Posts

হাইজেনবার্গের অনিশ্চয়তা নীতি (Heisenberg Uncertainty Principle)

    হাইজেনবার্গের অনিশ্চয়তা নীতি (Heisenberg Uncertainty Principle):    জার্মান পদার্থবিজ্ঞানী ভেরনার হাইজেনবার্গ ১৯২৭ সালে প্রস্তাব করেন যে, কোনো কণার নির্দিষ্ট অবস্থান (position) এবং গতিশক্তি বা ভরবেগ (momentum) একই সাথে সম্পূর্ণ নির্ভুলভাবে নির্ণয় করা সম্ভব নয়। অর্থাৎ, যত বেশি নির্ভুলভাবে কণার অবস্থান নির্ণয় করা যাবে, ভরবেগ নির্ণয় তত বেশি অনিশ্চিত হবে।  হাইজেনবার্গের অনিশ্চয়তা নীতির গাণিতিক রূপ হলো: Δx . ΔP >_ h / 4π এখান,  Δx =কণার অবস্থানের অনিশ্চয়তা Δp = কণার ভরবেগের অনিশ্চয়তা h = প্ল্যাঙ্ক ধ্রুবক (Planck's constant), এর মান প্রায় 6.626 x10^ -34  Js অনিশ্চয়তা নীতির ব্যাখ্যা: যদি কোনো কণার অবস্থান খুব নির্ভুলভাবে মাপা হয় , তবে তার ভরবেগ সম্পর্কে অনিশ্চয়তা বেড়ে যায় । আবার, যদি ভরবেগ খুব নির্ভুলভাবে জানা যায়, তবে অবস্থান সম্পর্কে অনিশ্চয়তা বেড়ে যায়। এটি আমাদের বলে যে প্রকৃতিতে নিজস্ব একটি অন্তর্নিহিত অনির্ধারকতা (indeterminacy) বিদ্যমান। এটি কোনো পরিমাপের সীমাবদ্ধতার কারণে নয়, বরং প্রকৃতির মৌলিক বৈশিষ্...

দ্রাব্যতার গুণফল কি?

দ্রাব্যতার গুণফল ( Solubility Product) মৃদু বা দুর্বল তড়িৎ বিশ্লেষ্য লবণের দ্রবনে উৎপন্ন আয়নগুলি সাম্যবস্থায় তাদের ঘনমাত্রার ঘাতের গুনফলকে দ্রাব্যতার গুনফল বলে।  দ্রাব্যতার গুণফল (Solubility Product) বা Ksp একটি আংশিক বিয়োজন বিক্রিয়ার জন্য একটি সাম্যাবস্থা ধ্রুবক। উদাহরণসহ ব্যাখ্যা: উদাহরণ ১:  ১:১ লবণ AgCl এর দ্রাব্যতার গুনফল AgCl(s)  -------->  Ag+  (aq) + Cl-  (aq) এখানে, Ksp হবে: Ksp = [Ag+] [Cl- ] এখানে,  AgCl এর দ্রাব্যতা S (mol/ L) হলে,  [Ag+] = [Cl-] = S হবে।  Ksp = (S) x (S) = S² উদাহরণ ২: ১:২ লবণ CaF₂ এর দ্রাব্যতার গুনফল CaF₂ (s)  ---------> Ca ²+ (aq) + 2F - (aq) এখানে, Ksp হবে: Ksp = [Ca²+ ] [F-  ] ² এখানে,  CaF₂ এর দ্রাব্যতা S (mol/ L) হলে,  [Ca²+ ] = S , [F- ] = 2S হবে।  Ksp = (S) x (2S) ² = 4S³ উদাহরণ ৩: ১:৩ লবণ Al(OH)₃ এর দ্রাব্যতার গুনফল Al(OH)₃  (s)  ---------> Al³+ (aq) + 3 OH - (aq) এখানে, Ksp হবে: Ksp = [Al³+ ] [OH- ] ³ এখানে,  Al(OH)₃  এর দ্রাব্যতা S (mol/...

চুম্বীয় কোয়ান্টাম সংখ্যা কি?

  চুম্বীয় কোয়ান্টাম সংখ্যা (Magnetic Quantum Number) ইলেকট্রনের ঘুর্ণনের দিক বা ওরিয়েন্টেশন ব্যাখ্যা করার জন্য  যে কোয়ান্টাম সংখ্যা ব্যবহার করা হয় তাকে চুম্বীয় কোয়ান্টাম সংখ্যা বলে। চুম্বীয় কোয়ান্টাম সংখ্যা নির্দিষ্ট উপ-শক্তিস্তরে (sub-shell) একটি ইলেকট্রন কতগুলো ভিন্ন ভিন্ন কক্ষপথে (orbital) থাকতে পারে এবং সে কক্ষপথগুলোর কোন দিকে সেটি ব্যাখ্যা করতে পারে। এটি মূলত ইলেকট্রনের কক্ষপথের অভিমুখ বা দিকনির্দেশ (orientation) নির্দেশ করে। চুম্বীয় কোয়ান্টাম সংখ্যাকে m দ্বারা চিহ্নিত করা হয়।  চুম্বীয় কোয়ান্টাম সংখ্যার মান: m এর মান 0 থেকে  ± l পর্যন্ত হতে পারে। n = 1, এর জন্য   l = 0 হলে, m = 0 হবে। অর্থাৎ  প্রথম শক্তিস্তরে একটি 1s অরবিটাল বা কক্ষপথ থাকবে। n = 2, এর জন্য  l = 0,1 তখন, l = 0 হলে m = 0 হবে। তখন একটি  s অরবিটাল  এবং  l = 1 হলে m = -1, 0, +1 তিনটি p অরবিটাল সম্ভব। অর্থাৎ  দ্বিতীয় শক্তিস্তরে মোট চারটি অরবিটাল বা কক্ষপথ থাকবে। n = 3, এর জন্য  l = 0,1,2 তখন, l = 0 হলে m = 0 হবে। তখন একটি  s অরবিটাল...

প্রধান কোয়ান্টাম সংখ্যা কি?

  প্রধান কোয়ান্টাম সংখ্যা (Principal Quantum Number) ইলেকট্রন নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে যে প্রধান শক্তিস্তর বা কক্ষপথে আবর্তন করে তাকে প্রধান কোয়ান্টাম সংখ্যা বলে।একে n দ্বারা চিহ্নিত করা হয়।  এটি একটি মৌলিক কোয়ান্টাম সংখ্যা যা কোনো ইলেকট্রনের শক্তিস্তরের বা shell-এর অবস্থান নির্দেশ করে। n = 1, 2, 3, 4, ... এরকম পূর্ণ সংখ্যা হতে পারে। প্রধান কোয়ান্টাম সংখ্যা দ্বারা পরমাণুর আকারের ধারণা পাওয়া যায়।  প্রত্যেকটি n এর মান একটি নির্দিষ্ট shell নির্দেশ করে।shell গুলিকে K, L, M, N প্রতীক দ্বারাও নির্দেশ করা হয়।  যেমন:  n=1 হলে K-shell, n=2 হলে L-shell,  n=3 হলে M-shell,  n= 4 হলে N- shell ইত্যাদি। শক্তিস্তর বা shell-এর ইলেকট্রন ধারণক্ষমতা নির্ণয়: প্রতিটি শক্তিস্তর বা shell-এ সর্বোচ্চ ইলেকট্রনের সংখ্যা 2n² সূত্র দ্বারা  নির্ধারণ করা যায়: উদাহরণ: n = 1 হলে, সর্বোচ্চ ইলেকট্রন = 2(1)² = 2 n = 2 হলে, সর্বোচ্চ ইলেকট্রন = 2(2)² = 8 n = 3 হলে, সর্বোচ্চ ইলেকট্রন = 2(3)² = 18 n = 4 হলে, সর্বোচ্চ ইলেকট্রন = 2(4)² = 32 ইলেকট্রনের শক্তিস্তর বা s...

সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যা কি?

  সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যা (Azimuthal Quantum Number):   ইলেকট্রন একটি প্রধান শক্তিস্তরের কোন উপশক্তিস্তরে অবস্থান করে তা ব্যাখ্যা করার জন্য যে কোয়ান্টাম সংখ্যার ধারণা দেওয়া হয় তাকে সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যা বলে।  এটি অরবিটালের আকৃতি (shape) নির্ধারণ করে। একে l দ্বারা প্রকাশ করা হয়। l - এর মান: 0 থেকে (n – 1) পর্যন্ত হতে পারে। প্রতিটি l -এর জন্য একটি নির্দিষ্ট অরবিটাল টাইপ থাকে। যেমন:  l = 0 হলে s উপশক্তিস্তর বা অরবিটাল (গোলাকার) l = 1 হলে p উপশক্তিস্তর বা অরবিটাল (ডাম্বেল আকৃতি) l = 2 হলে d - উপশক্তিস্তর বা অরবিটাল l = 3 হলে f - উপশক্তিস্তর বা অরবিটাল। উদাহরণ: যদি n = 1 হলে l = 0  হতে পারে। অর্থাৎ প্রথম শক্তিস্তরে  1s - উপশক্তিস্তর বা অরবিটাল থাকবে। যদি n = 2 হলে l = 0, 1 হতে পারে। অর্থাৎ দ্বিতীয় শক্তিস্তরে  2s, 2p - উপশক্তিস্তর বা অরবিটাল থাকবে। যদি n = 3, তাহলে l = 0, 1, 2 হতে পারে। অর্থাৎ তৃতীয় শক্তিস্তরে 3s, 3p, 3d - উপশক্তিস্তর বা অরবিটাল থাকবে।

স্পিন কোয়ান্টাম সংখ্যা কি?

  স্পিন কোয়ান্টাম সংখ্যা (Spin Quantum Number): স্পিন কোয়ান্টাম সংখ্যা দ্বারা কোন অরবিটালে ইলেকট্রনের নিজস্ব ঘূর্ণন (spin) নির্দেশ করে। একে s বা mₛ দিয়ে প্রকাশ করা যায়। এর মান: +½ অথবা –½ প্রতিটি অরবিটালে সর্বোচ্চ দুটি ইলেকট্রন থাকতে পারে এবং তাদের স্পিন বিপরীতমুখী হয়। অর্থাৎ কোন অরবিটালে দুটি ইলেকট্রনের মধ্যে একটি ঘড়ির কাঁটার দিকে প্রদক্ষিণ করলে, অপরটি ঘড়ির কাঁটার উল্টোদিকে প্রদক্ষিন করে। আমরা কোন অরবিটালে ইলেকট্রনের স্পিন কিভাবে হিসাব করব:  এক্ষেত্রে কোন অরবিটালে যে ইলেকট্রনটি প্রথমে প্রবেশ করে সেই ইলেকট্রনের স্পিন, S = +½  এবং যে ইলেকট্রনটি পারে প্রবেশ করে অর্থাৎ দ্বিতীয় ইলেকট্রনের স্পিন, S = –½ ধরা হয়। যেমন :  He এর ইলেকট্রন বিন্যাস 1s² এখানে He - এর  প্রথম ইলেকট্রন e₁ এর জন্য স্পিন কোয়ান্টাম সংখ্যার মান  S = +½ এবং  দ্বিতীয় ইলেকট্রন e₂ এর জন্য স্পিন কোয়ান্টাম সংখ্যার মান  S = –½ ধরা হয়।

বেনজিন থেকে ফেনল প্রস্তুতি।

  ডাউ পদ্ধতিতে বেনজিন থেকে ফেনল প্রস্তুতির জন্য সাধারণত তিনটি ধাপ অনুসরণ করা হয়।   ধাপ ১: বেনজিন থেকে ক্লোরোবেনজিন প্রস্তুতি :  বেনজিন (C₆H₆) এর সাথে ক্লোরিন (Cl₂) ফেরিক ক্লোরাইড  বা আলুমিনিয়াম ক্লোরাইড (FeCl₃ বা AlCl₃) উপস্থিতিতি বিক্রিয়া করে ক্লোরোবেনজিন ( C₆H₅Cl) তৈরি করে।  C₆H₆ + Cl₂ ------> C₆H₅Cl + HCl ধাপ ২: ক্লোরোবেনজিন থেকে সোডিয়াম ফিনক্সাইড প্রস্তুতি :  ক্লোরোবেনজিন (C₆H₅Cl) এর সাথে 300°C তাপমাত্রায়, 200 atm চাপে NaOH বিক্রিয়া করে সোডিয়াম ফিনক্সাইড (C₆H₅ONa) গঠন করে।  C₆H₅Cl + NaOH -----> C₆H₅ONa + NaCl ধাপ ৩: সোডিয়াম ফিনক্সাইড থেকে ফেনল প্রস্তুতি : সোডিয়াম ফিনক্সাইডকে HCl দ্বারা এসিডিক হাইড্রোলাইসিস করলে ফেনল ( C₆H₅OH)  তৈরি হয়। C₆H₅ONa + HCl ------> C₆H₅OH + NaCl

Popular posts from this blog

কপার(Cu) ও ক্রোমিয়ামের(Cr) ইলেকট্রন বিন্যাস ব্যতিক্রম কেন?

মুক্তজোড় ইলেকট্রন ও বন্ধন জোড় ইলেকট্রন কাকে বলে।

জারণ সংখ্যা নির্ণয়ের সহজ পদ্ধতি।

COD ও BOD কাকে বলে?

জারক ও বিজারক কাকে বলে? কিভাবে জারক ও বিজারক সহজেই চেনা যায়।

সালফার পরিবর্তনশীল যোজনী প্রদর্শন করে কেন?

প্রাইমারি স্ট্যান্ডার্ড ও সেকেন্ডারি স্ট্যান্ডার্ড পদার্থ কাকে বলে?

মোলার গ্যাস ধ্রুবক এবং এর মাত্রা, তাৎপর্য ও মান নির্ণয়।

প্রতীক ও সংকেতের মধ্যে পার্থক্য কি?

রাদারফোর্ড ও বোর পরমাণু মডেলের মধ্যে তুলনা।