Posts

অ্যামোনিয়ার শিল্পোৎপাদনে হেবার প্রণালী মূলনীতি সহ বর্ণনা কর।

Image
অ্যামোনিয়ার শিল্পোৎপাদনে হেবার প্রণালী মূলনীতি সহ বর্ণনা কর।  মূলনীতিঃ উচ্চ তাপমাত্রায় ও উচ্চচাপে 1 মোল নাইট্রোজেন(N₂) গ্যাস ও 3 মোল হাইড্রোজেন(H₂) গ্যাস বিক্রিয়া করে 2 মোল অ্যামোনিয়া(NH₃) গ্যাস উৎপন্ন হয়।  N₂(g) + 3H₂(g) <-----> 2NH₃ (g) + 92kj/mol বিক্রিয়াটি উভমুখী, তাপ উৎপাদী এবং আয়তন সংকোচনের মাধ্যমে ঘটে।  উৎপাদন প্রণালীর বর্ণনাঃ বিশুদ্ধ নাইট্রোজেন ও হাইড্রোজেনের ১ঃ৩ আয়তনে মিশ্রিত করে 550 ডিগ্রি সেলসিয়াস অত্যানুকুল তাপমাত্রা, 200 বায়ুমন্ডলীয় অত্যানুকুল চাপে, লৌহচূর্ণ (Fe) প্রভাবক ও মলিবডেনাম (Mo) সহায়ক প্রভাবক সম্বলিত প্রকোষ্ঠে চালনা করা হয়। এতে নাইট্রোজেন ও হাইড্রোজেন এর 15% - 20% যুক্ত হয়ে অ্যামোনিয়া গ্যাস উৎপন্ন করে। উৎপন্ন অ্যামোনিয়া ও অপরিবর্তিত নাইট্রোজেন ও হাইড্রোজেন মিশ্রণকে শীতল কুন্ডলীতে চালনা কর হয়। ফলে অ্যামোনিয়া গ্যাস তরলীভূত হয়ে তরল অ্যামোনিয়া পাত্রে জমা হয়। কিন্তু অবশিষ্ট অপরিবর্তিত নাইট্রোজেন ও হাইড্রোজেন গ্যাসকে পুনরায় পেষণ যন্ত্রে সরবরাহ করা হয় এবং নতুন গ্যাস মিশনসহ পুনরায়  অ্যামোনিয়া উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়।...

পরীক্ষাগারে অ্যামোনিয়া গ্যাস প্রস্তুতি।

Image
পরীক্ষাগারে অ্যামোনিয়া গ্যাস প্রস্তুতি।  মূলনীতিঃ পরীক্ষাগারে অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড ও চুন / ক্যালসিয়াম অক্সাইড/ কুইকলাইম (CaO) অথবা কলিচুন/ স্ল্যাকেড লাইম/ ক্যালসিয়াম হাইড্রোক্সাইডের {Ca(OH)₂} মিশ্রনকে উত্তপ্ত করলে অ্যামোনিয়া (NH₃) গ্যাস উৎপন্ন হয়।  বিক্রিয়াঃ 2NH₄Cl + CaO ----> 2NH₃ + CaCl₂ + H₂O 2NH₄Cl + Ca(OH)₂ ----> 2NH₃ + CaCl₂ + 2H₂O বর্ণনাঃ একটি টেস্টটিউবে অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড ও এর দ্বিগুণ পরিমাণ শুষ্ক কলিচুন বা চুন নেওয়া হয়। এরপর টেসটিউবের মুখে কর্কের সাহায্যে একটি নির্গম নল যুক্ত করে টেস্টটিউবটিকে স্ট্যান্ডের সাথে আটকানো হয়। এবার টেস্টটিউবটিকে ধীরেধীরে উত্তপ্ত করলে অ্যামোনিয়া গ্যাস উৎপন্ন হয়। অ্যামোনিয়া গ্যাস শ্বাসরোধী ও বায়ুর থেকে হালকা হওয়ায় পানির নিম্নমুখী অপসারন দ্বারা গ্যাসজারে সংগ্রহ করা হয়।

নাইট্রোজেন চক্রের বর্ণনা।

নাইট্রোজেন চক্রের বর্ণনা।  বায়ুমন্ডলের নাইট্রোজেন বায়ুমণ্ডল হতে মাটি ও উদ্ভিদে, উদ্ভিদ হতে প্রাণীদেহে আবার প্রাণী ও উদ্ভিদের মৃত্যুর পর পুনরায় বায়ুমন্ডলে ফিরে আসে। নাইট্রোজেন চলার এই চক্রাকার পথকে নাইট্রোজেন চক্র বলে।  এই প্রক্রিয়াটি নিম্নরূপে সংঘটিত হয়।  ১. বায়ু হতে মাটিতেঃ বজ্রপাতের সময় বিদ্যুৎক্ষরণের ফলে বায়ুর নাইট্রোজেন ও অক্সিজেন যুক্ত হয়ে NO₂ উৎপন্ন করে। NO₂ পানির সাথে বিক্রিয়া করে HNO₃ তৈরি করে এবং মাটিতে পতিত হয়। মাটিতে থাকা ধাতব আয়নের সাথে যুক্ত হয়ে নাইট্রেট লবণ গঠন করে।  ২. মাটি ও বায়ু হতে উদ্ভিদেঃ উদ্ভিদ মাটি হতে নাইট্রেট লবন আকারে নাইট্রোজেন গ্রহণ করে এবং উদ্ভিজ্জ প্রোটিনে রূপান্তরিত করে। কিছু লিগুমিনাস জাতীয় উদ্ভিদ যেমন- সিম, মটর, ছোলা ইত্যাদির শিকড়ে থাকা সিম্বায়টিক ব্যাকটেরিয়া দ্বারা বায়ু হতে সরাসরি নাইট্রোজেন গ্রহণ করে উদ্ভিজ্জ প্রোটিন উৎপন্ন করে।  ৩. উদ্ভিদ থেকে প্রাণী দেহেঃ প্রাণী খাদ্য হিসাবে সরাসরি উদ্ভিজ্জ প্রোটিন গ্রহণ করে। এছাড়া তৃণভোজী প্রাণী খাদ্যরূপে উদ্ভিদ গ্রহণ করে। আবার মাংসভোজী প্রাণী তৃণভোজী প্রাণীর মা...

উদ্ভিদ কিভাবে নাইট্রোজেন গ্রহণ করে।

উদ্ভিদ কিভাবে নাইট্রোজেন গ্রহণ করে।  নাইট্রোজেন উদ্ভিদের মুখ্য পুষ্টি উপাদান গুলির মধ্যে একটি।  উদ্ভিদের বৃদ্ধির জন্য আমরা নাইট্রোজেনের উৎস হিসাবে মাটিতে ইউরিয়া সার প্রয়োগ করি। ইউরিয়া সারে 46% নাইট্রোজেন থাকে। ইউরিয়া সার মাটিতে নাইট্রেট লবণ গঠন করে। প্রথমে ইউরিয়া মাটির পানির সাথে বিক্রিয়া করে অ্যামোনিয়া গঠন করে। পরে মাটিতে থাকা নাইট্রিফাইং ব্যাকটেরিয়া জারিত হয়ে HNO₃ এ পরিনত হয়।  NH₂-CO-NH₂ + H₂O ----> 2NH₃ + CO₂ NH₃ -----> HNO₃   এছাড়াও বায়ুমন্ডলের নাইট্রোজেন বিদ্যুৎক্ষরণ ও বৃষ্টির পানির মাধ্যমে নাইট্রিক অ্যাসিডরূপে (HNO₃) ভূপৃষ্ঠে পতিত হয়। উৎপন্ন নাইট্রিক অ্যাসিড মাটির ক্ষারীয় পদার্থ চুন বা চুনাপাথরের সাথে বিক্রিয়া করে পানিতে দ্রবণীয় নাইট্রেট লবন উৎপন্ন করে মাটিতে মিশে যায়। এসব নাইট্রেট লবন উদ্ভিদ শিকড়ের মাধ্যমে খনিজ লবণ হিসেবে পানির সাথে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে। এই নাইট্রোজেন উদ্ভিদ অ্যামাইনো এসিডে রূপান্তর করে। N₂ + O₂ -----> 2NO 2NO + O₂ ---> 2NO₂ 4NO₂ + 2H₂O + O₂ ----> 4HNO₃ CaO + 2HNO₃ ----> Ca(NO₃)₂ + H₂O MgO ...

নাইট্রোজেন চক্র কী?

নাইট্রোজেন চক্র কী?  বায়ুর নাইট্রোজেন উদ্ভিদ ও প্রাণী দেহের ভেতর দিয়ে আবার বায়ুতে ফিরে আসে। নাইট্রোজেন চলার এই পথকে নাইট্রোজেন চক্র বলে।  নাইট্রোজেন উদ্ভিদের মুখ্য পুষ্টি উপাদান। নাইট্রোজেন অ্যামাইনো এসিডের পলিমার হিসাবে প্রাণী দেহে প্রোটিন তৈরি করে। প্রাণীসমূহ তাদের প্রয়োজনীয় নাইট্রোজেন উদ্ভিদ থেকে গ্রহণ করে। উদ্ভিদ মাটি থেকে নাইট্রেট লবন হিসেবে নাইট্রোজেন গ্রহণ করে।  নাইট্রোজেনের প্রধান উৎস বায়ুমণ্ডল। বিদ্যুৎক্ষরণের ফলে বায়ুমন্ডলের নাইট্রোজেন ও অক্সিজেন যুক্ত হয়ে NO₂ সৃষ্টি হয়। যা পানির সাথে বিক্রিয়া করে নাইট্রিক অ্যাসিড তৈরি করে। এই নাইট্রিক অ্যাসিড বৃষ্টির সঙ্গে মাটিতে পতিত হয় এবং নাইট্রেট লবণ গঠন করে। এরূপে নাইট্রোজেন বায়ু হতে মাটিতে, মাটি থেকে উদ্ভিদে, উদ্ভিদ থেকে জীবদেহে প্রবেশ করে। উদ্ভিদ ও প্রাণীর মরনের পর পুনরায় নাইট্রোজেন মাটিতে ফিরে আসে। আবার মাটি হতে বায়ুমণ্ডলে চলে যায়। এই প্রাকৃতিক চক্রাকার পদ্ধতি সর্বদায় চলে। বায়ুমণ্ডল ও বায়ুর মধ্যকার নাইট্রোজেনের এ ধরনের চক্রাকারে আবর্তনকে নাইট্রোজেন চক্র বলে।

বার্কল্যান্ড আইডের পদ্ধতিতে নাইট্রিক এসিড উৎপাদন।

বার্কল্যান্ড আইডের পদ্ধতিতে নাইট্রিক এসিড উৎপাদন। বার্কল্যান্ড আইডের পদ্ধতিতে 3000 ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় বায়ুমন্ডলের নাইট্রোজেন ও অক্সিজেনকে উত্তপ্ত করলে NO উৎপন্ন হয়। যা পরে 50 ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় জারিত হয়ে NO₂ উৎপন্ন হয়। এই NO₂ পানির সাথে বিক্রিয়া করে নাইট্রিক এসিড ( HNO₃)  উৎপন্ন করে। N₂ + O₂ -----> 2NO 2NO + O₂ ---> 2NO₂ 4NO₂ + 2H₂O + O₂ ----> 4HNO₃

কৃত্রিম ভাবে নাইট্রোজেন ফিক্সেশন বা আবদ্ধকরণ কী?

কৃত্রিম ভাবে নাইট্রোজেন ফিক্সেশন বা আবদ্ধকরণ কী?  কৃত্রিমভাবে বায়ুমণ্ডলের নাইট্রোজেনকে আবদ্ধ করে রাখার পদ্ধতিকে কৃত্রিম নাইট্রোজেন ফিক্সেশন বলে।  কৃত্রিম ভাবে নাইট্রোজেন ফিক্সেশন  কয়টি পদ্ধতিতে করা হয়।  ১. হেবার পদ্ধতিতে অ্যামোনিয়ারুপে নাইট্রোজেন ফিক্সেশনঃ  হেবার পদ্ধতিতে প্রায় 200 বায়ুমন্ডলীয় চাপে ও 550 ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় Fe চূর্ণ প্রভাবকের সহায়তায় বায়ুমণ্ডলীয় নাইট্রোজেনকে হাইড্রোজেন এর সাথে বিক্রিয়ার মাধ্যমে অ্যামোনিয়া রূপে ফিক্সেশন করা হয়। এখানে মলিবডেনাম(Mo) প্রভাবক সহায়ক হিসেবে কাজ করে। N₂ + 3H₂ -----> 2NH₃ ২. ক্যালসিয়াম সায়ানামাইডরূপে ফিক্সেশনঃ  বায়ুমণ্ডলের নাইট্রোজেনকে প্রায় 1000 ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় উত্তপ্ত ক্যালসিয়াম কার্বাইড (CaC₂) এর উপর দিয়ে চালনা করলে ক্যালসিয়াম সায়ানামাইড (CaNCN) ও কার্বন গুড়ার মিশ্রণ উত্তর উৎপন্ন হয়।  CaC₂ + N₂ ------> CaNCN + C ৩. নাইট্রিক এসিডেরুপে ফিক্সেশনঃ বার্কল্যান্ড আইডের পদ্ধতিতে 3000 ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় বায়ুমন্ডলের নাইট্রোজেন ও অক্সিজে...

Popular posts from this blog

কপার(Cu) ও ক্রোমিয়ামের(Cr) ইলেকট্রন বিন্যাস ব্যতিক্রম কেন?

মুক্তজোড় ইলেকট্রন ও বন্ধন জোড় ইলেকট্রন কাকে বলে।

জারণ সংখ্যা নির্ণয়ের সহজ পদ্ধতি।

COD ও BOD কাকে বলে?

জারক ও বিজারক কাকে বলে? কিভাবে জারক ও বিজারক সহজেই চেনা যায়।

সালফার পরিবর্তনশীল যোজনী প্রদর্শন করে কেন?

মোলার গ্যাস ধ্রুবক এবং এর মাত্রা, তাৎপর্য ও মান নির্ণয়।

প্রাইমারি স্ট্যান্ডার্ড ও সেকেন্ডারি স্ট্যান্ডার্ড পদার্থ কাকে বলে?

রাদারফোর্ড ও বোর পরমাণু মডেলের মধ্যে তুলনা।

প্রতীক ও সংকেতের মধ্যে পার্থক্য কি?