Posts

Showing posts from 2023

লেখচিত্রের সাহায্যে বয়েলের সূত্রের ব্যাখ্য।

Image
  (১) গ্যাসের আয়তন (V) বনাম চাপের (P) লেখচিত্রঃ  বয়েলের সূত্র অনুসারে স্হির তাপমাত্রায় নির্দিষ্ট ভরের কোন গ্যাসের উপর বিভিন্ন চাপ প্রয়োগ করলে, বিভিন্ন আয়তন পাওয়া যায়। যা রেকর্ড করা হয়।  Y-অক্ষ বরাবর আয়তন এবং X- অক্ষ বরাবর চাপ লেখচিত্র অংকন করলে  নিম্নের চিত্রের ন্যায় অধিবৃত্তীয় রেখা পাওয়া যায়।  স্থির তাপমাত্রায় প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করে আয়তন বনাম চাপের লেখচিত্র অঙ্কন করলে প্রাপ্ত অধিবৃত্তীয় রেখা সমূহকে আইসোথার্ম বা সমতাপীয় রেখা বলা হয়।       চিত্রঃ আয়তন বনাম চাপ লেখচিত্র ।  (২) গ্যাসের আয়তন (V) বনাম 1/P লেখচিত্রঃ  স্থির তাপমাত্রায় কোন নির্দিষ্ট ভরের গ্যাসের আয়তন বনাম প্রযুক্ত চাপের ব্যস্তানুপাতে লেখচিত্র অঙ্কন করলে মূল বিন্দুগামী সরলরেখা পাওয়া যায়।  আমরা জানি, বয়েলের সূত্র   V α 1/P বা, V = K 1/P   [এখানে  V = y এবং 1/P = x] হলে-  y = mx  যা  মূল বিন্দুগামী সরলরেখার সমীকরণ। এজন্য  গ্যাসের আয়তন (V) কে Y- অক্ষ এবং  1/P কে X- অক্ষ বরাবর লেখচিত্র অংকন করলে মূলবিন্দুগামী সরল রেখা পাওয়া যায়। চিত্রঃ আয়তন (V) বনাম 1/P লেখচিত্র ।  (৩) গ্যাসের চাপ(P) ও আয়তনের(V) গুণফল ব

বয়েলের সূত্রের অনুসিদ্ধান্ত

  বয়েলের সূত্রঃ স্হির তাপমাত্রায় নির্দিষ্ট ভরের যেকোনো গ্যাসের আয়তন ঐ গ্যাসের উপর প্রযুক্ত চাপের ব্যস্তানুপাতিক।  অর্থাৎ স্হির তাপমাত্রায় গ্যাসের চাপ বৃদ্ধি করলে আয়তন হ্রাস পায়।  বয়েলের গাণিতিক সমীকরণ নিম্নরূপ-  P₁V₁ = P₂V₂ = K  -------(i) আমরা জানি,  গ্যাসের ঘনত্ব = (ভর / আয়তন)    d = (W / V ) বা, আয়তন = (ভর / ঘনত্ব).   V = (W / d ). এক্ষেত্রে গ্যাসের ভর (W) নির্দিষ্ট। তাই স্হির তাপমাত্রায় গ্যাসের আয়তন (V) পরিবর্তন করলে গ্যাসের ঘনত্ব (d) পরিবর্তিত হয়।  অতএব, V₁ = W / d₁ ,  এবং V₂ = W / d₂ (i) নং সমীকরণে V₁ ও V₂ এর মান বসাই, => (WP₁ / d₁) = (WP₂ / d₂ ) => ( P₁ / d₁ ) = (P₂ / d₂ ) => P / d = K => P = K d =>  P α d. অর্থাৎ স্থির তাপমাত্রায় নির্দিষ্ট ভরের কোন গ্যাসের ঘনত্ব ঐ গ্যাসের উপর প্রযুক্ত চাপের সমানুপাতিক। এটি বয়েলের অনুসিদ্ধান্ত। 

ভ্যান্ডার ওয়ালস ধ্রুবক a ও b এর তাৎপর্য কি?

  ভ্যানডার ওয়ালস্ ধ্রুবক a এর তাৎপর্য - ১. ভ্যানডার ওয়ালস ধ্রুবক a কোন গ্যাসের আন্তঃআণবিক আকর্ষন শক্তির পরিমাপক। কোন গ্যাসের জন্য a এর মান যত বেশি হবে, ঐ গ্যাসের আন্তঃআণবিক আকর্ষণ শক্তি তত বেশি হবে। ২. কোন গ্যাসের আণবিক ভর যত বেশি ঐ গ্যাসের জন্য a এর মান তত বেশি হবে এবং গ্যাসকে তত সহজে তরল করা যায়।  ৩. a এর একক চাপ ও আয়তনের এককের উপর নির্ভরশীল। আয়তনকে লিটার ও চাপকে এটমোস্ফেয়ার এককে প্রকাশ করা যায় তবে a এর একক  হবে- atm. / (L. mol)². ভ্যানডার ওয়ালস ধ্রুবক b এর তাৎপর্য - ১. b হল ১ মোল কোন গ্যাসের অনুসমূহের নিজস্ব আয়তন।  ২. কোন গ্যাসের আকার বড় হলে b এর মান বড় হবে।  ৩. b এর একক আয়তনের এককের উপর নির্ভরশীল। আয়তনকে লিটারে প্রকাশ করলে b এর একক হবে L / mol.

সাবানের কাঁচামাল কি কি

  সাবান তৈরির জন্য ব্যবহৃত কাঁচামাল সমূহ নিম্নরূপঃ  ১. তেল ও চর্বি  ২. সোডিয়াম সিলিকেট  ৩. কস্টিক সোডা  ৪. সোডিয়াম বাই কার্বনেট  ৫. ট্রাই সোডিয়াম ফসফেট  ৬. রঞ্জক ও সুগন্ধি  ৭. সোডা অ্যাশ। 

সাবান ও ডিটারজেন্ট এর মধ্যে পার্থক্য কি?

  সাবান ও ডিটারজেন্ট এর মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপঃ  ১. সাবান হচ্ছে উচ্চতর ফ্যাটি এসিডের  সোডিয়াম বা পটাশিয়াম লবন। অপরদিকে, ডিটারজেন্ট হচ্ছে উচ্চতর হাইড্রোকার্বনের সোডিয়াম বা পটাশিয়াম এর সালফেট লবণ। ২. সাবান খর পানিতে কাপড় পরিষ্কার করতে পারে না।  ডিটারজেন্ট খর পানিতে কাপড় পরিষ্কার করতে পারে।  ৩. সাবান পানিতে কম দ্রবণীয়।  কিন্তু ডিটারজেন্ট পানিতে বেশি দ্রবণীয়।   ৪. সাবানের পরিষ্কারক ক্ষমতা কম। কিন্তু ডিটারজেন্টের পরিস্কারক ক্ষমতা বেশি।

BOD ও COD এর মধ্যে পার্থক্য কি?

  BOD ও COD এর মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপঃ   ১. BOD প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কেবলমাত্র জৈব ভাঙ্গন যুক্ত পদার্থসমূহ জারিত হয়।  COD প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জারনযোগ্য সকল প্রকার জৈব ও অজৈব পদার্থ জারিত হয়।  ২. BOD তে অনুজীব দ্বারা জারন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা হয়। COD রাসায়নিক জারক দ্বারা জারন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা হয়।  ৩. BOD কষ্টসাধ্য এবং সময় সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। COD দ্রুত ও সহজতর প্রক্রিয়া।     ৪. BOD প্রাণ রাসায়নিক প্রক্রিয়া। COD রাসায়নিক প্রক্রিয়া। 

মিশ্র বা যৌগিক অক্সাইড কি?

  মিশ্র বা যৌগিক অক্সাইডঃ যে সকল অক্সাইডে একই মৌলের দুটি ভিন্ন জারণ সংখ্যার অক্সাইড এর মিশ্রণ বা যৌগ রূপে আচরণ করে। তাদেরকে মিশ্র বা যৌগিক অক্সাইড বলে।  যেমন- Fe₃O₄ ; Pb₃O₄ ; Mn₃O₄ ইত্যাদি।  ফেরোসোফেরিক অক্সাইড , ফেরাস অক্সাইড ও ফেরিক অক্সাইড এর মিশ্রণ। (Fe₃O₄ = FeO + Fe₂O₃) ,  ( Pb₃O₄ = PbO + Pb₂O₃) ,  ( Mn₃O₄ = MnO + Mn₂O₃ ).

সুপার অক্সাইড কি?

  সুপার অক্সাইডঃ যে সকল অক্সাইডে পার-অক্সাইড ও পলি-অক্সাইডের চেয়ে বেশি পরিমাণে অক্সিজেন থাকে তাদেরকে সুপার অক্সাইড বলে।  যেমন-  K₂O ; Na₂O. পর্যায় সারণির গ্রুপ-১ এর অতি সক্রিয় ধাতু সুপার অক্সাইড গঠন করে।  

সাব অক্সাইড কি?

সাব অক্সাইডঃ যে সকল অক্সাইডে অক্সিজেনের পরিমাণ স্বাভাবিক অক্সাইড এর চেয়ে কম থাকে তাদেরকে সাব অক্সাইড বলে।  যেমন- Pb₂O  ইত্যাদি। 

পলি অক্সাইড কি?

  যে সকল অক্সাইডে অক্সিজেনের পরিমাণ ওদের স্বাভাবিক অক্সাইড অপেক্ষা বেশি, কিন্তু শীতল লঘু এসিডের সাথে বিক্রিয়ায় হাইড্রোজেন পার অক্সাইড (H₂O₂) উৎপন্ন করে না। তাদেরকে পলি অক্সাইড বলে।  যেমন- MnO₂ ; PbO₂  ইত্যাদি।  MnO₂ + 4HCl ----> MnCl₂ + Cl₂ + 2H₂O 2PbO₂ + 4HCl ----> 2PbCl₂ + O₂ + 2H₂O .

পার অক্সাইড কি?

  যেসব অক্সাইডে সাধারণ অক্সাইডের থেকে বেশি পরিমাণ অক্সিজেন পরমাণু যুক্ত থাকে এবং শীতল লঘু এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে হাইড্রোজেন পার অক্সাইড (H₂O₂) উৎপন্ন করে, সে সকল অক্সাইডকে পার-অক্সাইড বলে।   যেমন - Na₂O₂ ; K₂O₂ ; BaO₂ ; H₂O₂ ইত্যাদি।  Na₂O₂ + 2HCl ----> H₂O₂ + 2NaCl K₂O₂ + 2HCl ----> H₂O₂ + 2KCl BaO₂ + 2HCl ----> H₂O₂ + BaCl₂

নিরপেক্ষ বা প্রশম অক্সাইড কি?

  নিরপেক্ষ অক্সাইডঃ যে সকল অধাতব অক্সাইড এসিড বা ক্ষারক কোনোটির সাথে বিক্রিয়া করে না অর্থাৎ এসিড বা ক্ষারীয় কোন ধর্ম প্রদর্শন করে না তাদেরকে নিরপেক্ষ বা প্রশমন অক্সাইড বলে।  যেমন- CO ; N₂O ; NO ; H₂O ইত্যাদি। 

উভধর্মী অক্সাইড কি?

  যে সকল অক্সাইড এসিড ও ক্ষার উভয়ের সাথে বিক্রিয়া করে লবণ ও পানি উৎপন্ন করে তাদেরকে উভধর্মী অক্সাইড বলে। BeO ; Al₂O₃ ; ZnO ; SnO₂ ; PbO ; V₂O₅ ইত্যাদি উভধর্মী অক্সাইড। BeO +2HCl ----> BeCl₂ + H₂O 2BeO + 4NaOH ----> 2Na₂BeO₂ + 2H₂O ZnO + 2HCl ----> ZnCl₂ + H₂O ZnO + 2NaOH ----> Na₂ZnO₂ + H₂O.

অক্সাইড কত প্রকার?

  অক্সাইডের প্রকারভেদঃ রাসায়নিক ধর্মের উপর ভিত্তি করে অক্সাইডকে নয় ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন- ১. অম্লীয় অক্সাইড  ২. ক্ষারীয় অক্সাইড  ৩. উভধর্মী অক্সাইড  ৪. নিরপেক্ষ অক্সাইড  ৫. পার অক্সাইড  ৬. সুপার অক্সাইড  ৭. পলি অক্সাইড  ৮. সাব অক্সাইড  ৯. মিশ্র অক্সাইড। 

অক্সাইড কাকে বলে।

  অক্সাইডঃ   অক্সিজেন ও অপর যেকোনো একটা মৌল দ্বারা গঠিত  যৌগকে অক্সাইড বলে।  যেমন Na₂O ; MgO ; ZnO ; CO₂ ইত্যাদি।  4Na + O₂ ----> 2Na₂O C + O₂ -----> CO₂ CaCO₃ -----> CaO + CO₂

নাইট্রাস এসিডের (HNO₂) জারণ ও বিজারণ ধর্ম

  নাইট্রাস এসিড (HNO₂) জারন ও  বিজারণ উভয়-ধর্ম প্রদর্শন করে।  জারন ধর্মঃ নাইট্রাস এসিড আয়োডিন লবণকে (KI) জারিত করে মুক্ত আয়োডিন (I₂) উৎপন্ন করে।  2HNO₂ + 2KI -----> I₂ + 2KOH + 2NO বিজারণ ধর্মঃ নাইট্রাস এসিডের জলীয় দ্রবণ হ্যালোজেন যেমন- ব্রোমিনকে (Br₂) বিজারিত করে হাইড্রোজেন ব্রোমাইড (HBr) উৎপন্ন করে।  HNO₂ + Br₂ + H₂O ----> 2HBr + HNO₃

NO এর জারন ধর্ম।

  NO এর জারন ধর্ম নিম্নরূপঃ   NO অধাতু যেমন - ফসফরাসকে জারিত করে P₂O₅ ও নাইট্রোজেন গ্যাস (N₂) উৎপন্ন করে।  4P + 10NO ----> 2P₂O₅ + 5N₂ আবার, কার্বনকে জারিত করে CO₂ ও নাইট্রোজেন গ্যাস (N₂) উৎপন্ন করে।  C + 2NO -----> CO₂ + N₂ NO ধাতুসমূহকে জারিত করে, যেমন-ম্যাগনেসিয়াম(Mg) কে জারিত করে ম্যাগনেসিয়াম অক্সাইড (MgO) ও নাইট্রোজেন গ্যাস (N₂) উৎপন্ন করে।  2Mg + 2NO ----> 2MgO + N₂ আবার, কপারকে (Cu) জারিত করে কপার অক্সাইড ( CuO) এবং নাইট্রোজেন গ্যাস (N₂) উৎপন্ন করে।  2Cu + 2NO -----> 2CuO + N₂

NO এর বিজারণ ধর্ম।

  NO এর বিজারণ ধর্মঃ   আয়োডিনের লঘু জলীয় দ্রবণ দ্বারা NO জারিত হয়ে HNO₃ উৎপন্ন করে এবং আয়োডিন বিজারিত হয়ে HI গঠন করে।  3I₂ + 2NO + 4H₂O -----> 2HNO₃ + HI

নাইট্রোজেনের অক্সি এসিড সমূহের নাম।

  নাইট্রোজেনের অক্সি এসিড সমূহঃ    নাইট্রোজেনের তিনটি অক্সি এসিড আছে।  ১. হাইপোনাইট্রাস এসিড (H₂N₂O₂)  ২. নাইট্রাস এসিড (HNO₂).  ৩. নাইট্রিক অ্যাসিড (HNO₃). অক্সি এসিড সমূহে নাইট্রোজেনের জারন সংখ্যাঃ   (H₂N₂O₂) হাইপোনাইট্রাস এসিডে নাইট্রোজেনের জারণ সংখ্যা +1.  (HNO₂) নাইট্রাস এসিডে  নাইট্রোজেনের জারণ সংখ্যা +3. (HNO₃) নাইট্রিক এসিডে  নাইট্রোজেনের জারণ সংখ্যা +5. 

NO₂ এর অম্ল ধর্ম।

  NO₂ অম্ল ধর্মঃ NO₂ শীতল পানিতে দ্রবীভূত হয়ে HNO₃ ও HNO₂ উৎপন্ন করে।  2NO₂ + H₂O ----> HNO₃ + HNO₂ HNO₃ ও HNO₂ এসিড পানিতে দ্রবীভূত হয়ে হাইড্রোজেন আয়ন (H+) তৈরি করে। এই হাইড্রোজেন আয়ন লাল লিটমাসকে নীল লিটমাসে পরিণত করে।  HNO₃(aq) -----> H+(aq)  + NO₃-(aq) HNO₂(aq) -----> H+(aq)  + NO₂-(aq) H+(aq) +  লাল লিটমাস ----> নীল লিটমাস এছাড়া HNO₃ ও HNO₂ ক্ষারের সাথে বিক্রিয়া করে লবন ও পানি উৎপন্ন করে।  NaOH+HNO₃ ----> NaNO₃ + H₂O NaOH+HNO₂ ----> NaNO₂ + H₂O এজন্য NO₂ এর অম্ল ধর্ম বিদ্যমান। 

NO₂ এর জারণ-বিজারণ ধর্ম।

  NO₂ জারন ধর্মঃ  NO₂ কপার, লোহিত তপ্ত লোহা ইত্যাদিকে জারিত করে তাদের অক্সাইডে রূপান্তর করে।  4Cu + 2NO₂ -----> 4CuO + N₂ 8Fe + 6NO₂ -----> 4Fe₂O₃ + 3N₂ NO₂ বিজারণ ধর্মঃ NO₂ গ্যাস অম্লীয় KMnO₄ দ্রবণকে বিজারিত করে KMnO₄ এর গোলাপি বর্ণকে বিবর্ণ করে।  2KMnO₄ + 3H₂SO₄ + 10 NO₂ ----> K₂SO₄ +2MnSO₄ + 10HNO₃ +3H₂O.

মোলার গ্যাস ধ্রুবক কি?

  মোলার গ্যাস ধ্রুবকঃ একই তাপমাত্রা ও চাপে এক মোল সকল গ্যাসের আয়তন সমান হয়। একে মোলার গ্যাস ধ্রুবক বা সার্বজনীন গ্যাস ধ্রুবক বলা হয়।  মোলার গ্যাস ধ্রুবকে  সাধারণত "R" দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

আদর্শ ও বাস্তব গ্যাস কাকে বলে?

  আদর্শ গ্যাসঃ যে সকল গ্যাস বয়েল ও চার্লসের সূত্র অথবা PV = nRT সমীকরণ মেনে চলে তাদেরকে আদর্শ গ্যাস বলা হয়।  আদর্শ গ্যাস একটি ধারণা মাত্র। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আদর্শ গ্যাস বলে কোন গ্যাস নেই।  বাস্তব গ্যাসঃ যে সকল গ্যাস বাস্তবে পাওয়া যায় অথবা PV = nRT সমীকরণ মেনে চলে না তাদেরকে বাস্তব গ্যাস বলে।  যেমন- H₂ , N₂ , O₂ , CO₂ ইত্যাদি গ্যাসসমূহ বাস্তব গ্যাস।

অ্যাভোগাড্রো প্রকল্প কি?

  কোন বস্তু বা পদার্থের পরিমাণকে আয়তন, ভর অথবা অনুর সংখ্যা দ্বারা প্রকাশ করা যায়।  ১৮১২ খ্রিস্টাব্দে ইতালির পদার্থবিদ অ্যাভোগাড্রো স্থির তাপমাত্রা ও চাপে গ্যাসের আয়তনের সাথে অণুর সংখ্যার একটি সম্পর্ক প্রস্তাব করেন। যা অ্যাভোগাড্রোর প্রকল্প নামে পরিচিত। অ্যাভোগাড্রো প্রকল্পটি হচ্ছে-  "স্থির তাপমাত্রা ও চাপে সম আয়তনের সকল গ্যাসে অনুর সংখ্যা সমান থাকে"।  স্থির তাপমাত্রা (T) ও চাপে (P) কোন গ্যাসের 'V' আয়তনে অনুর সংখ্যা 'n' হলে গাণিতিকভাবে অ্যাভোগাড্রোর প্রকল্পটি লিখা যায়- V α n  [তাপমাত্রা (T) ও চাপ (P) স্থির]  V = K n  (K ধ্রুবক)  এক মোল সকল গ্যাসে 6.02x10²³ টি অনু বিদ্যমান থাকে।  6.02x10²³ এই সংখ্যাটি অ্যাভোগাড্রো সংখ্যা নামে পরিচিত।

চার্লসের সূত্রটি বিবৃতি কর?

১৭৮৭ খ্রিস্টাব্দে চার্লস স্থির চাপে গ্যাসের আয়তনের সাথে তাপমাত্রার একটি সম্পর্ক প্রকাশ করেন। একে চার্লসের সূত্র বলে।  চার্লসের সূত্রটি হচ্ছেঃ " স্থির চাপে নির্দিষ্ট ভরের বা পরিমানের কোন গ্যাসের আয়তন ঐ গ্যাসের পরম তাপমাত্রার সমানুপাতীক"।  স্থির চাপে (P) নির্দিষ্ট পরিমাণ বা ভরের (n) গ্যাসের আয়তন (V) এবং তাপমাত্রা  (T) হলে গাণিতিকভাবে চার্লসের সূত্রটি লিখা যায়-  V α T  ( চাপ P স্থির)  V = K T (K ধ্রুবক)  V / T = K ------- (1) তাপমাত্রা T কে পরিবর্তন করে T₁ , T₂ , T₃ ------ এবং আয়তন V কে পরিবর্তন করে V₁ , V₂ , V₃ ----- করা হলে, (1) সমীকরণ অনুসারে লিখা যায়-  V₁ / T₁ = K ------ (2)  অনুরূপভাবে,  V₂ / T₂ = K ----- (3) V₃ / T₃ =K ------- (4)  (2), (3), (4) সমীকরণ গুলির ডানপক্ষ ধ্রুবক।  অতএব, চার্লসের সূত্রটি হচ্ছে- V₁ / T₁=V₂ / T₂=V₃ /T₃ = ------ = K

পরম শূন্য তাপমাত্রা কাকে বলে

চার্লসের সূত্র অনুসারে, যে তাপমাত্রায় সকল গ্যাসের আয়তন তত্ত্বীয়ভাবে শূন্য হয়ে যায় তাকে পরম শূন্য তাপমাত্রা বলে।   পরম শূন্য তাপমাত্রা হচ্ছে: -273.15ºC বা 0 K.

প্রমাণ তাপমাত্রা ও চাপ কি?

তাপমাত্রা ও চাপের ভিন্ন পরিবর্তনের ফলে বিভিন্ন গ্যাসের আয়তন বিভিন্নভাবে পরিবর্তিত হয়। এর ফলে গ্যাস সমূহের আয়তনের তুলনা করা কষ্টকর হয়। এজন্য বিভিন্ন গ্যাসের আয়তনের তুলনা করার সুবিধার্থে তাপমাত্রা ও চাপের একটি নির্দিষ্ট মানকে প্রমাণ বা Standard হিসেবে ধরা হয়।  তাপমাত্রা ও চাপের এই মানগুলোকে প্রমাণ তাপমাত্রা ও চাপ (Standard Temperature and Pressure)  অথবা আদর্শ তাপমাত্রা ও চাপ বলে।  সাধারণত 0ºC বা 273K তাপমাত্রাকে আদর্শ বা প্রমাণ  তাপমাত্রা এবং 1atm বা 76cm (Hg) বা 760mm (Hg) বা 101.325kpa বা 101325pa চাপকে আদর্শ বা প্রমাণ  চাপ ধরা হয়।  আদর্শ তাপমাত্রা ও  চাপে 1 মোল যে কোন গ্যাসের  আয়তন ২২.৪ লিটার হয়।

বয়েলের সূত্র।

১৬৬০ সালে রবার্ট বয়েল পরীক্ষার সাহায্যে লক্ষ্য করেন যে, গ্যাসের আয়তনের উপর চাপের একটি বিপরীতমুখী প্রভাব রয়েছে। তিনি এ প্রভাব বিবৃত করে একটি সূত্র দেন। একে বয়েলের সূত্র বলে।  সূত্রটি হলঃ-" স্থির তাপমাত্রায় নির্দিষ্ট ভরের কোন গ্যাসের আয়তন গ্যাসটির উপর প্রযুক্ত চাপের ব্যস্তানুপাতিক"। স্থির  তাপমাত্রায় (T) নির্দিষ্ট পরিমাণ বা ভরবিশিষ্ট (n) কোন গ্যাসের আয়তন (V) এবং চাপ (P) হলে গাণিতিক নিয়মে বয়েলের সূত্র কে আমরা লিখতে পারি- V α 1/P (তাপমাত্রা T স্থির)  V = K 1/P  (K ধ্রুবক)  PV = K ----------(1) স্থির তাপমাত্রায় গ্যাসের চাপ P কে পরিবর্তন করে P₁ , P ₂ , P ₃ .....  এবং আয়তন V কে পরিবর্তন করে V₁ ,V₂ ,V₃ ........ করা হলে,  তখন স্থির তাপমাত্রায় বয়েলের সূত্র কে আমরা লিখতে পারি -  P₁V₁ = K -----(2) অনুরূপভাবে, P₂V₂ = K -----(3) P₃V₃ = K -------(4) সমীকরণ গুলির ডানপক্ষ ধ্রুবক। অতএব, বয়েলের সূত্রের সমীকরণ হলো-  P₁V₁ = P₂V₂ = P₃V₃ --------  = K

গ্যাস কাকে বলে?

  গ্যাসঃ   গ্যাস হচ্ছে পদার্থের এমন একটি ভৌত অবস্থা যেখানে, সাধারণ তাপমাত্রা ও চাপে অনুসমূহের মধ্যে আন্তঃআণবিক আকর্ষণ বল খুবই কম থাকে এবং অনুসমূহের গতিশক্তি বা স্থনান্তর গতি সবচেয়ে বেশি থাকে। 

গ্যাসের বৈশিষ্ট্যগুলো কি কি?

গ্যাসের বৈশিষ্ট্যসমূহ নিম্নরূপ:-  ১। গ্যাসের গঠনঃ গ্যাস পদার্থের একটি সমসত্ব ভৌত অবস্থা। এটি অসংখ্য স্থিতিস্থাপক, গোলাকার ও অতিক্ষুদ্রকর কণার সমন্বয়ে গঠিত।  ২। সমসত্ত্ব মিশ্রণ ক্ষমতাঃ বিক্রিয়াহীন একাধিক গ্যাস যে কোন অনুপাতে পরস্পর মিশ্রিত হয়ে সমসত্ব মিশ্রণ তৈরি করে।  ৩। গ্যাসের চাপঃ গ্যাসীয় অবস্থায় পদার্থের নির্দিষ্ট কোন চাপ নেই। গ্যাসের অনুসমূহ অবিরাম নিজেদের মধ্যে এবং পাত্রের দেয়ালের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। পাত্রের দেয়ালের সাথে গ্যাস অনুর সংঘর্ষের ফলেই গ্যাসের চাপে সৃষ্টি হয়।তবে,  গ্যাসীয় অবস্থায় পদার্থের নির্দিষ্ট কোন চাপ নেই।  কারণ গ্যাস ধারনকারী পাত্রের আয়তন এবং তাপমাত্রার সাথে গ্যাসের চাপ পরিবর্তিত হয়।     ৪। আকৃতি ও আয়তনঃ গ্যাসের নির্দিষ্ট কোন আকৃতি ও আয়তন নেই। যে পাত্রে রাখা হয় গ্যাস সেই পাত্রের সমস্ত আয়তন এবং পাত্রের আকার ধারণ করে।  ৫। আন্তঃ আণবিক আকর্ষণ বলঃ গ্যাসের অনুসমূহের মধ্যে আন্তঃআণবিক আকর্ষণ বল নেই বললেই চলে। যা খুবই কম।  ৬। গ্যাসের সংকোচন ও প্রসারণযোগ্যতাঃ   কঠিন ও তরল পদার্থের চেয়ে গ্যাসীয় পদার্থ অনেক বেশি সংকোচনশীল ও প্রসার

গ্যাস সূত্র কাকে বলে। এগুলো কি কি?

গ্যাস সূত্র: গ্যাসের আয়তনের উপর তাপমাত্রা, চাপ ও মোলসংখ্যার প্রভাব রয়েছে। এসব প্রভাবসহ গ্যাসের বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যার জন্য বিভিন্ন সময়ে কয়েকটি গ্যাস সূত্রের অবতারণা করা হয়েছে। এসব সূত্রকে একত্রে গ্যাস সূত্র বলে।  গ্যাসের সূত্রগুলো নিম্নরূপঃ  ১/ বয়েলের সূত্র ২/ চার্লসের সূত্র ৩/ অ্যাভোগেড্রোর সূত্র ৪/ গে-লুসাকের চাপের সূত্র। 

বিরল মৃত্তিকা মৌল কাকে বলে।

পর্যায় সারণির ষষ্ঠ পর্যায়ের এবং গ্রুপ তিনের মৌল ল্যান্থানাম থেকে পরবর্তী লুটেসিয়াম পর্যন্ত 15 টি মৌলকে ল্যান্থানয়েডস সিরিজ বা বিরল মৃত্তিকা মৌল বলে। বিরল মৃত্তিকা মৌল গুলি হচ্ছে-  Lanthanum (La), Cerium(Ce),     praseodymium(Pr), Neodymium(Nd), Promethium(Pm),  Samarium(Sm),  Europium(Eu),  Gadolinium(Gd), Terbium(Tb), Dysprosium(Dy), Holmium(Ho), Erbium(Er),  Thulium(Tm), Ytterbium(Yb), Lutetium(Lu).

লন্ডন বল কাকে বলে?

যে কোন অনু বা পরমাণুতে দ্রুত ঘূর্ণনরত ইলেকট্রন সমূহের বিস্তরণ যেকোনো মুহূর্তে সব অবস্থানে সমভাবে হতে পারে না।  যেকোনো মুহূর্তে নিউক্লিয়াসের কোন এক দিকে ইলেকট্রন মেঘের ঘনত্ব বেশি হবে। অর্থাৎ ইলেকট্রন মেঘের আংশিক বিকৃতি ঘটে। এই অংশে আংশিক ঋণাত্মক চার্জের সৃষ্টি হয়।  অপর অংশে ইলেকট্রন মেঘের ঘনত্ব হ্রাস পায়, এবং সেই দিকে আংশিক ধনাত্মক চার্জের সৃষ্টি হয়।  অনু বা পরমাণুতে ইলেকট্রন মেঘের এরকম বিকৃতি লন্ডন বল নামে পরিচিত।

Popular posts from this blog

কপার(Cu) ও ক্রোমিয়ামের(Cr) ইলেকট্রন বিন্যাস ব্যতিক্রম কেন?

মুক্তজোড় ইলেকট্রন ও বন্ধন জোড় ইলেকট্রন কাকে বলে।

জারণ সংখ্যা নির্ণয়ের সহজ পদ্ধতি।

COD ও BOD কাকে বলে?

জারক ও বিজারক কাকে বলে? কিভাবে জারক ও বিজারক সহজেই চেনা যায়।

সালফার পরিবর্তনশীল যোজনী প্রদর্শন করে কেন?

প্রাইমারি স্ট্যান্ডার্ড ও সেকেন্ডারি স্ট্যান্ডার্ড পদার্থ কাকে বলে?

মোলার গ্যাস ধ্রুবক এবং এর মাত্রা, তাৎপর্য ও মান নির্ণয়।

প্রতীক ও সংকেতের মধ্যে পার্থক্য কি?

রাদারফোর্ড ও বোর পরমাণু মডেলের মধ্যে তুলনা।