Posts

Showing posts from August, 2020

শ্বেত ফসফরাস(P₄) ও লোহিত ফসফরাসের(Pn) পারস্পারিক রূপান্তর।

শ্বেত ফসফরাস(P₄) ও লোহিত ফসফরাসের(Pn) পারস্পারিক রূপান্তর।  শ্বেত ফসফরাস(P₄) থেকে লোহিত ফসফরাস (Pn) :   250ºC তাপমাত্রায় নিষ্ক্রিয় পরিবেশে (CO₂ বা N₂ গ্যাস) আয়োডিন (I₂) প্রভাবকের উপস্থিতিতে শ্বেত ফসফরাস ; লোহিত ফসফরাসে রূপান্তরিত হয় ।  P₄  ---------------> Pn (লোহিত ফসফরাস). লোহিত ফসফরাস(Pn) থেকে শ্বেত ফসফরাস (P₄):  550ºC তাপমাত্রায় নিষ্ক্রিয় পরিবেশে (CO₂ বা N₂ গ্যাস ) লোহিত ফসফরাসকে উত্তপ্ত করলে, লোহিত ফসফরাসের বাষ্প উৎপন্ন হয়। এই বাষ্পকে শীতল করলে শ্বেত ফসফরাস উৎপন্ন হয়। Pn -------> লোহিত ফসফরাসের বাষ্প ------->  শ্বেত ফসফরাস (P₄).

বহুরূপতা কি? ( কার্বন, সালফার, ফসফরাস ও অক্সিজেনের বহুরূপতা)।

বহুরূপতা কি? ( কার্বন, সালফার, ফসফরাস ও অক্সিজেনের বহুরূপতা)।   বহুরূপতাঃ যদি কোন মৌল ভিন্ন ভিন্ন রূপে প্রকৃতিতে থাকতে পারে তার এ ধর্মকে বহুরূপতা বলে। যেমনঃ কার্বনের বহুরূপতা হচ্ছে- গ্রাফাইট,  হীরক, কয়লা ইত্যাদি। কার্বনের রূপভেদঃ কার্বন একটি বহুরূপী মৌল। এর অনেক রূপভেদ আছে। কার্বনের রূপভেদকে দুটি শ্রেণীতে ভাগ করা যায়। যথা- স্ফটিকাকার বা দানাদার ও  অদানাদার। স্ফটিকার কার্বনের রূপভেদঃ স্ফটিকার কার্বনের রূপভেদ হচ্ছে ডায়মন্ড ও গ্রাফাইট।  অদানাদার কার্বনের রূপভেদঃ অদানাদার কার্বন প্রকৃতিতে নানা রূপে থাকে। যেমনঃ কাঠ কয়লা, প্রাণিজ কয়লা, ভুসা কয়লা, কোক কার্বন, কয়লা, গ্যাস কার্বন।  কার্বন একটা বিজারক পদার্থ। কার্বন দ্বারা ধাতুর অক্সাইডকে বিজারিত করে মুক্ত ধাতুতে রুপান্তর করা যায়। সালফারের বহুরূপতাঃ প্রকৃতিতে সালফারের অনেকগুলো রূপভেদ আছে। যেমনঃ দানাদার, অদানাদার ও তরল সালফার। দানাদার সালফারঃ দানাদার সালফারের দুটি রূপভেদ আছে।     ১. রম্বিক বা আলফা সালফার         ২. মনোক্লিনিক বা বিটা সালফার। অদানাদার সালফারঃ অদানাদার সালফারের দুটি বহুরূপতা হচ্ছে-     ১. প্লাস্টিক বা

তড়িৎ বিশ্লেষণ কি?

তড়িৎ বিশ্লেষণ কি?   তড়িৎ বিশ্লেষণঃ   তড়িৎ বিশ্লেষণ হলো এমন একটি প্রক্রিয়া, যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিগলিত বা দ্রবীভূত তড়িৎ বিশ্লেষ্যের মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ পরিবহনের সময় তড়িৎ বিশ্লেষ্যের বিয়োজন বা রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে। যেমনঃ বিগলিত সোডিয়াম ক্লোরাইডের (NaCl) মধ্যে দিয়ে তড়িৎ প্রবাহ চালনা করলে, ধনাত্মক তড়িৎদ্বার বা অ্যানোডে ক্লোরিন গ্যাস উৎপন্ন হয়। অপরদিকে ঋনাত্বক তড়িৎদ্বার বা ক্যাথোডে সোডিয়াম ধাতু সঞ্চিত হয়।   তড়িৎ বিশ্লেষণের কৌশলঃ কঠিন অবস্থায় তড়িৎ বিশ্লেষ্য পদার্থের আয়নসমূহ কেলাসের মধ্যে নির্দিষ্ট স্থানে দৃঢ়ভাবে আবদ্ধ থাকে। কঠিন কেলাসে আয়ন মুক্ত অবস্থায় থাকে না। সেইজন্য কঠিন অবস্থায় এরা বিদ্যুৎ পরিবহন করে না। বিগলিত বা দ্রবীভূত অবস্থায় আয়নসমূহ মোটামুটি স্বাধীনভাবে বিচরণ করে। যেমনঃ বিগলিত বা দ্রবীভূত অবস্থায় সোডিয়াম ক্লোরাইডের সোডিয়াম আয়ন (Na+) ও ক্লোরাইড আয়ন (Cl-) সমূহ মোটামুটি মুক্ত অবস্থায় চলাচল করে। এ দ্রবণে দুটি তড়িৎদ্বার প্রবেশ করিয়ে তাদের মধ্যে ব্যাটারির সাহায্যে বিভব পার্থক্য সৃষ্টি করা হয়। ক্যাথোড ইলেকট্রন সমৃদ্ধ হাওয়ায় ধনাত্মক সোডি

পর্যায় সারণি ( Periodic Table).

পর্যায় সারণি ( Periodic Table). প্রাচীনকালে মৌলসমূহের ধর্মের সাদৃশ্য সম্পর্কে মানুষের জানা ছিল না বলে প্রতিটি মৌলের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্ম আলাদাভাবে জানা হতো। কিন্তু পরবর্তীতে বিজ্ঞানীগণ দেখলেন যে মৌলসমূহের ধর্মের মধ্যে সম্পর্ক বিদ্যমান। এ থেকে পরবর্তীতে পর্যায় সারণি আবিষ্কার করা হয়। পর্যায় সারণিঃ একই ধর্ম বিশিষ্ট মৌল সমূহকে একই শ্রেণিতে রেখে এবং আবিষ্কৃত সকল মৌলকে স্থান দিয়ে বর্তমানে যে সারণি প্রচলিত আছে তাকে পর্যায় সারণী বলে। পর্যায় সারণির উদ্দেশ্যঃ ১. আবিষ্কৃত সকল মৌলসমূহের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্ম সহজে জানা যায়। ২. মৌলের সুশৃংখল শ্রেণীকরণ করা যায়। ৩. নতুন মৌলের আবিষ্কার সম্পর্কে পূর্বাভাস। ৪. শিল্প গবেষণার পথ নির্দেশ করা। ৫. পরমাণুর গঠন রহস্যের সমাধান করা। ৬. বিভিন্ন মৌল সম্পর্কে সহজে পরিচিতি লাভ করা। ৭. রসায়ন পাঠ সহজীকরণ। পর্যায় সারণির পটভূমিঃ পর্যায় সারণী হচ্ছে, যেখানে মৌল সমূহের ধর্মের সাদৃশ্য বিদ্যামান রেখে মৌল সমূহের শ্রেনিকরণ। বিভিন্ন বিজ্ঞানি বিভিন্ন সময়ে অনেক পরিশ্রমের মাধ্যমে পর্যায় সারণি আবিষ্কার করে। সর্বপ্রথম ল্যাভয়সিয়ে 1789 খ্রিস্টাব্দে মৌলসমূহকে ধ

বোর পরমাণু মডেল (Bohr's Atom Model).

বোর পরমাণু মডেল (Bohr's  Atom Model).   রাদারফোর্ড তার পরমাণু মডেলে যে প্রস্তাবনাগুলো দেন, তার কিছু ত্রুটি বিদ্যমান আছে। রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেলের ত্রুটিগুলো দূর করার জন্য 1913 খ্রিস্টাব্দে নীলস বোর তার বিখ্যাত হাইড্রোজেন পরমাণু মডেল প্রতিষ্ঠিত করেন। বোরের পরমাণু মডেলটি ম্যাক্সপ্লাঙ্ক ও আইনস্টাইনের বিকিরণ সম্পর্কিত কোয়ান্টাম তত্ত্বের উপর প্রতিষ্ঠিত। বোর পরমাণু মডেলের স্বীকার্য গুলি নিম্নরূপঃ ১. স্থির কক্ষপথের ধারণাঃ পরমাণুতে নিউক্লিয়াসের চারপাশে কতগুলো অনুমোদিত স্থির কক্ষপথ রয়েছে। ইলেকট্রনসমূহ এই স্থির কক্ষপথেই নিউক্লিয়াসের চারদিকে পরিভ্রমণ করে। প্রতিটি কক্ষপথ গুলো নির্দিষ্ট শক্তির হয়ে থাকে। ইলেকট্রন যতক্ষণ একটি স্থির কক্ষপথে অবস্থান করে, ততক্ষণ পর্যন্ত কোন শক্তি শোষণ বা বিকিরণ করবে না। এ কক্ষপথ গুলোকে শক্তিস্তর বা স্থির কক্ষপথ বা অরবিট বলে। শক্তিস্তরগুলোকে 'n' দ্বারা প্রকাশ করা হয়। n= 1 হলে প্রথম শক্তিস্তর, n = 2 হলে দ্বিতীয় শক্তিস্তর, n = 3 হলে তৃতীয় শক্তিস্তর ইত্যাদি হবে। ২. কৌণিক ভরবেগের ধারণাঃ প্রতিটি নির্দিষ্ট শক্তির স্থির কক্ষপথে আবর্তনর

রাসায়নিক বিক্রিয়া এবং তার বৈশিষ্ট্য।

  রাসায়নিক বিক্রিয়া এবং তার বৈশিষ্ট্য। রাসায়নিক বিক্রিয়াঃ   যে প্রক্রিয়ায় এক বা একাধিক পদার্থের মধ্যে রাসায়নিক পরিবর্তনের ফলে এক বা একাধিক নতুন পদার্থ উৎপন্ন হয় তাকে রাসায়নিক ক্রিয়া বা বিক্রিয়া বলে।                    যেমনঃ হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন পরস্পরের সাথে বিক্রিয়া করে পানি উৎপন্ন করে। এক্ষেত্রে উৎপাদ পানির ধর্ম ; বিক্রিয়ক হাইড্রোজেন ও অক্সিজেনের ধর্ম হতে সম্পূর্ণ ভিন্ন। সুতরাং এটি একটি রাসায়নিক বিক্রিয়া। 2H₂ + O₂ -------> 2H₂O রাসায়নিক বিক্রিয়ার বৈশিষ্ট্যসমূহঃ ১. বিক্রিয়ার ফলে সৃষ্ট পদার্থের ধর্ম বিক্রিয়ক সমূহের ধর্ম হতে সম্পূর্ণ ভিন্ন হবে। যেমনঃ         C + O₂ --------> CO₂  এখানে, কার্বন ও অক্সিজেনের বিক্রিয়ার ফলে সম্পূর্ণ ভিন্ন ধর্ম বিশিষ্ট পদার্থ কার্বন ডাই অক্সাইড উৎপন্ন হয়েছে। ২. বিক্রিয়ায় তাপ শক্তির শোষণ বা উদগীরণ ঘটে। যেমনঃ i) N₂ + 3H₂ --------> 2NH₃ ; ΔH = - 92kj ii) N₂ + O₂ --------> 2NO ; ΔH = +180kj  এখানে, ΔH এর মান ঋণাত্মক হলে তাপের উদগীরণ এবং ΔH এর মান ধনাত্মক হলে তাপের শোষণ বোঝায়। (I) নং সমীকরণে তাপের উদগীরণ এবং (ii) ন

রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেল (Rutherford's Atom Model).

  রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেল (Rutherford's Atom Model). পরমাণু সম্পর্কে বিভিন্ন বিজ্ঞানী, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম মতবাদ প্রকাশ করেন। কিন্তু পরমাণু সম্পর্কে নিশ্চিত প্রমাণ লাভের জন্য সর্বপ্রথম রাদারফোর্ড 1911 খ্রিস্টাব্দে একটি পরীক্ষা করেন। যাকে আলফা কণা বিচ্ছুরণ পরীক্ষা বলা হয়। আলফা-কণা হচ্ছে হিলিয়াম পরমাণু থেকে দুটি ইলেকট্রন অপসারিত হলে যে দ্বি-ধনাত্মক হিলিয়াম ( ⁴₂He²+) আয়নের সৃষ্টি হয় তাই আলফা কণা। অবশ্য তেজস্ক্রিয় মৌল থেকে আলফা কণা নির্গত হয়। রাদারফোর্ডের আলফা কণা বিচ্ছুরণ পরীক্ষাঃ  রাদারফোর্ড পরমাণুর গঠন সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য আলফা কণা বিচ্ছুরণ পরীক্ষাটি করেন। এই পরীক্ষার জন্য তিনি একটি পাতলা 0.0004 cm পুরু সোনার পাত নেন এবং এই সোনার পাতের পেছনে একটি জিংক সালফাইডের (ZnS) পর্দা রাখেন। জিংক সালফাইডের পর্দার উপর আলফা-কণা পড়লে সেখানে আলোর প্রতিপ্রভা সৃষ্টি হয়। রাদারফোর্ড সোনার পাতের উপর আলফা-কণা নিক্ষেপ করে তা পর্যবেক্ষণ করেন। তার পর্যবেক্ষণ সমূহ হচ্ছে- ১. অধিকাংশ আলফা কণা স্বর্ণের পাত ভেদ করে জিংক সালফাইডের পর্দাকে আলোকিত করে। ২. কিছু আলফা রশ্মি যারা কেন্দ্রের

ব্রাউনীয় গতি কি?

ব্রাউনীয় গতি কি? ব্রাউনীয় গতিঃ  কলয়েড কণার ইতস্তত ভ্রমণকে ব্রাউনীয় গতি বলা হয়। কলয়েড হচ্ছে বিশুদ্ধ দ্রবণ এবং অসম মিশ্রণের মধ্যবর্তী অবস্থান। কোন বস্তুর অতিক্ষুদ্র কণিকাসমূহ যখন কোন তরল পদার্থে মিশ্রিত অবস্থায় থাকে, তখন ঐ মিশ্রণকে কলয়েড দ্রবণ বলে। অথবা, দ্রবণে যদি দ্রব্যের কণাগুলির ব্যাস 2nm থেকে 500nm  এর মধ্যে হয় তখন এ দ্রবণকে কলয়েড দ্রবণ বলে। কলয়েড দ্রবণে দ্রব্যের কণাগুলি অধঃক্ষিপ্ত হয় না। কলয়েড দ্রবণের দুটি দশা থাকে। একটি হলো বিস্তৃত দশা, দ্রবণে যার পরিমাণ কম থাকে এবং অপরটি হচ্ছে বিস্তার মাধ্যম, দ্রবণে যার পরিমাণ বেশি থাকে। কলয়েড কণার আকার যত বড় হয়, তার গতি তত কম হয়। দুধ একটি কলয়েড। এটি পানিতে চর্বি কনার কলয়েড। এখানে পানি হল বিস্তার মাধ্যম এবং চর্বি হলো বিস্তৃত দশা। ব্রাউনীয় গতির ব্যাখ্যাঃ উইনার নামক একজন বিজ্ঞানী আণবিক গতিতত্ত্বের সাহায্যে সর্বপ্রথম ব্রাউনীয় গতির ব্যাখ্যা দেন। মনে করি, পানিতে একটা কলয়েড কণা আছে। ঐ কণা পানির বহুসংখ্যক অনু দ্বারা পরিবেষ্টিত। এ অনু সমূহ সর্বদা বিভিন্ন দিকে ধাবমান। কিছু সংখ্যক অনু যেকোনো সময় কলয়েড কণাকে

স্থূল সংকেত ও আণবিক সংকেত কি?

স্থূল সংকেত ও আণবিক সংকেত কি? স্থূল সংকেতঃ   কোন যৌগের অণুতে বিদ্যামান মৌলের পরমাণুর সংখ্যা, যে ক্ষুদ্রতম পূর্ণসংখ্যার অনুপাতে আছে, তার সংক্ষিপ্ত প্রকাশকে ঐ যৌগের স্থূল সংকেত বলে। স্থূল সংকেত দ্বারা যৌগের অণুতে বিদ্যামান মৌলের পরমাণুসমূহের অনুপাত সংখ্যা প্রকাশ করে। কিন্তু পরমাণুসমূহের প্রকৃত সংখ্যা প্রকাশ করে না। যেমনঃ বেনজিনের স্থূল সংকেত CH. পানির স্থূল সংকেত H₂O; মিথেনের স্থূল সংকেত CH₄ ; অ্যাসিটিলিনের স্হূূল সংকেত CH. স্থূল সংকেত নির্ণয়ের নিয়মঃ ১. কোন যৌগের স্থূল সংকেত নির্ণয়ের জন্য যৌগের উপাদান মৌলসমূহের শতকরা সংযুতি জানা প্রয়োজন।  ২. যৌগের উপাদান মৌল গুলির শতকরা পরিমাণ গুলিকে যোগ করে, ঐ যোগফল 100 বা এর কাছাকাছি কোন সংখ্যা হয় কিনা দেখতে হবে। যদি যোগফল 100 অপেক্ষা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কম দেখা যায় তখন বুঝতে হবে অন্য কোন মৌলের পরিমান সরাসরি উল্লেখ করা হয়নি। প্রশ্নে কোন মৌলের উল্লেখ না থাকলে অবশিষ্ট শতকরা পরিমাণ অক্সিজেন মৌলের হবে। ৩. যৌগের প্রতিটি উপাদান মৌলসমূহের শতকরা সংযুতিকে তাদের নিজ নিজ পারমাণবিক ভর দ্বারা ভাগ করতে হয়। যেমনঃ বেনজিনে কার্বন ও হাইড্রোজেনের শত

ভৌত ও রাসায়নিক পরিবর্তন।

ভৌত ও রাসায়নিক পরিবর্তন। ভৌত পরিবর্তনঃ   যে পরিবর্তনের ফলে পদার্থের শুধু বাহ্যিক অবস্থার পরিবর্তন হয়। কিন্তু পদার্থের গঠন অপরিবর্তিত থাকে। তাকে ভৌত পরিবর্তন বলে। ভৌত পরিবর্তনের ফলে কোন নতুন পদার্থের সৃষ্টি হয় না। ভৌত পরিবর্তনের  উদাহরণঃ ১. পানি স্বাভাবিক তাপমাত্রায় তরল অবস্থায় থাকে। কিন্তু পানির তাপমাত্রা পরিবর্তন করে 0º সেলসিয়াস এ নিয়ে আসলে পানি তরল থেকে কঠিনে পরিণত হয়। অর্থাৎ বরফ তৈরি করে। আবার, বরফের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করলে, বরফ গলে পানিতে পরিণত হয়। আবার পানির তাপমাত্রা 100º সেলসিয়াস পর্যন্ত বৃদ্ধি করলে পানি ফুটতে শুরু করে। অর্থাৎ পানি তরল অবস্থা থেকে গ্যাসীয় অবস্থায় বা জলীয় বাষ্পে রূপান্তর ঘটে। জলীয়বাষ্পকে ঠান্ডা করলে তা আবার পানিতে পরিণত হয়। বরফ, পানি ও জলীয় বাষ্প একই পদার্থের তিনটি ভিন্ন ভৌত অবস্থা। কিন্তু বরফ, পানি ও জলীয় বাষ্পে পানির রাসায়নিক গঠন অপরিবর্তিত থাকে।  অর্থাৎ এ তিন অবস্থাতেই  একটি  অক্সিজেন পরমাণু ; দুটি হাইড্রোজেন পরমাণুর সাথে সমযোজী বন্ধনে আবদ্ধ থাকে। সুতরাং পানি হতে বরফ বা জলীয় বাষ্প তৈরি হওয়া পদার্থের একটি ভৌত পরিবর্তন।  ২. মোমের দহ

রাসায়নিক সমীকরণ।

রাসায়নিক সমীকরণ। রাসায়নিক সমীকরণঃ   একটি রাসায়নিক বিক্রিয়ায় যা ঘটে, তা সংশ্লিষ্ট বস্তুসমূহের সংকেত ও অন্যান্য সংকেতের মাধ্যমে সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশের পদ্ধতিকে ঐ বিক্রিয়ার রাসায়নিক সমীকরণ বা সংক্ষেপে সমীকরণ বলা হয়।                  যেমনঃ জিংক(Zn) ও কপার সালফেট(CuSO₄)   বিক্রিয়া করে জিংক সালফেট(ZnSO₄) ও কপার (Cu) উৎপন্ন করে। এ বিক্রিয়ার সমীকরণ হচ্ছে- Zn + CuSO₄ --------> ZnSO₄ + Cu রাসায়নিক সমীকরণ লেখার নিয়মঃ ১. একটি রাসায়নিক বিক্রিয়ায় যা ঘটে তাই সমীকরণে দেখানো হয়। ২. সমীকরণ লেখার সময় বামদিকে বিক্রিয়কসমূহ এবং ডানদিকে উৎপাদসমুহ লিখতে হবে। সেই সাথে বিক্রিয়ক ও উৎপাদের নাম লিখতে হয়। ৩. বিক্রিয়ক ও উৎপাদ লেখার সময় তাদের আণবিক সংকেত ব্যবহার করা হয়। অবশ্য যদি কোন পরমাণু বা আয়ন সরাসরি বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে বা উৎপাদ উৎপন্ন করে তবে তাদের প্রতীক ব্যবহার করতে হয়।    Zn + H₂SO₄   -------> ZnSO₄ + H₂ ৪. রাসায়নিক বিক্রিয়ায় যদি একাধিক বিক্রিয়ক অংশগ্রহণ করে, তবে তাদের মধ্যে যোগ চিহ্ন ব্যবহার করতে হয়। একইভাবে যদি একাধিক উৎপাদ উৎপন্ন হয় তবে তাদের মধ্যে

ডাল্টনের পরমাণুবাদ(Daltons atomic theory).

ডাল্টনের পরমাণুবাদ(Daltons atomic theory). 1803 খ্রিস্টাব্দে ইংরেজ বিজ্ঞানী জন ডাল্টন পরমাণুর ধর্ম ও ভর এবং বিভিন্ন মৌলের পরমাণু সমূহের পরস্পরের মধ্যে সংযোগ দ্বারা যৌগ গঠনের অবস্থা সম্পর্কে একটি মতবাদ প্রকাশ করেন। যা ডালটনের পরমাণুবাদ নামে পরিচিত।   ডাল্টনের পরমাণুবাদের স্বীকার্য সমূহঃ ১. প্রতিটি পদার্থ পরমাণু নামক অসংখ্য ক্ষুদ্র কণা দ্বারা গঠিত। তিনি মৌলের ক্ষুদ্রতম কণার নাম দেন সরল পরমাণু এবং যৌগের ক্ষুদ্রতম কণার নাম দেন যৌগিক পরমাণু। ২. পরমাণুসমূহ অবিভাজ্য। এদের সৃষ্টি বা ধ্বংস করা যায় না।  ৩. একই পদার্থের সকল পরমাণুর ধর্ম ও ভর অভিন্ন। ৪. বিভিন্ন পদার্থের পরমাণুর ধর্ম ও ভর বিভিন্ন। ৫. পরমাণুসমূহ পূর্ণ সংখ্যার সরল অনুপাতে রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে যুক্ত হয়ে যৌগ গঠন করে। ৬. কেবল পরমাণুসমূহ রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে। ৭. রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে কোন পরমাণু সৃষ্টি বা ধ্বংস হয় না। শুধু তাদের মধ্যকার সংযোগের প্রকৃতির পরিবর্তন ঘটে। ৮. একই মৌলসমূহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের পরমাণুর সংখ্যার বিভিন্ন অনুপাতে যুক্ত হয়ে বিভিন্ন যৌগ গঠন করে।  যেমনঃ একটি সালফার পরমাণুর সাথে

প্রভাবক (Catalysts).

  প্রভাবক (Catalysts). প্রভাবকঃ   যেসব রাসায়নিক পদার্থ কোন বিক্রিয়ায় বিক্রিয়কের সংস্পর্শে থেকে রাসায়নিক বিক্রিয়ার গতি বৃদ্ধি বা হ্রাস করে, কিন্তু বিক্রিয়া শেষে ঐ রাসায়নিক পদার্থের ভর ও সংযুক্তি অপরিবর্তিত থাকে তাকে প্রভাবক বলে এবং এ প্রক্রিয়াকে প্রভাবন বলা হয়।                                           যেমনঃ স্পর্শ পদ্ধতিতে সালফিউরিক এসিড উৎপাদনের সময় সালফার ডাই অক্সাইড গ্যাস থেকে সালফার ট্রাই অক্সাইড গ্যাস উৎপাদন সময় প্লাটিনামের (Pt) উপস্থিতিতে বিক্রিয়ার গতি বৃদ্ধি পায় এবং বিক্রিয়া শেষে প্লাটিনাম অপরিবর্তিত থাকে।এজন্য প্লাটিনাম একটি প্রভাবক।   প্রভাবকের বৈশিষ্ট্যঃ ১. প্রভাবকের ক্রিয়া সুনিদিষ্ট। অর্থাৎ একটি নির্দিষ্ট  প্রভাবক কেবল একটি নির্দিষ্ট বিক্রিয়ার গতিকে বৃদ্ধি বা হ্রাস করতে পারে।  যেমনঃ হেবার প্রণালীতে অ্যামোনিয়া উৎপাদন কালে আয়রন প্রভাবক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ২. প্রভাবক শুধুমাত্র কোন বিক্রিয়ার গতি বৃদ্ধি বা হ্রাস করতে পারে। কিন্তু কোন রাসায়নিক বিক্রিয়া শুরু করতে পারে না। ৩. প্রভাবক কোন বিক্রিয়ার সাম্যবস্থা পরিবর্তন করতে পারে না। এক্

রাসায়নিক গতিবিদ্যা কি?

  রাসায়নিক গতিবিদ্যা কি? রাসায়নিক গতিবিদ্যাঃ  রসায়নের যে শাখায় বিক্রিয়ার বেগ সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করা হয় তাকে রাসায়নিক গতিবিদ্যা বলে। প্রতিটি বিক্রিয়ার কিছু না কিছু বেগ থাকে। কোন বিক্রিয়ার বেগ অত্যন্ত দ্রুতগতিসম্পন্ন, আবার কোন বিক্রিয়ার বেগ ধীরগতিসম্পন্ন হয়। যেমনঃ তীব্র এসিড ও তীব্র ক্ষারের বিক্রিয়ার বেগ অতি দ্রুত গতি সম্পন্ন হয়। আবার লোহার উপর মরিচা পড়া সাধারণ তাপমাত্রায় ধীরগতিসম্পন্ন বিক্রিয়া হয়। রাসায়নিক বিক্রিয়ার গতিবেগের উপর বিভিন্ন নিয়ামকের প্রভাবঃ  রাসায়নিক বিক্রিয়ার গতিবেগ কয়েকটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে। এরমধ্যে তাপমাত্রা, বিক্রিয়কের ঘনমাত্রা, প্রভাবক, চাপ উল্লেখযোগ্য। নিচে এগুলো সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হল। তাপমাত্রার প্রভাবঃ  তাপমাত্রা রাসায়নিক বিক্রিয়ার গতিবেগের উপর প্রভাব বিস্তার করে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি করলে রাসায়নিক বিক্রিয়ার গতিবেগ বৃদ্ধি পায়। অনেক ক্ষেত্রে সাধারণ বা নিম্ন তাপমাত্রায় বিক্রিয়ার গতি এত কমে যায় যে প্রকৃতপক্ষে কোন বিক্রিয়া সংঘটিত হয় না। অথচ তাপমাত্রা বাড়ালে বিক্রিয়া বেগ দ্রুতগতি সম্পন্ন হয়। প্রভাবকে

Popular posts from this blog

কপার(Cu) ও ক্রোমিয়ামের(Cr) ইলেকট্রন বিন্যাস ব্যতিক্রম কেন?

মুক্তজোড় ইলেকট্রন ও বন্ধন জোড় ইলেকট্রন কাকে বলে।

জারণ সংখ্যা নির্ণয়ের সহজ পদ্ধতি।

COD ও BOD কাকে বলে?

জারক ও বিজারক কাকে বলে? কিভাবে জারক ও বিজারক সহজেই চেনা যায়।

সালফার পরিবর্তনশীল যোজনী প্রদর্শন করে কেন?

প্রাইমারি স্ট্যান্ডার্ড ও সেকেন্ডারি স্ট্যান্ডার্ড পদার্থ কাকে বলে?

মোলার গ্যাস ধ্রুবক এবং এর মাত্রা, তাৎপর্য ও মান নির্ণয়।

প্রতীক ও সংকেতের মধ্যে পার্থক্য কি?

রাদারফোর্ড ও বোর পরমাণু মডেলের মধ্যে তুলনা।