এবং ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। অ্যামোনিয়াম সালফেটে উদ্ভিদের মুখ্য পুষ্টি উপাদান নাইট্রোজেন ও সালফার উপস্থিত থাকে, যা উদ্ভিদের বৃদ্ধি ঘটাতে সহায়তা করে।  এইজন্য কৃষি ক্ষেত্রে অ্যামোনিয়াম সালফেট সার ব্যবহার করা হয়।

এসিড মিশ্রিত পানিকে তড়িৎ বিশ্লেষ্য পরিবাহী বলা হয় কেন?

এসিড মিশ্রিত পানিকে তড়িৎ বিশ্লেষ্য পরিবাহী বলা হয় কেন?   তড়িৎবিশ্লেষ্য পরিবাহীঃ  যেসব যৌগ বিগলিত বা দ্রবীভূত অবস্থায় তড়িৎ পরিবহন করে এবং সে সাথে রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে তাদেরকে তড়িৎ বিশ্লেষ্য পরিবাহী বলা হয়।   এসিড মিশ্রিত পানি একটি তড়িৎ বিশ্লেষ্য পরিবাহী।  কারণ নিষ্ক্রিয় ধাতুর (Pt) অ্যানোড ও ক্যাথোড ব্যবহার করে তড়িৎ রাসায়নিক কোষে অ্যাসিড মিশ্রিত পানির তড়িৎ বিশ্লেষণ করলে অ্যানোডে অক্সিজেন গ্যাস এবং ক্যাথোডে হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপন্ন হয়।  এক্ষেত্রে বিক্রিয়ায় ব্যবহৃত এসিড শুধু দ্রবণের মধ্যে দিয়ে বিদ্যুৎ পরিবাহিতার কাজ করে কিন্তু অ্যাসিডের কোন পরিবর্তন হয় না।               4H₂O(l) <--------> 4OH-  + 4H+      অ্যানোড বিক্রিয়াঃ          4OH-  --------> 2H₂O + O₂ + 4e-      ক্যাথোড বিক্রিয়াঃ               4H+  + 4e-  ---------> 2H₂       মোট কোষ বিক্রিয়াঃ                 2H₂O --------> 2H₂  +  O₂

গাঢ় নাইট্রিক এসিড (HNO) কে বাদামি রং এর বোতলে রাখা হয় কেন?

গাঢ় নাইট্রিক এসিড (HNO₃) কে বাদামি রং এর বোতলে রাখা হয় কেন?   গাঢ় নাইট্রিক এসিডকে (HNO₃) বাদামি বা অসচ্ছ বোতলে রাখা হয়। কারণ আলোর উপস্থিতিতে HNO₃ সহজেই ভেঙ্গে গিয়ে বা বিয়োজিত হয়ে বাদামী রঙের নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড (NO₂) তৈরি করে। এতে নাইট্রিক এসিডের অপচয় হয়। আলোর উপস্থিতিতে নাইট্রিক অ্যাসিড বিয়োজিত হয় বলে একে বাদামী রঙের বোতলে রাখা হয়।

অ্যালুমিনিয়াম সালফেটের Al₂(SO₄)₃ জলীয় দ্রবণ অম্লীয় কেন?

অ্যালুমিনিয়াম সালফেটের Al₂(SO₄)₃ জলীয় দ্রবণ অম্লীয় কেন? সবল এসিড H₂SO₄ ও দুর্বল ক্ষার Al(OH)₃  বিক্রিয়া করে অ্যালুমিনিয়াম সালফেট Al₂(SO₄)₃  লবণ গঠন করে।  এটি আবার জলীয় দ্রবণে বিয়োজিত হয়ে H₂SO₄ ও Al(OH)₃উৎপন্ন করে। Al₂(SO₄)₃ +6H₂O --->2Al₂(SO₄)₃ +3H₂SO₄   আবার, সালফিউরিক এসিড সবল হওয়ায় জলীয় দ্রবণে সম্পূর্ণরূপে বিয়োজিত হয়ে H+ ও SO₄² - আয়ন উৎপন্ন করে। H₂SO₄ (aq) --------> H+(aq) + SO₄² - (aq) অপরদিকে Al(OH)₃ দুর্বল ক্ষার বলে জলীয় দ্রবণে অল্প পরিমাণে বিয়োজিত হয়।  Al₂(SO₄)₃  লবণের জলীয় দ্রবণে H+(aq) আয়নের ঘনমাত্রা অধিক হওয়ার কারণে Al₂(SO₄)₃ এর জলীয় দ্রবণ অম্লীয় হয়।

ঘনীভবন ও যুত পলিমারের মধ্যে পার্থক্য কি?

ঘনীভবন ও যুত পলিমারের মধ্যে পার্থক্য কি? ঘনীভবন ও যুত পলিমারের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপঃ ১. যে পলিমারকরণ বিক্রিয়ায় মনোমার অনুসমূহ পরস্পরের সাথে যুক্ত হয়ে ক্ষুদ্র অনু HO, CO ইত্যাদি অপসারণ করে তাকে ঘনীভবন পলিমারকরণ বিক্রিয়া বলে। অপরদিকে, যে পলিমারকরণ বিক্রিয়ায় মনোমার অনুসমূহ পরস্পরের সাথে যুক্ত হয়ে দীর্ঘ শিকল বিশিষ্ট পলিমার গঠন করে তাকে যুত পলিমারকরণ বিক্রিয়া বলে। ২. যুত পলিমারকরণ বিক্রিয়া কোন উপজাত তৈরি হয় না।  কিন্তু ঘনীভবন পলিমারকরন বিক্রিয়ায় উপজাত ইত্যাদি তৈরি হয়। ৩. পলিথিন, পিভিসি, পলিপ্রপিলিন ইত্যাদি যুত পলিমারকরণের উদাহরণ।   অপরদিকে নাইলন 6,নাইলন 6:6 ইত্যাদি ঘনীভবন পলিমারকরণের উদাহরণ।

গ্রাফাইট বিদ্যুৎ পরিবহন করলেও হীরক করে না কেন?

গ্রাফাইট বিদ্যুৎ পরিবহন করলেও হীরক করে না কেন?   গ্রাফাইট ও হীরক উভয়ে কার্বনের রূপভেদ, হওয়া সত্বেও গ্রাফাইট বিদ্যুৎ পরিবহন করে কিন্তু হীরক বিদ্যুৎ পরিবহন করেনা।  কারণ, গ্রাফাইটে প্রতিটি কার্বন পরমাণু sp² সংকরিত এবং হীরকে প্রতিটি কার্বন পরমাণু sp³ সংকরিত থাকে।  গ্রাফাইটের প্রতিটি কার্বন অপর তিনটি কার্বনের সাথে যুক্ত হয়ে ষড়ভুজাকৃতি জালিকার ন্যায় বিন্যাস গঠন করে। গ্রাফাইটের প্রতিটি কার্বন পরমাণুতে একটি করে সঞ্চারণশীল ইলেকট্রন বিদ্যমান থাকে।  এই সঞ্চারণশীল ইলেকট্রন কোন কার্বন পরমাণুতে নির্দিষ্টভাবে যুক্ত না থেকে সমস্ত গ্রাফাইট স্ফটিকের উপর সঞ্চারণশীল থাকে। এই সঞ্চারণশীল ইলেকট্রনের জন্য গ্রাফাইট বিদ্যুৎ পরিবাহী হয়।  কিন্তু হীরকে প্রতিটি কার্বন পরমাণু অপর চারটি কার্বন পরমাণুর সাথে যুক্ত হয়ে চতুস্তলকীয় কাঠামো গঠন করে। হীরকের কার্বন পরমাণুতে কোন সঞ্চারণশীল ইলেকট্রন না থাকার জন্য হীরক বিদ্যুৎ পরিবহন করে না।

অ্যালকিন সমূহকে অলিফিন বলা হয় কেন?

অ্যালকিন সমূহকে অলিফিন বলা হয় কেন?   অ্যালকিন সমূহকে অলিফিন বলে। কারণ অলিফিন শব্দের অর্থ তৈল উৎপাদনকারী। অ্যালকিনের নিম্নতর সদস্য (যেমনঃ ইথিন, প্রোপিন, বিউটিন ইত্যাদি) হ্যালোজেনের (Cl₂, Br₂, I₂) সঙ্গে বিক্রিয়া করে তৈলাক্ত পদার্থ উৎপন্ন করে।  এজন্য অ্যালকিন কে অলিফিন বলা হয়।

CO₂(কার্বন-ডাই-অক্সাইড) অম্লীয় অক্সাইড কেন?

CO₂(কার্বন-ডাই-অক্সাইড) অম্লীয় অক্সাইড কেন? আমরা জানি, ধাতুর অক্সাইড গুলি ক্ষারীয় এবং অধাতুর অক্সাইড অম্লীয়।  আবার যে সকল পদার্থ ক্ষারের সাথে বিক্রিয়া করে লবণ ও পানি উৎপন্ন করে তারা অম্ল। অম্লের জলীয় দ্রবণ নীল লিটমাসকে লাল করে। CO₂+NaOH ------>Na₂CO₃+ H₂O     CO₂ + H₂O  <-------->  H₂CO₃   H₂CO₃ (aq) <-------> H+ (aq) + HCO₃ - (aq) H+ (aq) + নীললিটমাস <------>  লাললিটমাস যেহেতু কার্বন-ডাই-অক্সাইড ক্ষারের সাথে বিক্রিয়া করে সোডিয়াম কার্বনেট (Na₂CO₃) লবণ ও পানি গঠন করে।  কাজেই CO₂ একটি অম্ল।  আবার পানির সাথে যুক্ত হয়ে কার্বনিক অ্যাসিড (H₂CO₃) গঠন করে। যার জলীয় দ্রবণ নীল লিটমাসকে লাল করে।  অতএব বলা যায় CO₂ একটি অম্লীয় অক্সাইড।

পলিমার বলতে কি বুঝায়?

পলিমার বলতে কি বুঝায়?   পলিমারঃ  অনেকগুলো ক্ষুদ্র অনু উচ্চ তাপ ও চাপের প্রভাবে পরস্পর যুক্ত হয়ে উচ্চ আণবিক ভর বিশিষ্ট বৃহৎ অনু গঠন করে তাকে পলিমার বলে। পলিমার তৈরির প্রক্রিয়াকে পলিমারকরণ বলে।  গ্রিক শব্দ থেকে পলিমার (Polymer) কথাটির উৎপত্তি।  পলি (Poly) শব্দের অর্থ বহু, এবং মেরোস (meros) শব্দের অর্থ অংশ। অর্থাৎ অনেকগুলি ক্ষুদ্র অংশ পরস্পর যুক্ত হয়ে পলিমার গঠন করে। পলিমারের ক্ষুদ্র অনুকে মনোমার এবং বৃহৎ অনুকে পলিমার বলে। পলিথিন উৎপাদনে অসংখ্য ইথিন অনু পরস্পর যুক্ত হয়ে পলিথিন নামোক পলিমার গঠন করে। nH₂C=CH₂  ----->[--CH₂ -CH₂--]n ইথিন (মনোমার)  পলিথিন(পলিমার)

পেট্রোলিয়াম শিল্পে বিযোজন বিক্রিয়া গুরুত্বপূর্ণ কেন?

পেট্রোলিয়াম শিল্পে বিযোজন বিক্রিয়া গুরুত্বপূর্ণ কেন?   উচ্চতর হাইড্রোকার্বনকে বিভিন্ন পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পে বিযোজিত করে অ্যালকেন, অ্যালকিন, অ্যালকাইন, অ্যালকোহল, অ্যালডিহাইড ইত্যাদি বিভিন্ন জৈব যৌগ ও প্লাস্টিক তৈরি করা হয়।  বিযোজন বিক্রিয়ার মাধ্যমে উৎপন্ন অ্যালকেন থেকে মোম ও রাস্তা পাকা করার জন্য ব্যবহৃত পিচ তৈরি করা হয়।  এছাড়াও বিযোজন বিক্রিয়ার মাধ্যমে ডিজেল কে পেট্রোলে পরিণত করা যায়। এছাড়াও উচ্চতর হাইড্রোকার্বন কে ভেঙ্গে অ্যালকিন ও হাইড্রোজেন গ্যাস প্রস্তুত করা হয়।  এজন্য পেট্রোলিয়াম শিল্পে বিযোজন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিক্রিয়া। C₁₆H₃₄  --------> C₈H₁₈  + 4C₂H₄

পিতলের সামগ্রীতে সবুজ বর্ণের আস্তরণ সৃষ্টি হয় কেন?

পিতলের সামগ্রীতে সবুজ বর্ণের আস্তরণ সৃষ্টি হয় কেন?   পিতল 65% কপার (Cu) ও 35% জিংক (Zn) এর মিশ্রণে তৈরি সংকর ধাতু। পিতলের তৈরি সামগ্রী বাতাসে ফেলে রাখলে এতে সবুজ বর্ণের আস্তরণ সৃষ্টি হয়। কারণ পিতলের মূল উপাদান কপার (Cu) বাতাসের অক্সিজেনের সংস্পর্শে কিউপ্রিক অক্সাইড (CuO) গঠন করে।       2Cu + O₂ -------->2 CuO কিউপ্রিক অক্সাইড এর বর্ণ সবুজ। এজন্য পিতলের সামগ্রী বাতাসে ফেলে রাখলে সবুজ বর্ণের আস্তরণ সৃষ্টি হয়।

FeCl₃ এর জলীয় দ্রবণ অম্লীয় কেন?

FeCl₃ এর জলীয় দ্রবণ অম্লীয় কেন ? FeCl₃ লবণ শক্তিশালী এসিড HCl ও দুর্বল ক্ষারক Fe(OH)₃ এর বিক্রিয়ায় উৎপন্ন হয়।  FeCl₃ লবণটি পানিতে দ্রবীভূত করলে Fe³+ ও Cl- আয়ন উৎপন্ন করে। Cl- আয়ন পানির প্রোটনের (H+) সঙ্গে যুক্ত হয়ে তীব্র এসিড হাইড্রোজেন ক্লোরাইড (HCl) গঠন করে। হাইড্রোজেন ক্লোরাইড তীব্র এসিড হওয়ায় পানিতে সম্পূর্ণ বিয়োজিত হয়। FeCl₃ (aq) -------> Fe³+  3Cl - Cl- + H₂O -------> HCl + OH- HCl (aq) ------> H+  + Cl-   যেহেতু হাইড্রোজেন ক্লোরাইড পানিতে সম্পূর্ণ বিয়োজিত হয় সেহেতু দ্রবণে হাইড্রোজেন আয়নের ঘনমাত্রা বেশি থাকে।  এজন্য FeCl₃ এর জলীয় দ্রবণ অম্লীয় হয়।

NH₄Cl এর জলীয় দ্রবণ অম্লীয় কেন?

NH₄Cl এর জলীয় দ্রবণ অম্লীয় কেন? NH₄Cl লবণ, দুর্বল ক্ষারক NH₄OH এবং সবল অম্ল HCl এর বিক্রিয়ায় উৎপন্ন হয়।  NH₄Clএর জলীয় দ্রবণ অম্লীয়। কারণ, যেসব লবণ দুর্বল ক্ষারক ও শক্তিশালী অম্ল থেকে উৎপন্ন হয় তারা জলীয় দ্রবণে আর্দ্র বিশ্লেষিত হয়ে অম্লীয় দ্রবণ তৈরি করে।  যেহেতু NH₄Cl লবণ, NH₄OH এবং HCl এর সমন্বয় গঠিত।  সেহেতু এটি পানিতে বিয়োজিত হয়ে NH₄+ ও Cl-  আয়ন উৎপন্ন করে। পরবর্তীতে NH₄+ আয়নের আর্দ্র বিশ্লেষণে H+ উৎপন্ন হয়।  যার কারনে দ্রবণটি অম্লীয় হয়। NH₄Cl (s) + aq ------->NH₄+(aq) + Cl- (aq) NH₄+ (aq) <---------> NH₃ (aq) + H+ (aq)

নাইলন বা নাইলন 6:6 ঘনীভবন পলিমার কেন?

নাইলন বা নাইলন 6:6 ঘনীভবন পলিমার কেন?   ঘনীভবন পলিমারঃ  যে পলিমারকরণ বিক্রিয়ায় দুইটি ভিন্ন কার্যকরী মূলক বিশিষ্ট মনোমার অনুসমুহ পরস্পরের সাথে যুক্ত হবার সময় ক্ষুদ্র অনু যেমনঃH₂O,CO₂, ইত্যাদি অপসারণ করে সেই পলিমারকরণ বিক্রিয়াকে ঘনীভবন পলিমারকরন বিক্রিয়া বলে। উৎপন্ন পলিমারকে ঘনীভবন পলিমার বলে।   অ্যাডিপিক এসিড {HOOC-(CH₂)₄-COOH} ও  হেক্সামিথিলিন ডাইঅ্যামিনকে {NH₂-(CH₂)₆-NH₂}  পলিমারকরণ করলে পানি অনু অপসারিত হয়ে নাইলন পলিমার উৎপন্ন হয়। HOOC-(CH₂)₄-COOH+ NH₂-(CH₂)₆-NH₂ ---->     HOOC-(CH₂)₄-CONH-(CH₂)₆-NH₂+H₂O nHOOC-(CH₂)₄-CONH-(CH₂)₆-NH₂-----> [--OC-(CH₂)₄-CONH-(CH₂)₆-NH--]n + nH₂O                 নাইলন 6:6 সুতরাং বলা যায় নাইলন একটি ঘনীভবন পলিমার।

পলিথিন একটি যুত পলিমার ব্যাখ্যা করো?

পলিথিন একটি যুত পলিমার ব্যাখ্যা করো?   যুত বা সংযোজন পলিমারঃ  একটি কার্যকরী মূলক বিশিষ্ট একই বা ভিন্ন ধরনের একাধিক মনোমার পরস্পর যুক্ত হয়ে যে পলিমার গঠন করে তাকে যুত পলিমার বলে।   পলিথিন হচ্ছে ইথিনের পলিমার। ইথিন অনুতে (-C = C-)  কার্যকরী মূলক বিদ্যমান থাকে।  ইথিনের অসংখ্য মনোমার 200 ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ও 1000 বায়ুমণ্ডলীয় চাপে পলিমারকরণ করলে পলিথিন নামক পলিমার     উৎপন্ন হয়।        nH₂C=CH₂ ----->[--CH₂-CH₂--]n এই পলিমারকরণ এ কোন অতিরিক্ত উৎপাদ  (CO₂, H₂O,HCN) উৎপন্ন হয় না।  এজন্য পলিথিন একটি যুত পলিমার।

অ্যালকোহল থেকে অ্যালকিন প্রস্তুতি।

অ্যালকোহল থেকে অ্যালকিন প্রস্তুতি।   অ্যালকোহলকে নিরুদক গাঢ় সালফিউরিক অ্যাসিড সহযোগে 170 ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করলে অ্যালকিন উৎপন্ন হয়। RCH₂-CH₂OH+H₂SO₄-----> RCH=CH₂+H₂O যেমনঃ ইথানলকে গাঢ় সালফিউরিক অ্যাসিড সহ 170 ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা উত্তপ্ত করলে ইথিন উৎপন্ন হয়। CH₃-CH₂OH + H₂SO₄ ------> CH₂=CH₂+H₂O আবার, অ্যালকোহলকে অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড সহযোগে উত্তপ্ত করলে অ্যালকিন উৎপন্ন হয়। RCH₂-CH₂OH+Al₂O₃-----> RCH=CH₂+H₂O

বায়ো-ডিগ্রেডেবল পদার্থ, জীবাশ্ম জ্বালানি কাকে বলে?

বায়ো-ডিগ্রেডেবল পদার্থ, জীবাশ্ম জ্বালানি কাকে বলে?   বায়োডিগ্রেডেবল পদার্থঃ  যেসব পলিমার সূর্যের আলো এবং প্রাকৃতিক ভাবে ব্যাকটেরিয়া জীবাণু দ্বারা বিযোজিত হতে পারে তাদেরকে বায়োডিগ্রেডেবল পদার্থ বলা হয়।   জীবাশ্ম জ্বালানিঃ  উচ্চ তাপ ও চাপে বায়ুর অনুপুস্থিতিতে উদ্ভিদ ও প্রাণীদেহ হাজার হাজার বছর ধরে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে কয়লা, প্রাকৃতিক গ্যাস, তেল ইত্যাদি নামক যে জ্বালানিতে পরিণত হয় তাকে জীবাশ্ম জ্বালানি বলে।

হাইড্রোকার্বন, জৈব যৌগ, গ্যাসোহোল, রেকটিফাইড স্পিরিট কাকে বলে?

হাইড্রোকার্বন, জৈব যৌগ, গ্যাসোহোল, রেকটিফাইড স্পিরিট কাকে বলে?   হাইড্রোকার্বনঃ  হাইড্রোজেন ও কার্বন এ দ্বিমৌল দ্বারা গঠিত যৌগসমূহকে হাইড্রোকার্বন বলে। যেমনঃ মিথেন(CH₄), ইথেন(C₂H₆), প্রোপেন(C₃H₈) ইত্যাদি।   জৈব যৌগঃ  হাইড্রোকার্বন ও হাইড্রোকার্বনের জাতকসমূহকে জৈব যৌগ বলে। যেমনঃ মিথান্যাল(H-CHO), ইথান্যাল(CH₃CHO), ইথানয়িক এসিড(CH₃COOH) ইত্যাদি। গ্যাসহোলঃ  পেট্রোলের সাথে 10 % থেকে 20 % ইথানল মিশ্রিত জ্বালানিকে গ্যাসহোল বলে। রেকটিফাইড স্পিরিটঃ  95.6% ইথানল ও 4.4% পানির সমস্ফুটন মিশ্রণকে রেকটিফাইড স্পিরিট বলে।

অ্যালকিন সংযোজন বিক্রিয়া দিলেও অ্যালকেন দেয় না কেন?

অ্যালকিন সংযোজন বিক্রিয়া দিলেও অ্যালকেন দেয় না কেন?   অ্যালকেন সমূহ সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন। অ্যালকেনে প্রতিটি কার্বন- কার্বন এবং প্রতিটি কার্বন- হাইড্রোজেন শক্তিশালী একক সমযোজী সিগমা বন্ধনের মাধ্যমে গঠিত। এই সিগমা বন্ধন শক্তিশালী হওয়ায় সহজে ভেঙ্গে যায় না।  অ্যালকিন সমূহ অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন। অ্যালকিনে কার্বন- কার্বন দ্বিবন্ধন বিদ্যমান থাকে। যার একটি সিগমা বন্ধন, অপরটি দুর্বল পাই বন্ধন। অ্যালকিনের এ দুর্বল পাই বন্ধন সহজে ভেঙ্গে গিয়ে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় (যেমনঃ হাইড্রোজেন সংযোজন, হ্যালোজেন সংযোজন, হাইড্রোজেন হ্যালাইড সংযোজন ইত্যাদি) অংশগ্রহণ করে।  এজন্য অ্যালকেন সমূহ রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ না করলেও অ্যালকিন সমূহ রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে

ডিকার্বক্সিলেশন বিক্রিয়া কি?

ডিকার্বক্সিলেশন বিক্রিয়া কি?   ডিকার্বক্সিলেশনঃ  জৈব এসিডের  (R - COONa) সোডিয়াম লবণকে সোডালাইম {NaOH(CaO)} দ্বারা উত্তপ্ত করলে অ্যালকেন (R-H) প্রস্তুত হয়।  জৈব এসিড থেকে অ্যালকেন প্রস্তুতির এ বিক্রিয়াকে ডিকার্বক্সিলেশন বিক্রিয়া বলে।  এ বিক্রিয়ায় উৎপন্ন অ্যালকেনে, বিক্রিয়ক এসিডের লবণ থেকে একটি কার্বন পরমাণু কম থাকে বলে এরূপ নামকরণ করা হয়। R-COONa+NaOH(CaO) ---->R-H +  Na₂CO₃(CaO)   যেমনঃ সোডিয়াম ইথানয়েট কে সোডালাইম সহ উত্তপ্ত করলে মিথেন উৎপন্ন হয়। CH₃COONa + NaOH(CaO) ----->  CH₄ +                                                    Na₂CO₃(CaO)   এ বিক্রিয়ায় উৎপন্ন মিথেনে বিক্রিয়ক সোডিয়াম ইথানয়েট থেকে একটি কার্বন কম থাকে।  এ বিক্রিয়ার মাধ্যমে জৈব যৌগে কার্বন পরমাণু হ্রাস করা যায়।

ডেরলিন কি?

  ডেরলিন কি?   ডেরলিনঃ  ডেরলিন হচ্ছে ফরমালডিহাইড বা মিথান্যাল  (H-CHO) এর পলিমার।   মিথান্যালকে পলিমারকরণ করলে ডেরলিন নামক পলিমার গঠিত হয়। ডেরলিন এক ধরনের শক্ত পলিমার হওয়ায় প্লাস্টিকের চেয়ার, টেবিল তৈরিতে ডেরলিন নামক পলিমার ব্যবহার করা হয়।                                   H                         H          |                                  |  n H-C=O ----------------->  [--C - O--]n                                              |                                             H

পেঁয়াজ কাটার সময় চোখ জ্বালা করে কেন?

পেঁয়াজ কাটার সময় চোখ জ্বালা করে কেন?   পেঁয়াজে সালফারের প্রোপাইল যৌগ বিদ্যমান থাকে। পেঁয়াজ কাটার সময় এ প্রোফাইল যৌগ বাতাসের অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে সালফার ডাই অক্সাইড উৎপন্ন করে। যা চোখের পানির সাথে বিক্রিয়া করে সালফিউরাস এসিডে (H₂SO₃) পরিণত হয়। সালফিউরাস এসিডের কারণেই চোখ জ্বালা করে।           SO₂ + H₂O --------> H₂SO₃

অসম্পৃক্ততা (অ্যালকিন বা অ্যালকাইন) সনাক্তকরণ।

অসম্পৃক্ততা (অ্যালকিন বা অ্যালকাইন) সনাক্তকরণ।   জৈব যৌগে অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন অ্যালকিন (যেমনঃ ইথিন, প্রোপিন, বিউটিন ইত্যাদি) এদের মধ্যে  কার্বন- কার্বন  দ্বিবন্ধন  বিদ্যামান  থাকে। অ্যালকাইন (যেমনঃ ইথাইন, প্রোপাইন, বিউটাইন, ইত্যাদি) এদের মধ্যে কার্বন- কার্বন ত্রিবন্ধন বিদ্যমান থাকে। অ্যালকিন বা অ্যালকাইন আমরা দুটি পদ্ধতিতে সনাক্ত করতে পারি। ১. ব্রোমিন পরীক্ষা   ২. বেয়ার পরীক্ষা বা জারণ পদ্ধতি।   ব্রোমিন পরীক্ষাঃ ব্রোমিনকে কার্বন টেট্রাক্লোরাইডে (CCl₄) দ্রবীভূত করে ব্রোমিনের 5% দ্রবন তৈরি করা হয়। ব্রোমিন এর দ্রবণ লাল বর্ণের হয়ে থাকে।  অসম্পৃক্ত যৌগ যেমনঃ ইথিনের মধ্যে ব্রোমিন এর 5% দ্রবণ ফোঁটায় ফোঁটায় যোগ করলে যদি ব্রোমিনের লাল বর্ণ বর্ণহীন হয় এবং 1,2-ডাই ব্রোমো ইথেন গঠন করে, তবে যৌগটি অসম্পৃক্ত।  একই ভাবে অ্যালকাইন যেমনঃ ইথাইন শনাক্ত করা যায়। H₂C=CH₂+Br₂ ----->CH₂BrCH₂Br ব্রোমিনের লাল বর্ণ বর্ণহীন না হলে যৌগটি সম্পৃক্ত।   বেয়ার বা জারণ পরীক্ষাঃ এ পদ্ধতিতে ইথিন কে পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট এর ক্ষারীয় বা জলীয় দ্রবন দ্বারা জারিত করলে পটাশিয়াম পারম

প্রোপিন থেকে প্রোপানোয়িক এসিড প্রস্তুতি।

প্রোপিন থেকে প্রোপানোয়িক এসিড প্রস্তুতি।   প্রোপিন থেকে নিম্নরূপ উপায় প্রোপানোয়িক এসিড প্রস্তুত করা যায়। ১. প্রথমে প্রোপিনের সঙ্গে হাইড্রোজেন ক্লোরাইড বিক্রিয়া করালে ক্লোরো প্রোপেন উৎপন্ন হয়। CH₃CH₂CH=CH₂ +HCl ------> CH₃CH₂CH₂Cl ২. ক্লোরো প্রোপেন কে জলীয় ক্ষার দ্বারা আর্দ্র বিশ্লেষণ করলে প্রোপানল উৎপন্ন হয়। CH₃CH₂CH₂Cl +NaOH(aq) ----> CH₃CH₂CH₂OH + NaCl ৩. প্রোপানল কে অম্লীয় পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট (গাঢ় H₂SO₄ + KMnO₄) দ্বারা জারিত করলে প্রোপান্যাল উৎপন্ন হয়। CH₃CH₂CH₂OH +[O] -------> CH₃CH₂CHO ৪. প্রোপান্যাল কে আবার অম্লীয় পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট দ্বারা জারিত করলে প্রোপানোয়িক এসিড উৎপন্ন হয়। CH₃CH₂CHO + [O] -------> CH₃CH₂COOH

ইথিন থেকে ইথানোয়িক এসিড প্রস্তুতি।

ইথিন থেকে ইথানোয়িক এসিড প্রস্তুতি।   ইথিন থেকে নিন্মোক্ত উপায় ইথানোয়িক এসিড প্রস্তুত করা যায়। ১. ইথিনের সঙ্গে প্রথমে হাইড্রোজেন ক্লোরাইড বিক্রিয়া করালে ক্লোরো ইথেন তৈরি হয়। H₂C = CH₂ + HCl ----->  CH₃-CH₂Cl ২. ক্লোরো ইথেন কে জলীয় ক্ষার দ্বারা আর্দ্র বিশ্লেষণ করলে ইথানল প্রস্তুত হয়। C₂H₅Cl+NaOH(aq) -----> CH₃CH₂OH+NaCl ৩.  ইথানলকে অম্লীয় পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট (গাঢ় H₂SO₄ + KMnO₄) দ্বারা জারিত করলে  ইথান্যাল উৎপন্ন হয়। CH₃CH₂OH + [ O ] ------> CH₃CHO ৪. ইথান্যালকে পুনরায় জারিত করলে ইথানয়িক এসিড উৎপন্ন হয়। CH₃CHO + [ O ] -------> CH₃COOH

মিথেন থেকে মিথানোয়িক এসিড প্রস্তুতি।

মিথেন থেকে মিথানোয়িক এসিড প্রস্তুতি। মিথেন থেকে নিন্মোক্ত উপায়ে মিথানোয়িক এসিড প্রস্তুত করা যায়। ১. মিথেন কে প্রথমে ক্লোরিন এর সাথে বিক্রিয়া করিয়ে ক্লোরো মিথেন প্রস্তুত করা হয়। CH₄ + Cl₂ ------> CH₃Cl + HCl ২. ক্লোরো মিথেন কে জলীয় ক্ষার দ্বারা আর্দ্র বিশ্লেষণ করলে মিথানল উৎপন্ন হয়। CH₃Cl + NaOH(aq) ------> CH₃OH + NaCl ৩. মিথানল কে জারিত করে মিথান্যাল প্রস্তুত করা হয়। CH₃OH + [ O ] ------> H-CHO ৪. সবশেষে মিথান্যাল কে জারিত করে মিথানয়িক এসিড প্রস্তুত করা হয়। H-CHO + [ O ] ------> H- COOH  এভাবে মিথেন থেকে মিথানয়িক এসিড প্রস্তুত করা হয়

অ্যালকেন যেমন ইথেন থেকে ইথানয়িক এসিড প্রস্তুতি?

অ্যালকেন যেমন ইথেন থেকে ইথানয়িক এসিড প্রস্তুতি?  ইথেন কে প্রথমে হ্যালোজেনেশন বিক্রিয়ার মাধ্যমে ইথাইল হ্যালাইড প্রস্তুত করা হয়।   যেমনঃ ইথেন (C₂H₆) এর সঙ্গে ক্লোরিনের (Cl₂) বিক্রিয়ায় ক্লোরো ইথেন (C₂H₅Cl) প্রস্তুত করা হয়। এরপর এই ক্লোরো ইথেনের (C₂H₅Cl) সঙ্গে জলীয় সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড বিক্রিয়া করালে ইথানল (C₂H₅OH) উৎপন্ন হয়। ইথানলকে জারিত করলে ইথান্যাল (CH₃CHO) উৎপন্ন হয়।  পরে ইথান্যালকে পুনঃরায় জারিত করলে ইথানয়িক এসিড (CH₃COOH) উৎপন্ন হয়। C₂H₆ + Cl₂ -----> C₂H₅Cl + HCl C₂H₅Cl + NaOH(aq) ----> C₂H₅OH + NaCl      C₂H₅OH + [ O ] -------> CH₃CHO      CH₃CHO + [ O ] -------> CH₃COOH এইভাবে ইথেন থেকে ইথানয়িক এসিড প্রস্তুত করা যায়।

জ্বালানির অসম্পূর্ণ দহন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কেন?

জ্বালানির অসম্পূর্ণ দহন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কেন?   জ্বালানি যেমনঃ মিথেন, ইথেন, ইথিন ইত্যাদি অক্সিজেনে দহন করলে কার্বন ডাই অক্সাইড(CO₂), জলীয় বাষ্প, তাপ শক্তি উৎপন্ন হয়।  কিন্তু জ্বালানির দহনে পর্যাপ্ত পরিমাণ অক্সিজেন অনুপস্থিত থাকলে কার্বন ডাই অক্সাইড এর পরিবর্তে কার্বন মনোক্সাইড (CO) গ্যাস উৎপন্ন হয়। সম্পূর্ণ দহনঃ CH₄(g)+2O₂(g) -----> CO₂(g)+2H₂O(g)+তাপ অসম্পূর্ণ দহনঃ CH₄(g)+3/2O₂(g)-----> CO(g)+2H₂O(g)+তাপ কার্বন মনোক্সাইড বর্ণহীন, গন্ধহীন গ্যাস হওয়ায় বাতাসে এর উপস্থিতি বোঝা যায় না। নিঃশ্বাসের সঙ্গে এই গ্যাস আমাদের শরীরে প্রবেশ করলে রক্ত প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে।  যার কারণে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক এর ঝুঁকি বেড়ে যায়।  এ কারণে জ্বালানির অসম্পূর্ণ দহন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

ব্লিচিং পাউডার কিভাবে কাপড়ের দাগ দূর করে?

ব্লিচিং পাউডার কিভাবে কাপড়ের দাগ দূর করে? ব্লিচিং পাউডার {Ca(OCl)Cl} পানির সাথে বিক্রিয়া করে হাইপোক্লোরাস এসিড (HOCl) উৎপন্ন করে।  এরপর এই হাইপোক্লোরাস এসিড বিয়োজিত হয়ে জায়মান অক্সিজেন উৎপন্ন করে।  এই জায়মান অক্সিজেনের জারণ ক্রিয়ার মাধ্যমে কাপড়ের দাগ দূর হয়। Ca(OCl)Cl + H₂O -----> HOCl + Ca(OH)₂ HOCl   -------> [ O ] + HCl   ময়লা কাপড় + [ O ] ------>পরিষ্কার কাপড় ব্লিচিং পাউডার {Ca(OCl)Cl} এর রাসায়নিক নাম ক্যালসিয়াম ক্লোরো হাইপোক্লোরাইড। Ca(OH)₂ এরমধ্যে 40 ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ক্লোরিন গ্যাস চালনা করলে ব্লিচিং পাউডার উৎপন্ন।    Ca(OH)₂ + Cl₂ --------> Ca(OCl)Cl + H₂O

গ্লাস ক্লিনার হিসেবে NaOH ব্যবহার করা যায় না কেন?

গ্লাস ক্লিনার হিসেবে NaOH ব্যবহার করা যায় না কেন?   টয়লেট ক্লিনারের মূল উপাদান NaOH, যা টয়লেট পরিষ্কার করতে ব্যবহার করা হয়।  কাচের মূল উপাদান সিলিকা  ( SiO₂)।  NaOH কে গ্লাস ক্লিনার হিসেবে ব্যবহার করলে তা কাচের উপাদানের সাথে বিক্রিয়া করে। কারণ NaOH     তীব্র ক্ষয়কারী পদার্থ। এটি কাচের প্রধান উপাদান সিলিকার সাথে বিক্রিয়া করে সোডিয়াম সিলিকেট (Na₂SiO₃) উৎপন্ন করে। এক্ষেত্রে কাচ ক্ষয়প্রাপ্ত হয় এবং কাচের উপরের তলের মসৃণতা নষ্ট হয়ে যায়। SiO₂ + 2NaOH -------> Na₂SiO₃ + H₂O কিন্তু NaOH টয়লেটের প্যানের সাথে কোন বিক্রিয়া করে না।  এজন্য NaOH কে টয়লেট পরিষ্কারক হিসেবে ব্যবহার করা হলেও গ্লাস পরিষ্কারক হিসেবে ব্যবহার করা হয়না।

সাবান তৈরিতে তেল ও ক্ষার সঠিক অনুপাতে যোগ করা হয় কেন?

সাবান তৈরিতে তেল ও ক্ষার সঠিক অনুপাতে যোগ করা হয় কেন?   উচ্চতর ফ্যাটি এসিডের ট্রাই গ্লিসারয়েড এস্টারকে ক্ষারীয় আর্দ্র বিশ্লেষন করে সাবান প্রস্তুত করা হয়। সাবান তৈরির সময় তেল ও ক্ষার সঠিক অনুপাতে যোগ করতে হয়। যদি সাবানে তেলের পরিমাণ বেশি হয় তবে সাবানে বেশি তেল থেকে যায়। ফলে ঐ সাবানে ভালো ফেনা উৎপন্ন হয় না। আবার যদি সাবানে বেশি ক্ষার যোগ করা হয় তবে উৎপাদিত সাবানে বেশি ক্ষার থেকে যায়। ঐ সাবান ব্যবহার করলে ত্বকের ক্ষতি হয়।  তাই সাবান প্রস্তুতির সময় সাবানে তেল ও ক্ষার সঠিক অনুপাতে যোগ করতে হয়।

সাবান ও ডিটারজেন্ট এর মধ্যে পার্থক্য।

সাবান ও ডিটারজেন্ট এর মধ্যে পার্থক্য।   সাবান ও ডিটারজেন্ট উভয়ে ময়লা পরিষ্কারক হিসাবে ব্যবহৃত হলেও এদের মধ্যে কিছু পার্থক্য রয়েছে। ১.  সাবান হল দীর্ঘ কার্বন বিশিষ্ট ফ্যাটি এসিডের সোডিয়াম / পটাশিয়াম লবণ।  অপরদিকে, ডিটারজেন্ট হলো দীর্ঘ কার্বন শিকল বিশিষ্ট সালফোনিক এসিডের সোডিয়াম লবণ। ২. সাবান খর পানিতে ভালো কাজ করতে পারে না। কিন্তু ডিটারজেন্ট খর পানি ও মৃদু পানিতে সমান কাজ করতে পারে। ৩. সাবানের পরিষ্কারক ক্ষমতা ডিটারজেন্ট এর থেকে কম। অন্যদিকে, ডিটারজেন্টের পরিষ্কারক ক্ষমতা সাবানের চেয়ে বেশি। ৪. সাবান অ্যালিফেটিক হাইড্রোকার্বনের দীর্ঘ শিকল।  কিন্তু ডিটারজেন্ট অ্যালিফেটিক ও অ্যারোমেটিক উভয় হতে পারে। ৫. সাবান এর কার্যকরী মূলক  ( R -COONa / K) এবং ডিটারজেন্টের কার্যকরী মূলক  (R -OSO₃Na).

অ্যালকিন অপেক্ষা অ্যালকেন ভালো জ্বালানি কেন?

অ্যালকিন অপেক্ষা অ্যালকেন ভালো জ্বালানি কেন?   অ্যালকিন ও অ্যালকেনসমূহ কার্বন ও হাইড্রোজেন দ্বারা  গঠিত যৌগ। এজন্য এদেরকে হাইড্রোকার্বন বলে। কার্বন ও হাইড্রোজেন দাহ্য পদার্থ। তবে কার্বনের তুলনায় হাইড্রোজেন অধিক দাহ্য। অ্যালকেন ও অ্যালকিন উভয়ে অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে কার্বন ডাই অক্সাইড, পানি ও শক্তি উৎপন্ন করে। CH₄ + O₂ -----> CO₂ + H₂O + শক্তি      H₂C=CH₂ + O₂ -----> CO₂ + H₂O + শক্তি কিন্তু অ্যালকিনে, অ্যালকেন অপেক্ষা কম হাইড্রোজেন থাকে বলে বিক্রিয়ায় উৎপন্ন তাপের পরিমাণ কম হয়।  তাই অ্যালকিন অপেক্ষা অ্যালকেন ভালো জ্বালানি। মিথেন, ইথেন, প্রোপেন ইত্যাদি অ্যালকেন।  আবার ইথিন, প্রোপিন, বিউটিন ইত্যাদি অ্যালকিন। অ্যালকিন এর মধ্যে কমপক্ষে একটি কার্বন-কার্বন দ্বিবন্ধন বিদ্যমান থাকে।  অ্যালকিনের প্রথম সদস্য ইথিন।

বদহজমে বেকিং পাউডার এর ভূমিকা কি।

বদহজমে বেকিং পাউডার এর ভূমিকা কি।   বদহজম হচ্ছে আমাদের পেটের পাকস্থলীতে হাইড্রোক্লোরিক(HCl) এসিডের পরিমাণ বেড়ে গেলে বদহজম সমস্যার সৃষ্টি হয়। বদহজম থেকে উপশম পাওয়ার জন্য আমরা বিভিন্ন এন্টাসিড জাতীয় ঔষধ খেয়ে থাকি। তবে বদহজমে বেকিং পাউডার ব্যবহার করা যায়। বেকিং পাউডার (NaHCO₃) ক্ষার জাতীয় হওয়ায় তা অম্লজাতীয় HCl কে প্রশমিত করে বদহজম সমস্যার সমাধান ঘটায়। এজন্য বদহজম থেকে উপশমের জন্য বেকিং পাউডার ব্যবহার করা যায়। NaHCO₃+ HCl -------> NaCl + CO₂ + H₂O

হাইড্রোফিলিক ও হাইড্রোফোবিক কাকে বলে?

হাইড্রোফিলিক ও হাইড্রোফোবিক কাকে বলে?   হাইড্রোফিলিকঃ  যেসব যৌগের পানির প্রতি তীব্র আকর্ষণ বিদ্যামান তাদেরকে হাইড্রোফিলিক পদার্থ বলে। যেমনঃ সাবান বা ডিটারজেন্টের পোলার অংশটি  (-COONa / -OSONa) হাইড্রোফিলিক অর্থাৎ পানি কর্তৃক আকর্ষী হয়।   হাইড্রোফোবিকঃ  যেসব যৌগ পানি অনু কর্তৃক বিকর্ষিত হয় তাদেরকে হাইড্রোফোবিক বলে।  যেমনঃ সাবান বা ডিটারজেন্ট দীর্ঘ শিকল অ্যালকেন গ্রুপ হল হাইড্রোফোবিক।

ডিটারজেন্টে ফসফেটের পরিমান নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন কেন?

ডিটারজেন্টে ফসফেটের পরিমান নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন কেন?   ডিটারজেন্টের ময়লা পরিষ্কারক ক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য কোন কোন ডিটারজেন্টে ফসফেট ব্যবহার করা হয়। জলজ উদ্ভিদ, শৈবাল এদের বৃদ্ধির জন্য ফসফেট ভালো সার। ফসফেট এর প্রভাবে এসব জলজ উদ্ভিদের পরিমাণ দ্রুত বেড়ে যায়। এইসব জলজ উদ্ভিদের জীবনচক্র শেষে পচনের জন্য পানিতে থাকা দ্রবীভূত অক্সিজেন খরচ হয়ে যায়। দ্রবীভূত অক্সিজেনের অভাবে প্রাণীকুল মারা যায়।  এজন্য ডিটারজেন্ট ফসফেট এর পরিমান নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন।

উদ্ভিদ কিভাবে ইউরিয়া সার গ্রহণ করে?

উদ্ভিদ কিভাবে ইউরিয়া সার গ্রহণ করে?   ইউরিয়া সার হচ্ছে নাইট্রোজেন ঘটিত অম্লীয় সার। ইউরিয়া সারে 46% নাইট্রোজেন থাকে। এই নাইট্রোজেন উদ্ভিদের মুখ্য পুষ্টি উপাদান। ইউরিয়া সার কে মাটিতে প্রয়োগ করলেন মাটিতে থাকা ইউরিয়েজ নামক এনজাইমের প্রভাবে ধীরে ধীরে বিয়োজিত হয়ে অ্যামোনিয়া ও কার্বন ডাই অক্সাইডে পরিণত হয়। অ্যামোনিয়া পানিতে দ্রবীভূত হয়ে অ্যামোনিয়াম হাইড্রোক্সাইড এ পরিণত হয়। অ্যামোনিয়াম হাইড্রোক্সাইড NH₄+ আয়ন ও OH - আয়নে আংশিক ভাবে বিয়োজিত অবস্থায় থাকে। উদ্ভিদ NH₄+ আয়ন লবণ হিসেবে পানির সাথে মূলের মাধ্যমে শোষণ করে থাকে। এইভাবে উদ্ভিদ মূলের মাধ্যমে ইউরিয়া শোষণ করে। NH₂-CO-NH₂+ H₂O -----> 2NH₃ + CO₂ NH₃ (l) + H₂O (l) <-----> NH₄OH (aq) NH₄OH (aq) <----> NH₄+(aq) +OH-(aq) 

সাবান অপেক্ষা ডিটারজেন্ট উত্তম পরিষ্কারক কেন?

সাবান অপেক্ষা ডিটারজেন্ট উত্তম পরিষ্কারক কেন?   সাবান হচ্ছে উচ্চতর ফ্যাটি এসিডের সোডিয়াম বা পটাশিয়াম লবণ  (R-COONa / K) ।  আবার ডিটারজেন্ট হচ্ছে উচ্চতর অ্যালকেনের সোডিয়াম বা পটাশিয়াম এর সালফেট লবণ (R- OSO₃Na)।  সাবান সাধারণত খর পানিতে ভালো কাপড় পরিষ্কার করতে পারে না। কারণ খর পানিতে উপস্থিত Ca²+, Mg²+, Fe²+ আয়নের সাথে বিক্রিয়া করে সাবানের গাদ বা অধঃক্ষেপ তৈরি করে। যার কারণে সাবানের অপচয় হয় এবং কাপড়ের সুতার ক্ষতি হয়।  অন্যদিকে, ডিটারজেন্ট খর পানির Ca²+, Mg²+, Fe²+ অয়নের সাথে দ্রবণীয় লবণ তৈরি করে।  ডিটারজেন্ট খর ও মৃদু উপায় পানিতে সমানভাবে কার্যকর।  তাই ময়লা কাপড় পরিষ্কারকরণে সাবান অপেক্ষা ডিটারজেন্ট উত্তম।

টয়লেট ক্লিনারে সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইডের (NaOH) সাথে সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইড(NaOCl) যোগ করা হয় কেন?

টয়লেট ক্লিনারে সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইডের (NaOH) সাথে সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইড (NaOCl) যোগ করা হয় কেন? ট য়লেট ক্লিনারে সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড এর সাথে সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইড যোগ করা হয়। কারণ সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইড (NaOCl)পানির সাথে বিক্রিয়া করে হাইপোক্লোরাস অ্যাসিড (HOCl) তৈরি করে। যা পরে ভেঙ্গে জায়মান অক্সিজেন [O]  উৎপন্ন করে। এই জায়মান অক্সিজেন টয়লেটের জীবাণুকে ধ্বংস করে। NaOCl + H₂O   -----> NaOH + HOCl HOCl     -------->  [ O ] +  HCl জীবাণু + [ O ] ------> মৃত জীবাণু এইজন্য টয়লেট ক্লিনারে সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড এর সাথে সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইড যোগ করা হয়।

সাবানায়ন প্রক্রিয়ায় NaCl যোগ করা হয় কেন?

সাবানায়ন প্রক্রিয়ায় NaCl যোগ করা হয় কেন? তেল বা চর্বির সাথে কস্টিক সোডা (NaOH) সহযোগে আর্দ্র বিশ্লেষণ করে সাবান তৈরির প্রক্রিয়াকে সাবানায়ন বলে। CH₂OCOC₁₇H₃₅ l CHOCOC₁₇H₃₅ +3NaOH ---> C₁₇H₃₅COONa l CH₂OCOC₁₇H₃₅ সাবানায়ন এ খাদ্য লবণ (NaCl) যোগ করা হয়।  কারণ, খাদ্য লবণ যোগ করলে সাবানের (C₁₇H₃₅COONa), Na+ আয়ন ও খাদ্য লবণের Na+ আয়নের মধ্যে সম আয়ন সৃষ্টি হওয়ায় সাবানের দ্রাব্যতা হ্রাস পায় এবং অধিক পরিমাণে সাবান উৎপন্ন হবে।  অর্থাৎ খাদ্য লবণ যোগ করার কারণ হল সাবানের উৎপাদন বৃদ্ধি করা।

অ্যামোনিয়া ক্ষারধর্মী কেন?

অ্যামোনিয়া ক্ষারধর্মী কেন? ব্রনটেস্ট বা প্রোটনীয় মতবাদ মতবাদ অনুযায়ী যেসব যৌগ, আয়ন, পরমাণু প্রোটন গ্রহণ করতে পারে তারা ক্ষারক। আবার, লুইস এর মতবাদ অনুসারে যারা কমপক্ষে একজোড়া লোনপেয়ার বা মুক্তজোড় ইলেকট্রন দান করতে পারে তারা ক্ষারক। অ্যামোনিয়া ( : NH₃)  অণুতে একজোড়া মুক্তজোড় ইলেকট্রন থাকে। যা অন্যকে দান করতে পারে। এইজন্য অ্যামোনিয়া একটি ক্ষারক। আবার, অ্যামোনিয়া একটি প্রোটন গ্রহণ করে অ্যামোনিয়াম আয়ন গঠন করে। যা ব্রনটেস্ট  মতবাদ অনুসারে ক্ষারক।              :NH₃ + H+   -------> NH₄+ সুতরাং বলা যায়, অ্যামোনিয়া একটি ক্ষারক।

যৌগমূলক কাকে বলে। কিভাবে যৌগমূলকের যোজনী বের করা যায়।

যৌগমূলক কাকে বলে। কিভাবে যৌগমূলকের যোজনী বের করা যায় ।   যৌগমূলকঃ  একাধিক মৌলের একাধিক পরমাণুর সমন্বয়ে গঠিত একটি পরমাণু গুচ্ছ যা একটি আয়নের ন্যায় আচরণ করে এবং বিক্রিয়া শেষে অপরিবর্তিত থাকে, সেসব পরমাণু গুচ্ছকে যৌগমূলক বলে। যেমনঃ সালফেট (SO₄² - ) যৌগমূলক। কারণ এখানে সালফার ও অক্সিজেন এই দুটি মৌলের পাঁচটি পরমাণু যুক্ত হয়ে একটি পরমাণু গুচ্ছ গঠন করে যার নির্দিষ্ট আধান -2 আছে। যৌগমূলকের যে চার্জ বা আধান থাকে সেই চার্জ বা আধান থেকে ধনাত্মক  বা ঋণাত্মক চিহ্ন বাদ দিলে যে সংখ্যাটি থাকে তাই ঐ যৌগমূলকের যোজনী নির্দেশ করে।  যেমনঃ কার্বনেট (CO₃² -) যৌগমূলকের আধান বা চার্জ -2. এখান থেকে ঋণাত্মক (-) চিহ্ন টি বাদ দিলে দুই (2) থাকে। এই দুই হচ্ছে কার্বনেট যৌগমূলকের যোজনী। নিচে কিছু যৌগমূলকের নাম, সংকেত, যোজনী, জারণ সংখ্যা যথাক্রমে দেওয়া হল ঃ  হাইড্রোক্সিল,   OH-,      1,      -1.  নাইট্রেট.         NO₃ -     1,     -1.  নাইট্রাইট        NO₂ -      1,     -1.  বাই সালফেট  HSO₄ -     1,     -1.  বাই কার্বনেট   HCO₃ -     1,     -1.  সালফেট      SO₄² -         2,       -2  সালফা

পর্যায় সারণির সুবিধা কি?

পর্যায় সারণির সুবিধা কি? পর্যায় সারণি আবিষ্কারের পূর্বে মৌলসমূহের ধর্ম গুলি আলাদা আলাদা ভাবে মনে রাখতে হতো। এতে করে মৌলসমূহের ধর্ম মনে রাখা বেশ কষ্টসাধ্য ছিল। মৌল গুলির ধর্ম সহজ মনে রাখার জন্য বিভিন্ন বিজ্ঞানী মৌলসমূহকে তাদের ধর্ম অনুসারে সাজানোর চেষ্টা করেন। পরবর্তীতে ১৮৬৯ খ্রিস্টাব্দে রাশিয়ান বিজ্ঞানী মেন্ডেলিফ একই ধর্ম বিশিষ্ট মৌল সমূহকে একই গ্রুপে রেখে মৌল সমূহের জন্য পর্যায় সারণি আবিষ্কার করেন। এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত মৌলের সংখ্যা 118 টি।  আমরা যদি প্রতিটি মৌলের চারটি ভৌত ধর্ম  এবং  চারটি  রাসায়নিক ধর্ম মনে রাখি তবে 118 মৌলের ধর্ম হবে = 118 x ( 4 + 4) = 944 টি। এতগুলো ধর্ম মনে রাখা অসম্ভব। কিন্তু পর্যায় সারণি সে কাজটিকে অনেক সহজ করে দিয়েছে। পর্যায় সারণিতে 18 টি গ্রুপ এবং 7টি পর্যায় আছে। প্রতিটি গ্রুপের সাধারণ ধর্ম জানা থাকলে 118 টি মৌলের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্ম সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা লাভ করা যায়।  কাজেই মৌল সমূহের ধর্ম সহজে মনে রাখার জন্য পর্যায় সারণি অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

Redox বা জারণ-বিজারণ বিক্রিয়া কি?

Redox বা জারণ-বিজারণ বিক্রিয়া কি? রেডক্স বিক্রিয়াঃ  যে বিক্রিয়ায় একই সাথে জারণ ও বিজারণ সংঘটিত হয় সেই বিক্রিয়াকে রেডক্স বা জারণ- বিজারণ বিক্রিয়া বলে।   যেমনঃ সোডিয়াম ও ক্লোরিন বিক্রিয়া করে সোডিয়াম ক্লোরাইড উৎপন্ন করে। এ বিক্রিয়ায় সোডিয়াম এর জারণ ও ক্লোরিনের বিজারণ সংঘটিত হয়।     2Na + Cl₂ ------> 2NaCl    Na  -------> Na+   + e- (জারন অর্ধ বিক্রিয়া)    Cl + e- ------> Cl -  (বিজারন অর্ধ বিক্রিয়া) এই বিক্রিয়ায় বিক্রিয়ক সোডিয়ামের জারণ সংখ্যা 0(শূন্য) ছিল। একটি ইলেকট্রন ত্যাগ করে সোডিয়ামের জারণ সংখ্যা +1 হয়েছে।  অর্থাৎ সোডিয়ামের জারণ সংঘটিত হয়েছে।  অপরদিকে বিক্রিয়ক ক্লোরিন এর জারণ সংখ্যা শূন্য ছিল। একটি ইলেকট্রন গ্রহণ করে ক্লোরিনের জারণ সংখ্যা -1 হয়েছে।  অর্থাৎ ক্লোরিন বিজারিত হয়েছে।  এই বিক্রিয়াকে Redox বা জারণ-বিজারণ বিক্রিয়া বলে।

প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া কি?

প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া কি?   প্রতিস্থাপন বিক্রিয়াঃ  কোন অধিক সক্রিয় মৌল বা যৌগমূলক অপর কোন কম সক্রিয় মৌল বা যৌগমূলককে প্রতিস্থাপন করে নতুন যৌগ উৎপন্ন করার প্রক্রিয়াকে প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া বলে।   যেমনঃ সালফিউরিক এসিডের সাথে সোডিয়াম ধাতু বিক্রিয়া করে সোডিয়াম সালফেট ও হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপন্ন করে।  এখানে হাইড্রোজেনের সক্রিয়তা সোডিয়ামের থেকে কম হওয়ায় সোডিয়াম হাইড্রোজেনকে প্রতিস্থাপন করে সোডিয়াম সালফেট গঠন করে। 2Na + H₂SO₄ ------>Na₂SO₄ +H₂   অপরদিকে, যেসব ধাতুর সক্রিয়তা হাইড্রোজেন থেকে কম {যেমনঃ কপার(Cu), সিলভার(Ag), মার্কারি(Hg), প্লাটিনাম(Pt), গোল্ড(Au)} তারা এসিডের হাইড্রোজেনকে প্রতিস্থাপন করতে পারে না। যেমনঃ কপার, নাইট্রিক এসিডের হাইড্রোজেনকে প্রতিস্থাপন করতে পারে না। Cu + HNO₃ -----> কোন বিক্রিয়া হয় না।

সংযোজন বিক্রিয়া ও সংশ্লেষণ বিক্রিয়া কি?

সংযোজন বিক্রিয়া ও সংশ্লেষণ বিক্রিয়া কি? সংযোজন বিক্রিয়াঃ  যে বিক্রিয়ায় দুই বা ততোধিক যৌগ বা মৌল যুক্ত হয়ে নতুন যৌগ উৎপন্ন করে সে বিক্রিয়াকে সংযোজন বিক্রিয়া বলে।   যেমনঃ ক্যালসিয়াম অক্সাইড (CaO) ও কার্বন ডাই অক্সাইড (CO₂) বিক্রিয়া করে ক্যালসিয়াম কার্বনেট (CaCO₃) গঠন করে।  আবার হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন বিক্রিয়া করে পানি গঠন করে।  CaO + CO₂ ------> CaCO₃   H₂ + O₂ ------> H₂O   সংশ্লেষণ বিক্রিয়াঃ  যে সংযোজন বিক্রিয়ায়  বিক্রিয়ক গুলি মৌলিক পদার্থ হলে তাকে সংশ্লেষণ বিক্রিয়া বলে।   যেমনঃ সোডিয়াম ও  ক্লোরিন ক্রিয়া করে সোডিয়াম ক্লোরাইড উৎপন্ন করে। বিক্রিয়ায় বিক্রিয়ক সোডিয়াম ও ক্লোরিন মৌলিক পদার্থ হাওয়াই এই সংযোজন বিক্রিয়াকে সংশ্লেষণ বিক্রিয়া বলে।         2Na + Cl₂ ------ > 2NaCl   আবার, সকল সংশ্লেষণ বিক্রিয়া সংযোজন বিক্রিয়া, কিন্তু সকল সংযোজন বিক্রিয়া সংশ্লেষণ বিক্রিয়া নয়। কারণ সংযোজন বিক্রিয়ায় বিক্রিয়ক হিসাবে মৌলিক ও যৌগিক উভয় পদার্থ অংশগ্রহণ করে। যেমনঃক্যালসিয়াম অক্সাইড (CaO) ও কার্বন ডাই অক্সাইড (CO₂) বিক্রিয়া করে ক্যা

দহন বিক্রিয়া কি?

দহন বিক্রিয়া কি?   দহন বিক্রিয়াঃ  কোন মৌল বা যৌগকে বাতাসের অক্সিজেনের উপস্থিতিতে পুড়িয়ে তার উপাদান মৌলের অক্সাইডে পরিণত করার প্রক্রিয়াকে দহন বিক্রিয়া বলে।                      Na + O₂ --------> Na₂O CH₄ + O₂ --------> CO₂ + H₂O + তাপ  প্রতিটি জ্বালানির দহন বিক্রিয়ায় কার্বন ডাই অক্সাইড, জলীয় বাষ্প, তাপ শক্তি উৎপন্ন হয়। এ তাপ শক্তি ব্যবহার করে আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদন, কল কারখানা চালনা, রান্না করা প্রভৃতি করতে পারি।  দহন বিক্রিয়া গুলি একমুখী হয়ে থাকে।

আর্দ্র বিশ্লেষণ / পানি-বিশ্লেষণ বিক্রিয়া কি?

আর্দ্র বিশ্লেষণ / পানি-বিশ্লেষণ  বিক্রিয়া কি?   আর্দ্র বিশ্লেষণ বিক্রিয়াঃ যে বিক্রিয়ায়  কোন যৌগের দুই অংশ  (ধনাত্মক প্রান্ত ও ঋণাত্মক প্রান্ত) পানির বিপরীত আধান বিশিষ্ট দুই অংশের সাথে যুক্ত হয়ে নতুন যৌগ উৎপন্ন করে। সেই বিক্রিয়াকে আর্দ্র বিশ্লেষণ বিক্রিয়া বলে।   আর্দ্র বিশ্লেষণ বিক্রিয়া দ্বিপ্রতিস্থাপন বিক্রিয়ার অনুরূপ।  আবার আর্দ্রবিশ্লেষন বিক্রিয়ায় উৎপন্ন যৌগের অধঃক্ষেপ পড়ে এ কারণে একে অধঃক্ষেপণ বিক্রিয়া বলে।   যেমনঃ অ্যালুমিনিয়াম ক্লোরাইড (AlCl₃) যৌগের দুই প্রান্ত একটি অ্যালুমিনিয়াম আয়ন (Al³+) ও অপর প্রান্ত ক্লোরাইড আয়ন (Cl-). অ্যালুমিনিয়াম আয়নের সাথে পানির ঋণাত্মক প্রান্ত হাইড্রোক্সিল আয়ন  (-OH) যুক্ত হয়ে অ্যালুমিনিয়াম হাইড্রক্সাইড Al(OH)₃ এর অধঃক্ষেপ উৎপন্ন করে।  অপরদিকে ক্লোরাইড আয়নের সাথে পানির ধনাত্মক আয়ন (H+) যুক্ত হয়ে হাইড্রোজেন ক্লোরাইড (HCl) গঠন করে।  AlCl₃(aq) +3H₂O(l) -----> Al(OH)₃ (s) + HCl

ইথানলকে জৈব জ্বালানি বলা হয় কেন?

ইথানলকে জৈব জ্বালানি বলা হয় কেন?   ইথানল হচ্ছে জৈব যৌগ।  যা অক্সিজেনে দহন করলে কার্বন ডাই-অক্সাইড, জলীয়বাষ্প ও তাপ শক্তি উৎপন্ন হয়।    C₂H₅OH + O₂ ----> CO₂ + H₂O + তাপশক্তি আমরা এই তাপ শক্তি বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করি। খনিজ জ্বালানি যেমনঃ কেরোসিন, পেট্রোল, ডিজেল ইত্যাদির মত ইথানল কে পোড়ালে তাপ শক্তি উৎপন্ন হয়। খনিজ জ্বালানির মত ইথানলকে তাপ ইঞ্জিনের জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে কল কারখানা, গাড়ি প্রভৃতি চালানো যায়। কোন কোন দেশে খনিজ জ্বালানির সঙ্গে 20% থেকে 30% ইথানল ব্যবহার করা হয়। এতে করে খনিজ জ্বালানির উপর বাড়তি চাপ হ্রাস পায়। ইথানল কার্বোহাইড্রেট জাতীয় শস্যদানা যেমনঃ ভুট্টা, আলু, ইক্ষু, গম, ধান ইত্যাদি থেকে গাঁজন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উৎপন্ন করা যায়।  ইথানল এর উৎস এই শস্যদানা গুলি শেষ হয়ে গেলে পরবর্তীতে তা কৃষি কাজের মাধ্যমে পুনরায় উৎপাদন করা যায়।  এজন্য ইথানল কখনো শেষ হবার নয়।  এ কারণে ইথানলকে জৈব জ্বালানি বলা হয়।

মুক্তজোড় ইলেকট্রন ও বন্ধন জোড় ইলেকট্রন কাকে বলে।

মুক্তজোড় ইলেকট্রন ও বন্ধন জোড় ইলেকট্রন কাকে বলে।   মুক্তজোড় ইলেকট্রনঃ   কোন পরমাণুর যোজ্যতা স্তরে বা সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরে যে ইলেকট্রন গুলো বন্ধন গঠনে অংশগ্রহণ করে না তাদেরকে মুক্তজোড় ইলেকট্রন বলে।   যেমন ঃ ক্লোরিনের ইলেকট্রন বিন্যাস করলে দেখা যায় Cl (17) ---> 1s² 2s²2p⁶ 3s² 3Px² 3Py² 3Pz¹ এখানে, ক্লোরিনের সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তর অর্থাৎ তৃতীয় শক্তিস্তরে 3s² 3Px² 3Py² অরবিটাল গুলোতে দুটি করে ইলেকট্রন বিদ্যমান থাকে। এই ইলেকট্রনগুলি বন্ধন গঠনে অংশগ্রহণ করে না। এজন্য এই ইলেকট্রনগুলি কে মুক্তজোড় ইলেকট্রন বলে। এখানে ক্লোরিনের তিন জোড়া মুক্তজোড় ইলেকট্রন আছে।   বন্ধন জোড় ইলেকট্রনঃ  পরমাণু যোজ্যতা স্তরে বা সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরে যে ইলেকট্রনগুলি বন্ধন গঠনে অংশগ্রহণ করে তাদেরকে বন্ধন জোড় ইলেকট্রন বলে।  কোন পরমাণু ইলেকট্রন বিন্যাস করলে তার সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরে যে বেজোড় ইলেকট্রন গুলি থাকে সেই ইলেকট্রনগুলি বন্ধন গঠনে অংশগ্রহণ করে। কাজেই বলা যায়, কোন পরমাণুর সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরে যতটি বেজোড় ইলেকট্রন থাকে ঐ পরমাণু ততটি বন্ধন গঠন করতে পারে।   যেমনঃ ক্লোরিনের ইলেকট

Popular posts from this blog

কপার(Cu) ও ক্রোমিয়ামের(Cr) ইলেকট্রন বিন্যাস ব্যতিক্রম কেন?

মুক্তজোড় ইলেকট্রন ও বন্ধন জোড় ইলেকট্রন কাকে বলে।

জারণ সংখ্যা নির্ণয়ের সহজ পদ্ধতি।

COD ও BOD কাকে বলে?

জারক ও বিজারক কাকে বলে? কিভাবে জারক ও বিজারক সহজেই চেনা যায়।

সালফার পরিবর্তনশীল যোজনী প্রদর্শন করে কেন?

প্রাইমারি স্ট্যান্ডার্ড ও সেকেন্ডারি স্ট্যান্ডার্ড পদার্থ কাকে বলে?

মোলার গ্যাস ধ্রুবক এবং এর মাত্রা, তাৎপর্য ও মান নির্ণয়।

প্রতীক ও সংকেতের মধ্যে পার্থক্য কি?

রাদারফোর্ড ও বোর পরমাণু মডেলের মধ্যে তুলনা।