Posts

নিষ্ক্রিয় গ্যাসের ব্যবহার।

নিষ্ক্রিয় গ্যাসের ব্যবহার। পর্যায় সারণির 18 নম্বর গ্রুপে অবস্থিত হিলিয়াম, নিয়ন, আর্গন, ক্রিপটন, জেনন ও রেডন কে নিষ্ক্রিয় গ্যাস বা Noble gas বলে।  কারণ, একমাত্র হিলিয়াম ব্যতীত অন্যান্য নিষ্ক্রিয় গ্যাসের বহিঃস্থ শক্তিস্তরে ইলেকট্রন অষ্টক পূর্ণ অবস্থায় থাকে। এছাড়াও কক্ষ তাপমাত্রায় এরা গ্যাসীয় এবং রাসায়নিকভাবে অত্যন্ত নিষ্ক্রিয়। নিষ্ক্রিয় গ্যাসসমূহের বহিঃস্থ শক্তিস্তরে অষ্টক পরিবর্তনে অনেক শক্তির প্রয়োজন হয় বলে এরা সহজে যৌগ গঠন করে না। হিলিয়াম গ্যাসের ব্যবহার:- ১. হিলিয়াম গ্যাস হালকা ও অদাহ্য হওয়ায় বেলুন ও উড়োজাহাজের টায়ার স্ফীত  করার কাজে ব্যবহার করা হয়। ২. ডুবুরিরা শ্বাসকার্যে ব্যবহারের জন্য 20% অক্সিজেন ও 80% হিলিয়াম গ্যাসের মিশ্রণ ব্যবহার করেন। ৩. হিলিয়াম ও অক্সিজেন গ্যাসের মিশ্রণ হাঁপানি রোগের চিকিৎসা ব্যবহার করা হয়। ৪. নিষ্ক্রিয় পরিবেশ সৃষ্টি করতে হিলিয়াম গ্যাস ব্যবহার করা হয়। ৫. কম তাপমাত্রায় গবেষণার জন্য গবেষণাগারে হিলিয়াম গ্যাস ব্যবহার করা হয়। ৬. প্রতিপ্রভ নলে নিয়ন গ্যাসের সাথে হিলিয়াম গ্যাস ব্যবহার করা হয়। ৭. নিম্ন...

পরমাণুর মূল কণিকা এবং তাদের বৈশিষ্ট্য কি।

পরমাণুর মূল কণিকা এবং তাদের বৈশিষ্ট্য কি। সকল পদার্থ অতি ক্ষুদ্র কণা দ্বারা গঠিত। এই ধারণা অনেক পূর্বের। পদার্থের এই ক্ষুদ্র কনা সমূহকে ডেমোক্রিটাস প্রথম atom নামকরণ করেন। atom শব্দের অর্থ যা বিভাজ্য নয়। কিন্তু অ্যারিস্টেটোল বলেন পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণা সমূহ বিভাজ্য। এরপরে ডালটন মৌলিক পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণাকে সরল পরমাণু এবং যৌগিক পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণাকে যৌগিক পরমাণু নামকরণ করেন। পরবর্তীতে অ্যাভোগেড্রো মৌলিক পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণাকে পরমাণু এবং যৌগিক পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণাকে অনু নামকরণ করেন। পরমাণুঃ মৌলিক পদার্থের ক্ষুদ্রতম অংশ যার স্বাধীন কোন অস্তিত্ব নেই, কিন্তু ক্ষুদ্রতম একক হিসেবে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারে তাকে পরমাণু বলে। পরমাণুকে ভেঙ্গে যেসব কনা আবিষ্কৃত হয়েছে তাদেরকে পরমাণুর মূল কণিকা বলে।  পরমাণুর মূল কণিকাকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়।  ১. স্থায়ী মূল কণিকা, ২. অস্থায়ী মূল কণিকা,  ৩. কম্পোজিট কণিকা। স্থায়ী মূল কণিকাঃ যেসব মূল কণিকা পরমাণুতে স্থায়ী ভাবে উপস্থিত থাকে তাদেরকে স্থায়ী মূল কণিকা বলে। স্থায়ী মূল কণিকা হচ্ছ...

চার্লসের সূত্র।

চার্লসের সূত্র। ফরাসি বিজ্ঞানী চার্লস 1787 খ্রিস্টাব্দে এবং গে- লুসাক 1802 খ্রিস্টাব্দে স্বতন্ত্রভাবে গ্যাসের আয়তনের সাথে তাপমাত্রার সম্পর্ক আবিষ্কার করেন। একে চার্লসের সূত্র বা গে-লুসাকের সূত্র বলে। চার্লসের সূত্রটি নিম্নরূপঃ স্থির চাপে নির্দিষ্ট ভরের কোন গ্যাসের আয়তন গ্যাসটির পরম তাপমাত্রা সমানুপাতিক।   স্থির চাপে গ্যাসের আয়তন V এবং তাপমাত্রা T হলে গাণিতিক ভাবে লেখা যায়- V α T V = KT (এখানে K  সমানুপাতিক ধ্রুবক)।    V / T = K গ্যাসের তাপমাত্রা T পরিবর্তন করে T₁ ; T₂ ; T₃----- ইত্যাদি হলে, গ্যাসের আয়তন V থেকে V₁ ;  V₂ ; V₃---- ইত্যাদিতে পরিবর্তিত হবে।  সুতরাং লেখা যায়,  V₁ / T₁ = V₂ / T₂ = V₃ / T₃ = ------ = K এটি চার্লসের সূত্র‌‌। 

মোলার গ্যাস ধ্রুবক এবং এর মাত্রা, তাৎপর্য ও মান নির্ণয়।

মোলার গ্যাস ধ্রুবক এবং এর মাত্রা, তাৎপর্য ও মান নির্ণয়। মোলার গ্যাস ধ্রুবকঃ   আদর্শ গ্যাস সমীকরণ মতে নির্দিষ্ট তাপমাত্রা ও চাপে 1 মোল পরিমাণ সকল  গ্যাসের আয়তন ধ্রুব। এ ধ্রুবকে মোলার গ্যাস ধ্রুবক বলে। একে R দ্বারা সূচিত করা হয়। এ কে সর্বজনীন গ্যাস ধ্রুবকও বলে। মোলার গ্যাস ধ্রুবক এর মাত্রা নির্ণয়ঃ  আদর্শ গ্যাস সমীকরণ হতে পাই -   PV = nRT   R = (PV) ÷ (nT) এখানে,  P = চাপ,  V = আয়তন, n = মোল সংখ্যা,  R = মোলার গ্যাস ধ্রুবক,  T = তাপমাত্রা।  একক ক্ষেত্রফলে প্রযুক্ত বলকে চাপ বলে। অর্থাৎ  চাপ P =  (বল ÷ ক্ষেত্রফল)      P = বল ÷(দৈর্ঘ্য)²    আয়তন V = (দৈর্ঘ্য)³ অতএব R =[ (বল ÷ ক্ষেত্রফল) x আয়তন] ÷ [মোল সংখ্যা x তাপমাত্রা]   R = [বল x (দৈর্ঘ্য)³]÷ [ (দৈর্ঘ্য)² x মোল সংখ্যা x তাপমাত্রা]  R = (বল x দৈর্ঘ্য) ÷ (মোল সংখ্যা x কেলভিন)   R = কাজ x মোল সংখ্যা-¹ x কেলভিন-¹  (যেহেতু বল x দৈর্ঘ্য = কাজ) এটিই হচ্ছে R এর মাত্রা। তাৎপর্যঃ   R = কাজ x মোল সংখ্যা-¹ x কেলভিন-¹ ...

পরম তাপমাত্রা স্কেল কি?

পরম তাপমাত্রা স্কেল কি?   পরম তাপমাত্রা স্কেলঃ    -273º C তাপমাত্রাকে শূন্য কেলভিন (0 K) ধরে তাপমাত্রা পরিমাপের জন্য একটি নতুন স্কেল তৈরি করা হয়। একে পরম তাপমাত্রা স্কেল বলে। চার্লসের সূত্র অনুযায়ী -273º C তাপমাত্রায় সকল গ্যাসের আয়তন তত্ত্বীয়ভাবে শূন্য হয়ে যায়।  ব্রিটিশ বিজ্ঞানী লর্ড কেলভিন -273º C তাপমাত্রাকে 0 (শূন্য) কেলভিন ধরে তাপমাত্রা পরিমাপের নতুন এই স্কেল তৈরি করেন। তাঁর নাম অনুসারে একে কেলভিন স্কেল বলা হয়। কেলভিন স্কেলের প্রতি ডিগ্রী সেলসিয়াস স্কেলের প্রতি ডিগ্রীর সমান ধরা হয়। কেলভিন স্কেলকে পরম তাপমাত্রা স্কেল বা Absolute Scale বলা হয়। একে T K দ্বারা সূচিত করা হয়। পরম তাপমাত্রা স্কেলের সাথে সেলসিয়াস স্কেলের সম্পর্কঃ পরম শূন্য তাপমাত্রা হতে পাই -     -237º C = 0 K  বা, ( -237 + 1)º C = ( 0 +1) K  বা - 272ºC = 1K  [যেহেতু কেলভিন স্কেলের প্রতি ডিগ্রী সেলসিয়াস স্কেলের প্রতি ডিগ্রীর সমান।] অনুরুপভাবে,   (-273 + 273)º C = (0 + 273)K  বা, 0º C = 273 K  বা, (0 + t)º C = (273 + t) K  ব...

পরমশূন্য তাপমাত্রা কি?

পরমশূন্য তাপমাত্রা কি? পরমশূন্য তাপমাত্রাঃ চার্লসের সূত্র অনুযায়ী যে তাপমাত্রায় সকল গ্যাসের আয়তন শূন্য হয়ে যায় সেই তাপমাত্রাকে পরমশূন্য তাপমাত্রা বলে। এর মান - 273º C বা 0 K.  অর্থাৎ -273º C তাপমাত্রায় সকল গ্যাসের আয়তন শূন্য হয়ে যায়।  কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় গ্যাস সমূহ এ তাপমাত্রায় পৌঁছার অনেক পূর্বেই তাদের আয়তন শূন্য হয়ে যায়। অর্থাৎ সেটি আর গ্যাস থাকে না তরল বা কঠিন পদার্থে পরিণত হয়ে যায়। চার্লসের সমীকরণ হতে দেখানো যায় - Vt = V₀ ( 1 + t / 273) এখানে t = -273º C  হলে V = V₀ (1 - 273 / 273) = 0 অর্থাৎ -273º C তাপমাত্রায় গ্যাসের আয়তন শূন্য হয়ে যায়।

স্ফুটনাঙ্কের উপর চাপের প্রভাব।

স্ফুটনাঙ্কের উপর চাপের প্রভাব। স্ফুটনাঙ্কঃ  যে তাপমাত্রায় কোন তরলের বাষ্প চাপ স্বাভাবিক বায়ুচাপের সমান হলে তখন ঐ তরল পদার্থটি ফুটতে থাকে এবং ঐ তাপমাত্রাকে ঐ তরল পদার্থের স্ফুটনাংক বলে। তরল পদার্থের উপর বাহ্যিক চাপ কৃত্রিম উপায়ে পরিবর্তন করলে ঐ তরল পদার্থের স্ফুটনাঙ্ক পরিবর্তিত হয়। যেমনঃ প্রেসার কুকারে কৃত্রিম উপায়ে তরলের উপরস্থ চাপ বৃদ্ধি করা হয়। যার কারণে প্রেসার কুকারে তরলের স্ফুটনাংক বৃদ্ধি পায় এবং খাবার তাড়াতাড়ি সিদ্ধ হয়। আবার, পাহাড়ের উপরে রান্না করতে দেরি হয়। কারণ, পাহাড়ের উপর বায়ুর চাপ কম থাকায় সেখানে কম তাপমাত্রায় পানি ফুটতে শুরু করে। ফলে রান্নার সময় খাদ্যদ্রব্য দেরিতে সিদ্ধ হয়। অর্থাৎ বলা যায়, পদার্থের উপরস্থ বায়ুর চাপ কৃত্রিম উপায়ে পরিবর্তন করা হলে, পদার্থের স্ফুটনাঙ্ক ও পরিবর্তিত হয়।

Popular posts from this blog

কপার(Cu) ও ক্রোমিয়ামের(Cr) ইলেকট্রন বিন্যাস ব্যতিক্রম কেন?

মুক্তজোড় ইলেকট্রন ও বন্ধন জোড় ইলেকট্রন কাকে বলে।

জারণ সংখ্যা নির্ণয়ের সহজ পদ্ধতি।

COD ও BOD কাকে বলে?

জারক ও বিজারক কাকে বলে? কিভাবে জারক ও বিজারক সহজেই চেনা যায়।

সালফার পরিবর্তনশীল যোজনী প্রদর্শন করে কেন?

মোলার গ্যাস ধ্রুবক এবং এর মাত্রা, তাৎপর্য ও মান নির্ণয়।

প্রাইমারি স্ট্যান্ডার্ড ও সেকেন্ডারি স্ট্যান্ডার্ড পদার্থ কাকে বলে?

রাদারফোর্ড ও বোর পরমাণু মডেলের মধ্যে তুলনা।

প্রতীক ও সংকেতের মধ্যে পার্থক্য কি?