আলোর প্রতিফলন কাকে বলে? আলো যখন বায়ু বা অন্য কোনো স্বচ্ছ মাধ্যমের ভেতর দিয়ে যাওয়ার সময় অন্য কোনো মাধ্যমে বাধা পায় তখন দুই মাধ্যমের বিভেদতল হতে কিছু আলো প্রথম মাধ্যমে ফিরে আসে, একে আলোর প্রতিফলন বলে।
অপটিক্যাল ফাইবার কি? অপটিক্যাল ফাইবার হচ্ছে খুব সরু এবং নমনীয় কাঁচের তন্তু। অপটিক্যাল ফাইবারের আলোর পূর্ণ অভ্যন্তরীণ প্রতিফলন ঘটে। এটিকে কাজে লাগিয়ে কোনো তথ্য বা ডেটা আদান-প্রদান করা যায়।
ক্যামেরা বা দূরবীনের ভেতরের অংশ কালো হয় কেন? ক্যামেরা কোন কাল বস্তুর উপর আলো পড়লে কাল বস্তুটি সমস্ত আলো শোষণ করে এবং কোন আলো প্রতিফলিত করে না। ফলে কোন বস্তুর চিত্র পরিষ্কার দেখা যায়। এজন্য ক্যামেরা বা দূরবীনে ভেতরের অংশ কাল করা হয়ে থাকে।
সিনেমার পর্দা সাদা হয় কেন? সাদা রঙের তল সব রঙের আলোর প্রতিফলন করে। তাই সিনেমায় সাদা রঙের পর্দা ব্যবহার করা হয়। সাদা রঙের জন্য প্রতিবিম্বের উজ্জ্বলতা বেড়ে যায় এবং সিনেমা পরিষ্কার দেখা যায়।
স্ক্রু গজ কাকে বলে? যে যন্ত্রের সাহায্যে সমব্যাসার্ধের মাইক্রোমিটার স্ক্রু থাকে তাকে স্ক্রুগজ বলে। এর অপর নাম মাইক্রোমিটার স্ক্রু গজ। এ যন্ত্র দ্বারা খুব ক্ষুদ্র দৈর্ঘ্য পরিমাপ করা যায় বলে এরূপ নামকরণ করা হয়।
ভার্নিয়ার স্কেল ব্যবহার করা হয় কেন? মিলিমিটার এর ভগ্নাংশ পরিমাণ দৈর্ঘ্য পরিমাপ করার জন্য ভার্নিয়ার স্কেল ব্যবহার করা হয়। মূল স্কেলের সাহায্যে সাধারণত 1 মিলিমিটার পর্যন্ত ক্ষুদ্র দৈর্ঘ্য সঠিকভাবে পরিমাপ করা যায়। কিন্তু মিলিমিটারের ভগ্নাংশ পরিমাপ করার জন্য ভার্নিয়ার স্কেল ব্যবহার করা হয়। যেমনঃ ভার্নিয়ার স্কেলের সাহায্যে আমরা 0.1mm, 0.2mm, 0.5mm ইত্যাদি দৈর্ঘ্য নির্ভুলভাবে পরিমাপ করতে পারি।
ভার্নিয়ার ধ্রুবক কাকে বলে? ভার্নিয়ার স্কেলের সাহায্যে ক্ষুদ্রতম যে দৈর্ঘ্য পর্যন্ত সঠিকভাবে পরিমাপ করা যায় তাকে ভার্নিয়ার ধ্রুবক বলে। মূল স্কেলের সাহায্যে সাধারণত 1 মিলিমিটার পর্যন্ত ক্ষুদ্র দৈর্ঘ্য সঠিকভাবে পরিমাপ করা যায়। কিন্তু মিলিমিটারের ভগ্নাংশ পরিমাপ করার জন্য ভার্নিয়ার স্কেল ব্যবহার করা হয়। যেমনঃ ভার্নিয়ার স্কেলের সাহায্যে আমরা 0.1mm, 0.2mm, 0.5mm ইত্যাদি দৈর্ঘ্য নির্ভুলভাবে পরিমাপ করতে পারি।
স্লাইড ক্যালিপার্স কি? স্লাইড ক্যালিপার্স একটি বিশেষ ধরনের দৈর্ঘ্য পরিমাপের যন্ত্র। যেখানে মূল স্কেলের সাথে একটি ভার্নিয়ার স্কেল স্থাপন করা থাকে এবং বস্তুকে দুটি চেয়ালের মাঝখানে রেখে তার দৈর্ঘ্য পরিমাপ করা হয়। ভার্নিয়ার স্কেলটি প্রধান স্কেলের গা ঘেঁষে চলাচল করতে পারে বলে এই যন্ত্রকে স্লাইড ক্যালিপার্স বলে। স্লাইড ক্যালিপার্সের সাহায্যে বস্তু দৈর্ঘ্য নির্ণয়ঃ দৈর্ঘ্য = (প্রধান স্কেল পাঠ) + (ভার্নিয়ার স্কেল পাঠ) x (ভার্নিয়ার ধ্রুবক) - (±যান্ত্রিক ত্রুটি)।
ভার্নিয়ার স্কেল কি? মূল স্কেলের ক্ষুদ্রতম ভাগের ভগ্নাংশের নির্ভুল পরিমাপের জন্য মূল স্কেলের পাশে যে ছোট আরও একটি স্কেল ব্যবহার করা হয় তাকে ভার্নিয়ার স্কেল বলে। ভার্নিয়ার স্কেল ফরাসি গণিতশাস্ত্রবিদ পিয়ারে ভার্নিয়ার এই স্কেলটি আবিষ্কার করেন। ভার্নিয়ার স্কেলের সাহায্যে দৈর্ঘ্য নির্ণয়ঃ দৈর্ঘ্য= (প্রধান স্কেল পাঠ) + (ভার্নিয়ার স্কেল পাঠ) x (ভার্নিয়ার ধ্রুবক) - (±যান্ত্রিক ত্রুটি)।
রোধ কাকে বলে? কোন পরিবাহীর যে ধর্মের জন্য এর মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহ বাধাপ্রাপ্ত হয় তাকে রোধ বলে। অথবা, নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় কোন পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য ও তড়িৎ প্রবাহের অনুপাতকে ঐ তাপমাত্রায় ঐ পরিবাহীর রোধ বলে। রোধের একক ও'হম (Ω). রোধকে R দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
কোন পরিবাহীর রোধ 10Ω এর অর্থ কি? কোন পরিবাহীর রোধ 10Ω বলতে বুঝায় যে, পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য 10 ভোল্ট হলে এর মধ্যে দিয়ে এক অ্যাম্পিয়ার তড়িৎ প্রবাহ চলবে।
বিভব পার্থক্য কাকে বলে? একক ধনাত্মক চার্জকে তড়িৎ ক্ষেত্রের এক বিন্দু থেকে অন্য বিন্দুতে স্থানান্তর করতে যে পরিমাণ কাজ সম্পন্ন হয় তাকে ঐ দুই বিন্দুর বিভব পার্থক্য বলে।
ও'হম কাকে বলে? যে পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য 1 ভোল্ট এবং তার মধ্যে দিয়ে এক অ্যাম্পিয়ার তড়িৎ প্রবাহ চললে সেই পরিবাহীর রোধকে ও'হম বলে। রোধের একক ও'হম (Ω)।
তুল্যরোধ কি। রোধের কোন সমবায়ের (শ্রেণী বা সমান্তরাল) রোধগুলির পরিবর্তে যে একটি মাত্র রোধ ব্যবহার করলে বর্তনীর প্রবাহ বা বিভব পার্থক্যের কোন পরিবর্তন হয়না তাকে ঐ সমবায়ের তুল্যরোধ বলে।
ও'মের সূত্র। তাপমাত্রা স্থির থাকলে কোন পরিবাহীর মধ্য দিয়ে যে পরিমান তড়িৎ প্রবাহিত তা দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্যের সমানুপাতিক। যদি তড়িৎ প্রবাহ I এবং বিভব V হয় তাহলে গাণিতিক ভাবে লিখা যায়- I α V.
আপেক্ষিক রোধ কি। কোনো নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় একক দৈর্ঘ্যের ও একক প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল বিশিষ্ট কোন পরিবাহীর রোধকে ঐ তাপমাত্রায় ঐ পরিবাহীর উপাদানের আপেক্ষিক রোধ বলে। আপেক্ষিক রোধের একক Ωm.
লবণ সেতু কি? দুটি অর্ধ কোষের মধ্যে পরোক্ষ সংযোগ স্হাপনের জন্য একটি বিশেষ লবণ যেমনঃ এর সম্পৃক্ত দ্রবণ ভর্তি U আকৃতির কাচ নলের উভয় মুখ বন্ধ করে অর্ধকোষদ্বয়ের উভয় তরলের মধ্যে ডুবিয়ে রাখা হয়। অর্ধকোষদ্বয়ের এরূপ পরোক্ষ সংযোগের মাধ্যমকে লবণ সেতু বলে।
গ্যালভানিক কোষ কাকে বলে? যে তড়িৎ রাসায়নিক কোষে তড়িৎদ্বার বিক্রিয়া স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঘটে। অর্থাৎ বিক্রিয়া সংগঠনের জন্য বাহির থেকে শক্তির প্রয়োজন হয় না এবং রাসায়নিক শক্তি বিদ্যুৎ শক্তিতে পরিণত হয় তাকে গ্যালভানিক কোষ বলে। যেমন - ড্যানিয়েল কোষ।
সাবানের ব্যবহার। সাবানের ব্যবহার নিম্নরূপঃ ★ পোশাক পরিষ্কার করতে। ★ মানব দেহ পরিষ্কার করতে। ★ রোগজীবাণু প্রতিরোধক হিসেবে ★ গৃহস্থালির জিনিসপত্র এবং যন্ত্রপাতি পরিষ্কার করতে সাবান ব্যবহার করা হয়।
গ্লিসারিন কি? গ্লিসারিন হল অ্যালকোহলের সমগোত্রীয় শ্রেণীর অ্যালিফেটিক যৌগ। এটি পলি-হাইড্রক্সি অ্যালকোহল। গ্লিসারিন বর্ণহীন তরল এবং মিষ্টি স্বাদ যুক্ত। গ্লিসারিন ফ্যাটি এসিডের সাথে ট্রাই গ্লিসারাইড এস্টার আকারে পাওয়া যায়।
অক্সিজেন এর ব্যবহার কি? অক্সিজেন এর ব্যবহার নিম্নরূপঃ প্রাণীর শ্বাস - প্রশ্বাস এবং দহন কাজে অক্সিজেন অপরিহার্য। অক্সিজেন ছাড়া মানুষ জীবন ধারণ করতে পারে না। ধাতুর গলন ও জোড়া লাগানোর জন্য, অক্সি অ্যাসিটিলিন শিখা উৎপাদনে এবং অসংখ্য শিল্প-কারখানায় অক্সিজেনের ব্যবহার ব্যাপক।
অক্সাইড কি এবং এর প্রকারভেদ। অক্সিজেন ও অপর যেকোনো একটি মৌল যোগে গঠিত দ্বিমৌল যৌগকে অক্সাইড বলে। যেমনঃ MgO, CaO ইত্যাদি। অক্সাইডের প্রকারভেদঃ রাসায়নিক ধর্মের ভিত্তিতে অক্সাইডকে নয় ভাগে ভাগ করা যায়। ১. অম্লীয় অক্সাইড ২. ক্ষারীয় অক্সাইড ৩. উভধর্মী অক্সাইড ৪. নিরপেক্ষ অক্সাইড ৫. পার অক্সাইড ৬. পলি অক্সাইড ৭. সুপার অক্সাইড ৮. সাব অক্সাইড ৯. যৌগিক বা মিশ্র অক্সাইড।
কৃষি বিজ্ঞানে নাইট্রোজেনের গুরুত্ব কি। কৃষি বিজ্ঞানে নাইট্রোজেনের গুরুত্ব নিম্নরূপঃ কৃষি বিজ্ঞানে নাইট্রোজেনের গুরুত্ব অপরিসীম। নাইট্রোজেন থেকে অ্যামোনিয়া, ইউরিয়া প্রভৃতি উৎপন্ন হয়। যা কৃষিবিজ্ঞানে সার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া উদ্ভিদ মাটি হতে নাইট্রোজেন সরাসরি গ্রহণ করে থাকে।
কৃষি বিজ্ঞানে ফসফরাস এর গুরুত্ব কি। কৃষি বিজ্ঞানে ফসফরাস এর গুরুত্ব নিম্নরূপঃ কৃষি বিজ্ঞানে উদ্ভিদের বৃদ্ধি সাধনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া ফসফরাস এর যৌগ সুপার ফসফেট এবং ট্রিপল সুপার ফসফেট সার উদ্ভিদের পুষ্টির জন্য ব্যবহৃত হয়
শ্বেত ফসফরাস ও লোহিত ফসফরাস এর মধ্যে পার্থক্য কি? শ্বেত ফসফরাস ও লোহিত ফসফরাস এর মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপঃ ১. শ্বেত ফসফরাস মোমের মত নরম।কিন্তু, লোহিত ফসফরাস অদানাদার গুড়া পদার্থ। ২. শ্বেত ফসফরাস এর গন্ধ রসুনের মতো। অপরদিকে, লোহিত ফসফরাস গন্ধহীন। ৩. শ্বেত ফসফরাস অত্যন্ত সক্রিয়। কিন্তু লোহিত ফসফরাস কম সক্রিয়। ৪. শ্বেত ফসফরাস উত্তপ্ত ক্ষার দ্রবণের সাথে বিক্রিয়া করে ফসফিন উৎপন্ন করে। লোহিত ফসফরাস ক্ষারের সাথে কোন বিক্রিয়া করে না। ৫. শ্বেত ফসফরাস কক্ষ তাপমাত্রায় অস্থায়ী। ধীরে ধীরে লোহিত ফসফরাসে পরিণত হয়। কিন্তু লোহিত ফসফরাস সাধারণ তাপমাত্রায় স্থায়ী।
ফসফরাস এর উৎস। ফসফরাস খুব সক্রিয় মৌল। তাই এটি প্রকৃতিতে মৌলিক অবস্থায় থাকে না। ফসফরাসকে সাধারণত খনিজ ফসফেট হিসেবে পাওয়া যায়। ফসফেট যৌগ হিসেবেঃ ১. ফসফরাইট ---> Ca₃(PO₄)₂ ২. ফ্লোর অ্যাপাটাইট ----> 3Ca₃(PO₄)₂. CaF₂ ৩. ক্লোর অ্যাপাটাইট -----> 3Ca₃(PO₄)₂. CaCl₂ ৪. ভিভিয়ানাইট -----> Fe₃(PO₄)₂. 8H₂O ক্যালসিয়াম ফসফেট হিসেবেঃ ১. ডিমে ২. জীবদেহের অস্থি, মজ্জা ও মস্তিষ্কে। ৩. উর্বর জমিতে ফসফরাস পাওয়া যায়।
ফসফরাস এর ব্যবহার। ফসফরাসের ব্যবহার অনেক। প্রাণী দেহের রক্ত, মস্তিষ্ক ও হাড় গঠন করে। এটি উদ্ভিদের বৃদ্ধি সাধন করে। সুপার ফসফেট, ট্রিপল সুপার ফসফেট সার উদ্ভিদের পুষ্টি সাধন করে। সেফটি ম্যাচ বা নিরাপদ দিয়াশলাইয়ের কাঠির মাথায় ও বাক্সের পাশে লোহিত ফসফরাস ব্যবহার করা হয়। ফসফরাস ব্রোঞ্চ নামক সংকর ধাতু প্রস্তুতিতে ফসফরাস ব্যবহার করা হয়। ফসফরাস ব্রোঞ্চ শক্ত, মরিচারোধী ও ক্ষয়রোধী হওয়ায় বল, বিয়ারিং, ভালব ও শক্ত তার প্রস্তুত করতে ফসফরাস ব্যবহার করা হয়।
ক্লোরিনের সাথে হাইড্রোজেন সালফাইড এর বিক্রিয়া। ক্লোরিন গ্যাসের মধ্যে হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাস চালনা করলে হাইড্রোজেন সালফাইড জারিত হয়ে সালফার ও হাইড্রোক্লোরিক এসিড উৎপন্ন করে। H₂S + Cl₂ -----> S + 2HCl
CS₂ যুক্ত HBr দ্রবণের সাথে ক্লোরিন পানির বিক্রিয়া। CS₂ যুক্ত HBr দ্রবণে ক্লোরিন পানি ধীরে ধীরে যোগ করলে ক্লোরিন HBr হতে ব্রোমিন প্রতিস্থাপন করে হাইড্রোজেন ক্লোরাইড (HCl) উৎপন্ন করে এবং ব্রোমিন CS₂ দ্রবণে কমলা হলুদ বর্ণ ধারণ করে। 2HBr + Cl₂ -----> 2HCl + Br₂ CS₂ + Br₂ ------> কমলা হলুদ বর্ণ
H₂SO₄ যুক্ত KMnO₄ দ্রবনের সাথে HI এর বিক্রিয়া। লঘু সালফিউরিক এসিড মিশ্রিত বেগুনি বর্ণের পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট দ্রবণে হাইড্রোজেন আয়োডাইড এর দ্রবণ যোগ করলে তা পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট কে বিজারিত করে বর্ণহীন পটাশিয়াম সালফেট ও গোলাপি বর্ণের ম্যাঙ্গানিজ সালফেট এর দ্রবণ উৎপন্ন করে এবং নিজে জারিত হয়ে পানি ও আয়োডিন উৎপন্ন করে। 2KMnO₄ + 3H₂SO₄ ------>K₂SO₄ + 2MnSO₄ + 3H₂O + 5[O] 10HI + 5[O] -----> 5I₂ + 5H₂O
কপার সালফেটের জলীয় দ্রবণের সাথে HI এর বিক্রিয়া। কপার সালফেটের দ্রবণে HI যোগ করলে তা CuSO কে বিজারিত করে কিউপ্রাস আয়োডাইডের সাদা অধঃক্ষেপ, সালফিউরিক অ্যাসিড এবং আয়োডিন উৎপন্ন হয়। 2CuSO₄ + 4HI -----> Cu₂I₂ + 2H₂SO₄ + I₂
HI দ্রবণের সাথে HNO₃ এর বিক্রিয়া গাঢ় HNO₃ কে HI বিজারিত করে NO₂ এ পরিণত করে এবং নিজে জারিত হয়ে আয়োডিন (I₂) ও পানি উৎপন্ন করে 2HNO₃ + 2HI -----> 2H₂O + 2NO₂ + I₂
লোহিত ফসফরাস ও I₂ মিশ্রণে পানির বিক্রিয়া। লোহিত ফসফরাস ও পানির মিশ্রণ আয়োডিন যোগ করলে HI ও ফসফরাস এসিড (H₃PO₃) উৎপন্ন হয়। 2P + 3I₂ ------> 2PI₃ PI₃ + 3H₂O -----> 3HI + H₃PO₃
KI দ্রবণের ক্লোরিন চালনা করলে কি ঘটে। KI এর দ্রবণে ক্লোরিন গ্যাস চালনা করলে আয়োডিন (I₂) ও পটাশিয়াম ক্লোরাইড (KCl) উৎপন্ন হয়। 2KI + Cl₂ -----> I₂ + 2KCl
আয়োডিনের সাথে SO₂ এর বিক্রিয়া। SO₂ দ্রবণের সাথে আয়োডিন বিক্রিয়া করে হাইড্রোআয়োডিক অ্যাসিড (HI) ও সালফিউরিক এসিড উৎপন্ন করে। SO₂ + I₂ + 2H₂O -----> 2HI + H₂SO₄
নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড প্রস্তুতি। লেড নাইট্রেটকে উত্তপ্ত করে গ্যাস নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড বা ডাই নাইট্রোজেন টেট্রাঅক্সাইড (NO₂ বা N₂O₄) প্রস্তুত করা হয়। লেড নাইট্রেটের অণুতে কোন কেলাস পানি না থাকায় এটির ব্যবহার সুবিধাজনক। তবে group-1 (Na, K ইত্যাদি) এর নাইট্রেট লবণ ও অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট হতে নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড উৎপন্ন হয় না। 2Pb(NO₃)₂ -----> 4NO₂ +2PbO + O₂
ডাই নাইট্রোজেন ট্রাই অক্সাইড (N₂O₃) প্রস্তুতি। আর্সেনিয়াস অক্সাইড (As₂O₃) এর সাথে 50% গাঢ় নাইট্রিক এসিডকে উত্তপ্ত করলে ডাই নাইট্রোজেন ট্রাই অক্সাইড উৎপন্ন হয়। উৎপন্ন গ্যাসকে CaCl₂ দ্বারা শুষ্ক করে শেষ শীতল করলে নীল বর্ণের তরল রূপে N₂O₃ জমা হয়। As₂O₃ + 2HNO₃ +2H₂O -----> N₂O₃ + 2H₃AsO₄
নাইট্রাস অক্সাইড প্রস্তুতি। অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড ও সোডিয়াম নাইট্রেট এর মিশ্রণকে উত্তপ্ত করলে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট উৎপন্ন হয়। এই অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটকে 250 ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করলে নাইট্রাস অক্সাইড বা লাফিং গ্যাস উৎপন্ন হয়। NH₄Cl + NaNO₃ ----->NH₄NO₃ + NaCl NH₄NO₃ ------> N₂O + 2H₂O
সার কী? যে সকল জৈব যৌগ বা রাসায়নিক পদার্থ মাটির উর্বরতা ও উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে উদ্ভিজ্জ ফলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তাকে সার বলে। যেমনঃ ইউরিয়া, TSP, DAP, Ca(NO₃)₂ , NH₄NO₃ ইত্যাদি।
লাফিং গ্যাস কি এবং এর প্রস্তুতি। নাইট্রাস অক্সাইডকে (N₂O) লাফিং গ্যাস বলা হয়। এর মৃদু মিষ্টি গন্ধ আছে। এটি বর্ণহীন এবং কক্ষতাপমাত্রায় নিষ্ক্রিয়। এটি মৃদু চেতনানাশক হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। লাফিং গ্যাস বলার কারণঃ নাইট্রাস অক্সাইডের গন্ধ নিলে স্নায়ুতন্ত্রে উত্তেজনা ঘটিয়ে হাসির উদ্রেক সৃষ্টি করে। তাই নাইট্রাস অক্সাইডকে লাফিং গ্যাস বলা হয়। প্রস্তুতিঃ অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড ও সোডিয়াম নাইট্রেট এর মিশ্রণকে উত্তপ্ত করলে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট উৎপন্ন হয়। এই অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটকে 250 ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করলে নাইট্রাস অক্সাইড বা লাফিং গ্যাস উৎপন্ন হয়। NH₄Cl + NaNO₃ ----->NH₄NO₃ + NaCl NH₄NO₃ ------> N₂O + 2H₂O
মিশ্র অ্যানহাইড্রাইড কাকে বলে? নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইডকে (NO₂) মিশ্র অ্যানহাইড্রাইড বলে। কারণ এটি শীতল পানিতে দ্রবীভূত হয়ে নাইট্রিক অ্যাসিড (HNO₃) ও নাইট্রাস এসিড (HNO₂) এর মিশ্রন উৎপন্ন হয়। 2NO₂ +H₂O ----->HNO₃ +HNO₂
সক্রিয় নাইট্রোজেন কাকে বলে? নিম্নচাপে N₂ গ্যাসের মধ্যে বিদ্যুৎক্ষরণ করলে N₂ এর একটি রূপভেদ উৎপন্ন হয় যা সাধারণ N₂ হতে অধিক ক্রিয়াশীল। একে সক্রিয় N₂ বলে।
এনানসিওমার কি? অপ্রতিসম কার্বন সম্বলিত কোন যৌগ ও এর দর্পণ প্রতিবিম্ব পরস্পর সমপাতিত না হলে এরূপ দুই ভিন্ন গঠনের যৌগ আলোক সক্রিয় হয়। তখন এরূপ দুই আলোক সক্রিয় সমানুকে এনানসিওমার বা এনানসিওমর্ফ বলে। এ প্রকারের আলোক সক্রিয়তাকে এনানসিওমারিজম বলা হয়।
রেসিমিক মিশ্রণ কি? দুটি এনানশিওমার যেমন d-ল্যাকটিক এসিড ও l- ল্যাকটিক অ্যাসিড উভয় এক সমতলীয় আলোর তলকে সমান কৌণিক পরিমাণে বিপরীত দিকে ঘুরায়। তাই d- সমানু ও l -সমানুর সমপরিমাণ মিশ্রণ পরস্পরের বিপরীত ঘূর্ণন ক্রিয়াকে বিনষ্ট করে থাকে। ফলে d- ও l- সমানুর এই সমতুল মিশ্রণ আলোক নিষ্ক্রিয় হয়। দুটি এনানশিওমার এরূপ সমতুল মিশ্রণকে রেসিমিক মিশ্রণ বলে। d-ল্যাকটিক অ্যাসিড ও l- ল্যাকটিক এসিডের ঘূর্ণন কোণ যথাক্রমে +2.24º ও -2.24º।
নিকেল প্রিজম কি? ক্যালসাইট (CaCO₃) নামক এক বিশেষ খনিজ পদার্থ থেকে নিকেল প্রিজম প্রস্তুত করা হয়। নিকেল প্রিজম বিভিন্ন তলে আলোর স্পন্দনকে ছাঁকন করে এক সমতলীয় আলোতে পরিণত করতে পারে।
এক সমতলীয় আলোর বৈশিষ্ট্য। এক সমতলীয় আলোর বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপঃ ১. এক সমতুলীয় আলো সমান্তরাল দুটি নিকেল প্রিজমের মধ্য দিয়ে চলতে পারে। ২. নিকেল প্রিজম দুটি লম্বভাবে থাকলে আলো প্রথম প্রিজমের ভেতর দিয়ে বের হয়ে আর দ্বিতীয় প্রিজমের ভেতর দিয়ে পূর্বের সরল পথে আসতে পারে না। ফলে পূর্বের সরল পথটি অস্বচ্ছ হয়ে থাকে। ৩. দুই সমান্ততরাল নিকেল প্রিজমের বিন্যাসের প্রথম প্রিজমের ভেতর দিয়ে এক সমতুলীয় আলো আসার পর কোন কারনে ঐ এক সমতুলীয় আলোর পথ ধীরে ধীরে কৌনিক ঘূর্ণনে দিক পরিবর্তন করলে, তখনও দ্বিতীয় সমান্তরাল প্রিজমের ভেতর দিয়ে পূর্বের পথে আলো প্রসারিত হতে পারে না। ফলে পূর্বের আলোর সরল পথ অস্বচ্ছ হয়ে ওঠে।
পোলারিমিটার কাকে বলে? কোন যৌগের আলোক সক্রিয়তা যে যন্ত্রের সাহায্যে সনাক্তকরণ ও পরিমাপ করা হয় সে যন্ত্রকে পোলারিমিটার বলা হয়। পোলারিমিটার যন্ত্রটি হল একবর্ণী আলোর উৎস ও পোলারাইজার নামক প্রথম লেন্স, পোলারিমিটার নল ও এনালাইজার নামক দ্বিতীয় লেন্স এর সমন্বয়ে গঠিত। পোলারাইজার ও এনালাইজার এর মাঝখানে আলোক সক্রিয় যৌগের দ্রবণ রাখার জন্য একটি পোলারিমিটার নল থাকে।
আলোক সক্রিয়তা কাকে বলে? যেসব যৌগ এক সমতলীয় আলোর তলকে কৌনিক ঘূর্ণনে পরিবর্তন করে এদেরকে আলোক সক্রিয় যৌগ বলে এবং এসব যৌগের এক সমতলীয় আলোর তল ঘুরাবার ধর্মকে আলোক সক্রিয়তা বলে।
পোলারাইজেশন কাকে বলে। একবর্ণী আলোককে নিকেল প্রিজমের মধ্য দিয়ে প্রতিসরিত হতে দিলে শুধুমাত্র এক সমতলে লম্বভাবে স্পন্দিত আলোকরশ্মি পাওয়া যায়। একবর্ণী আলোর অসংখ্য সমতল থেকে এক সমতলীয় আলোর ছাঁকন প্রণালীকে পোলারাইজেশন বলে।
এক সমতলীয় আলো কাকে বলে? অসংখ্য সমতলে লম্বভাবে স্পন্দিত একবর্ণী আলোক রশ্মিকে উপযুক্ত ছাঁকনি বা ফিল্টার এর ভেতর দিয়ে প্রতিসরিত হতে দিলে শুধুমাত্র এক সমতলে লম্বভাবে স্পন্দিত আলোক রশ্মি বের হয়ে আসে। এরূপ এক সমতলে স্পন্দিত আলোকে এক সমতলীয় আলো বলে।
একবর্ণী আলো কাকে বলে? একটিমাত্র তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট আলোকরশ্মিকে একবর্ণী একবর্ণী আলো বলে। একবর্ণী আলো বিশেষ আলোক উৎস থেকে পাওয়া যায়। যেমনঃ সোডিয়াম ল্যাম্প থেকে একবর্ণী আলো নির্গত হয় এবং এর তরঙ্গদৈর্ঘ্য 5893ºA।
অরবিট ও অরবিটাল কাকে বলে? অরবিটঃ পরমাণুর নিউক্লিয়াসের বাহিরে সুনির্দিষ্ট যে বৃত্তাকার কক্ষপথে ইলেকট্রন নিউক্লিয়াসকে পরিভ্রমণ করে সেই কক্ষপথকে অরবিট বা প্রধান শক্তিস্তর বা প্রধান কক্ষপথ বলে। অরবিটালঃ নিউক্লিয়াসের চারদিকে যে নির্দিষ্ট সম্ভাব্য স্থানে ইলেকট্রনের ঘনত্ব সর্বাধিক অর্থাৎ 90% - 95% হয় সেই সকল সম্ভাব্য স্থানকে অরবিটাল বলে।
ক্যাটিনেশন কি? যে ধর্মের জন্য একই মৌলের একাধিক পরমাণু পরস্পরের সাথে বিভিন্ন সংখ্যায় যুক্ত হয় বিভিন্ন দৈর্ঘের ও আকৃতির শিকল বা বলয় গঠনে সক্ষম হয় তখন মৌলটির সেই ধর্মকে তার ক্যাটিনেশন ধর্ম বলে। যেমনঃ ক্যাটিনেশন ধর্মের জন্য কার্বনের ৬০টি পরমাণু পরপর যুক্ত হয়ে সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন হেক্সা কনটেন C₆₀H₁₂₂ সৃষ্টি করে।
সিগমা ও পাই বন্ধনের মধ্যে পার্থক্য। সিগমা ও পাই বন্ধনের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপঃ ১. সিগমা বন্ধন শক্তিশালী কারণ এখানে অরবিটালের সামনাসামনি অধিক্রমণ ঘটে। কিন্তু পাই বন্ধন দুর্বল কারণ এখানে অরবিটাল এর পাশাপাশি অধিক্রমন ঘটে। ২. সিগমা বন্ধন ভাঙতে অধিক শক্তির প্রয়োজন হয়। তাই সিগমা বন্ধন সৃষ্ট যৌগ সহজে বিক্রিয়া দেয় না। বন্ধন ভেঙ্গে প্রতিস্থাপন, অপসারণ ও পুনঃবিন্যাস বিক্রিয়া ঘটে। কিন্তু পাই বন্ধন সৃষ্ট যৌগ সক্রিয় হয়। অতি সহজে যুত বিক্রিয়া দেয়। ৩. সকল একক বন্ধনী সিগমা বন্ধন দ্বারা গঠিত। কিন্তু একটি সিগমা বন্ধন এর সাথে একটি বা দুটি পাই বন্ধনযুক্ত হয়ে যথাক্রমে দ্বিবন্ধন ও ত্রিবন্ধন গঠন করে। ৪. দ্বিবন্ধন যুক্ত পরমাণু মুক্তভাবে ঘুরতে পারে। কিন্তু পাই বন্ধন যুক্ত যৌগের মুক্ত ঘূর্ণন সম্ভব নয়।
ফুলারিন কি? কার্বনের ক্যাটিনেশন ধর্মের জন্য অতিসম্প্রতি ফুটবলের ন্যায় বিশালাকৃতির C₆₀ শিকল বিশিষ্ট অনু (আণবিক ভর 720) আবিষ্কৃত হয়েছে যার কাঠামোতে কার্বন পরমাণুসমূহ সংকরিত। এটি কার্বনের একটি ত্রিমাত্রিক পলিমারের রূপভেদ। এ বিশেষ কাঠামোর যৌগটির নাম ফুলারিন।
কপার(Cu) ও ক্রোমিয়ামের(Cr) ইলেকট্রন বিন্যাস ব্যতিক্রম কেন? কপার ও ক্রোমিয়াম এর ইলেকট্রন বিন্যাস নিম্নরূপঃ Cu (29)----> 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3p⁶ 4s¹ 3d¹º Cr (24) -----> 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3p⁶ 4s¹ 3d⁵ ইলেকট্রন বিন্যাস থেকে দেখা যায়, কপারের ক্ষেত্রে 4s² 3d⁹ থেকে 4s¹ 3d¹º হয়েছে এবং ক্রোমিয়াম এর ক্ষেত্রে 4s² 3d⁴ থেকে 4s¹ 3d⁵ হয়েছে। কোন মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাসে যদি সর্ববহিঃস্থ শক্তির অরবিটাল অর্ধপূর্ণ বা পূর্ণ অবস্থায় থাকে তবে ঐ মৌলের স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি পায়। এজন্য কপারের ইলেকট্রন বিন্যাসে বহিঃস্থ শক্তিস্তরে 4s² 3d⁹ এর পরিবর্তে 4s¹ 3d¹º হয় এবং ক্রোমিয়াম এর ক্ষেত্রে 4s² 3d⁴ এর পরিবর্তে 4s¹ 3d⁵ হয়। স্থিতিশীলতার জন্য কপার ও ক্রোমিয়ামের ইলেকট্রন বিন্যাসের ব্যতিক্রম দেখা যায়।
মুক্তজোড় ইলেকট্রন ও বন্ধন জোড় ইলেকট্রন কাকে বলে। মুক্তজোড় ইলেকট্রনঃ কোন পরমাণুর যোজ্যতা স্তরে বা সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরে যে ইলেকট্রন গুলো বন্ধন গঠনে অংশগ্রহণ করে না তাদেরকে মুক্তজোড় ইলেকট্রন বলে। যেমন ঃ ক্লোরিনের ইলেকট্রন বিন্যাস করলে দেখা যায় Cl (17) ---> 1s² 2s²2p⁶ 3s² 3Px² 3Py² 3Pz¹ এখানে, ক্লোরিনের সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তর অর্থাৎ তৃতীয় শক্তিস্তরে 3s² 3Px² 3Py² অরবিটাল গুলোতে দুটি করে ইলেকট্রন বিদ্যমান থাকে। এই ইলেকট্রনগুলি বন্ধন গঠনে অংশগ্রহণ করে না। এজন্য এই ইলেকট্রনগুলি কে মুক্তজোড় ইলেকট্রন বলে। এখানে ক্লোরিনের তিন জোড়া মুক্তজোড় ইলেকট্রন আছে। বন্ধন জোড় ইলেকট্রনঃ পরমাণু যোজ্যতা স্তরে বা সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরে যে ইলেকট্রনগুলি বন্ধন গঠনে অংশগ্রহণ করে তাদেরকে বন্ধন জোড় ইলেকট্রন বলে। কোন পরমাণু ইলেকট্রন বিন্যাস করলে তার সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরে যে বেজোড় ইলেকট্রন গুলি থাকে সেই ইলেকট্রনগুলি বন্ধন গঠনে অংশগ্রহণ করে। কাজেই বলা যায়, কোন পরমাণুর সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরে যতটি বেজোড় ইলেকট্রন থাকে ঐ পরমাণু ততটি বন্ধন গঠন কর...
জারণ সংখ্যা নির্ণয়ের সহজ পদ্ধতি। জারণ সংখ্যাঃ যৌগ গঠনের সময় একটি মৌল অপর মৌলের সাথে যুক্ত হতে যে কয়টি ইলেকট্রন আদান প্রদান করে সেই আদান প্রদানকৃত ইলেকট্রনের সংখ্যাকে জারণ সংখ্যা বলে। জারণ সংখ্যা ধনাত্মক, ঋণাত্মক, ভগ্নাংশ এবং শূন্য হতে পারে। একটি মৌলের একাধিক জারণ সংখ্যা হতে পারে। একে পরিবর্তনশীল জারণ সংখ্যা বলে। কোন যৌগে নির্দিষ্ট মৌলের অজানা জারণ সংখ্যা নির্ণয়ের জন্য কিছু নির্দিষ্ট মৌলের জারণ সংখ্যা মনে রাখা প্রয়োজন। জানা মৌলের জারণ সংখ্যার সাহায্যে কোন মৌলের অজানা জারণ সংখ্যা সহজেই নির্ণয় করা যায়। যেসব মৌলের জারণ সংখ্যা মনে রাখা প্রয়োজন তা নিম্নরূপঃ ১. চার্জ নিরপেক্ষ পরমাণুর জারণ সংখ্যা শূন্য হয়। যেমনঃ Na ; K ; Mg ; Ca ; Fe ইত্যাদি। ২. দ্বি-মৌলিক গ্যাসের জারণ সংখ্যা শূন্য। যেমনঃCl₂ ; Br₂ ; I₂ ; N₂ ; O₂ ; F₂ ; H₂ ইত্যাদি। ৩. নিষ্ক্রিয় গ্যাসের জারণ সংখ্যা শূন্য। যেমনঃ He ; Ne ; Ar ; Kr ; Xe ; Rn. ৪. গ্রুপ- 1 এর মৌল সমূহের জারণ সংখ্যা +1. যেমনঃ H ; Li ; Na ; K ; ইত্যাদি। ৫. গ্রুপ -2 এর মৌলসমূহের জারণ সংখ্যা +2. যেমনঃ...
COD ও BOD কাকে বলে? COD : কোন নমুনা পানিতে মোট কতটুকু রাসায়নিক দ্রব্য আছে তা পরিমাপের মানদন্ডকে Chemical Oxygen Demand বা সংক্ষেপে COD বলা হয়। BOD : কোন নমুনা পানিতে জৈব দূষক পচনের জন্য কি পরিমাণ অক্সিজেন দরকার তার মানদণ্ডকে Biological Oxygen Demand বা BOD বলে।
জারক ও বিজারক কাকে বলে? কিভাবে জারক ও বিজারক সহজেই চেনা যায়। জারকঃ যে সকল রাসায়নিক পদার্থ অন্য রাসায়নিক পদার্থকে জারিত করে এবং সেই সাথে নিজে বিজারিত হয় তাকে জারক বলে। যেমন - জিংক এবং কপার সালফেটের বিক্রিয়ায় কপার সালফেট জারক হিসেবে কাজ করে। রাসায়নিক বিক্রিয়ার সময় জারক ইলেক্ট্রন গ্রহন করে। Zn +CuSO4 ------> ZnSO4 +Cu এই বিক্রিয়ায় কপার আয়ন দুটি ইলেক্ট্রন গ্রহন করে কপার ধাতুতে পরিনত হয়েছে। অর্থাৎ কপারের বিজারন ঘটেছে। বিজারন বিক্রিয়ায় যারা অংশগ্রহন করে তারা জারক।কাজেই এই বিক্রিয়ায় কপার জারক। জারক যেহেতু ইলেক্ট্রন গ্রহন করে সেহেতু জারকের ধনাত্বক আধান উৎপাদে হ্রাস পায়। অর্থাৎ সকল জারন- বিজারন বিক্রিয়ায় যে বিক্রিয়কের জারন সংখ্যা বা ধনাত্বক আধান উৎপাদে হ্রাস পায় সেই বিক্রিয়কটিই জারক। কিছু জারকের উদাহরন - সকল অধাতু, হ্যালোজেন, KMnO4, K2Cr2O7, HNO3, গাঢ় H2SO4, SO2, ইত্যাদি। বিজারক ঃ যে সকল রাসায়নিক পদার্থ অন্য রাসায়নিক পদার্থকে বিজারিত করে এবং সেই সাথে নিজে জারিত হয় তাকে বিজারক বলে। বিজারক পদার্থ রাসায়নিক বিক্রিয়ার সময় ইলেক্ট্রন ...
সালফার পরিবর্তনশীল যোজনী প্রদর্শন করে কেন? যেসব মৌলের একাধিক যোজনী বিদ্যামান তাদেরকে পরিবর্তনশীল যোজনী বলা হয়। আধুনিক সংজ্ঞা মতে অধাতব মৌলের সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরে বিজোড় ইলেকট্রনের সংখ্যা ঐ মৌলের যোজনী নির্দেশ করে। সালফারের স্বাভাবিক ও উত্তেজিত অবস্থায় ইলেকট্রন বিন্যাস নিম্নরূপঃ S(16)----> 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3Px² 3Py¹ 3Pz¹ S*(16)---> 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3Px¹ 3Py¹ 3Pz¹3dxy¹ S²*(16)--->1s² 2s² 2p⁶ 3s¹ 3Px¹ 3Py¹ 3Pz¹ 3dxy¹ 3dyz¹ S এর ইলেকট্রন বিন্যাস থেকে দেখা যায় স্বাভাবিক অবস্থায় বহিঃস্থ শক্তিস্তরে বেজোড় ইলেকট্রন দুইটি আছে। এ কারণে সালফারের স্বাভাবিক অবস্থায় যোজনী 2. আবার প্রথমবার উত্তেজিত করলে 3Px অরবিটাল থেকে 3dxy অরবিটালে একটি ইলেকট্রন স্থানান্তরিত হয়। এ অবস্থায় সালফারের চারটি বিজোড় ইলেকট্রন পাওয়া যায়। এজন্য সালফারের যোজনী 4 হয়। আবার সালফারকে দ্বিতীয় বার উত্তেজিত করলে 3s অরবিটাল থেকে 3dyz অরবিটালে আরেকটি ইলেকট্রন স্থানান্তরিত হয়। এই অবস্থায় বিজোড় ইলেকট্রন পাওয়া যায় 6 টি। এজন্য সালফার এর যোজনী 6 হয়। যে...
প্রাইমারি স্ট্যান্ডার্ড ও সেকেন্ডারি স্ট্যান্ডার্ড পদার্থ কাকে বলে? প্রাইমারি স্ট্যান্ডার্ড পদার্থঃ যেসব পদার্থ রাসায়নিক নিক্তিতে ওজন করা যায়, বাতাসের জলীয় বাষ্প, কার্বন-ডাই-অক্সাইড ইত্যাদির সাথে বিক্রিয়া করে না এবং যাদের দ্বারা তৈরিকৃত দ্রবণের ঘনমাত্রা দীর্ঘদিন অপরিবর্তিত থাকে তাদেরকে প্রাইমারি স্ট্যান্ডার্ড পদার্থ বলে। যেমনঃ সোডিয়াম কার্বনেট (Na₂CO₃), অক্সালিক এসিড (C₂H₂O₄ .2H₂O) ,K₂Cr₂O₇ ইত্যাদি। প্রাইমারি স্ট্যান্ডার্ড পদার্থের বৈশিষ্ট্যঃ ১. রাসায়নিক নিক্তিতে ওজন করা যায় এবং নিক্তির কোন ক্ষতি করে না। ২. বায়ুমণ্ডলের জলীয় বাষ্প, কার্বন-ডাই-অক্সাইড এদের সাথে বিক্রিয়া করে না। ৩. তৈরিকৃত দ্রবণের ঘনমাত্রা দীর্ঘদিন অপরিবর্তিত থাকে। ৪. ত্বকের কোনো ক্ষতি করেনা।। ৫. সাধারণ তাপমাত্রায় এরা কঠিন অবস্থায় থাকে। সেকেন্ডারি স্ট্যান্ডার্ড পদার্থঃ যে সকল পদার্থ রাসায়নিক নিক্তিতে ওজন করা যায় না, বায়ুমন্ডলের জলীয়বাষ্প, কার্বন ডাই অক্সাইড এদের সাথে বিক্রিয়া করে এবং এদের দ্বারা তৈরিকৃত দ্রবণে...
মোলার গ্যাস ধ্রুবক এবং এর মাত্রা, তাৎপর্য ও মান নির্ণয়। মোলার গ্যাস ধ্রুবকঃ আদর্শ গ্যাস সমীকরণ মতে নির্দিষ্ট তাপমাত্রা ও চাপে 1 মোল পরিমাণ সকল গ্যাসের আয়তন ধ্রুব। এ ধ্রুবকে মোলার গ্যাস ধ্রুবক বলে। একে R দ্বারা সূচিত করা হয়। এ কে সর্বজনীন গ্যাস ধ্রুবকও বলে। মোলার গ্যাস ধ্রুবক এর মাত্রা নির্ণয়ঃ আদর্শ গ্যাস সমীকরণ হতে পাই - PV = nRT R = (PV) ÷ (nT) এখানে, P = চাপ, V = আয়তন, n = মোল সংখ্যা, R = মোলার গ্যাস ধ্রুবক, T = তাপমাত্রা। একক ক্ষেত্রফলে প্রযুক্ত বলকে চাপ বলে। অর্থাৎ চাপ P = (বল ÷ ক্ষেত্রফল) P = বল ÷(দৈর্ঘ্য)² আয়তন V = (দৈর্ঘ্য)³ অতএব R =[ (বল ÷ ক্ষেত্রফল) x আয়তন] ÷ [মোল সংখ্যা x তাপমাত্রা] R = [বল x (দৈর্ঘ্য)³]÷ [ (দৈর্ঘ্য)² x মোল সংখ্যা x তাপমাত্রা] R = (বল x দৈর্ঘ্য) ÷ (মোল সংখ্যা x কেলভিন) R = কাজ x মোল সংখ্যা-¹ x কেলভিন-¹ (যেহেতু বল x দৈর্ঘ্য = কাজ) এটিই হচ্ছে R এর মাত্রা। তাৎপর্যঃ R = কাজ x মোল সংখ্যা-¹ x কেলভিন-¹ ...
প্রতীক ও সংকেতের মধ্যে পার্থক্য কি? প্রতীক ও সংকেতের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপঃ ১. কোন মৌলের পূর্ণনামের সংক্ষিপ্ত প্রকাশকে প্রতীক বলে। অন্যদিকে, সংকেত হচ্ছে কোন পদার্থের সংক্ষিপ্ত প্রকাশ। ২. প্রতীক শুধু মৌলিক পদার্থের জন্য লেখা হয়। কিন্তু, সংকেত মৌলিক ও যৌগিক উভয় পদার্থের জন্য লেখা হয়। ৩. প্রতীক মৌলের একটি পরমাণুকে নির্দেশ করে। অপরদিকে, সংকেত পদার্থের একটি অনুকে নির্দেশ করে।
রাদারফোর্ড ও বোর পরমাণু মডেলের মধ্যে তুলনা। রাদারফোর্ড ও বোর উভয়ে পরমাণু মডেলের ব্যাখ্যা করলেও তাদের মধ্যে কিছু সাদৃশ্য বৈসাদৃশ্য বিদ্যামান আছে। নিচে রাদারফোর্ড ও বোর মডেলের তুলনা করা হলোঃ সাদৃশ্যঃ ১. রাদারফোর্ড ও বোর মডেল দ্বারা শুধু এক ইলেকট্রন বিশিষ্ট পরমাণুর গঠন ব্যাখ্যা করা যায়। ২. উভয় মডেল অনুসারে পরমাণুর অভ্যন্তরস্থ বেশিরভাগ স্থান ফাঁকা। ৩. রাদারফোর্ড ও বোর মডেল অনুসারে পরমাণুর কেন্দ্রে ধনাত্মক আধান ও প্রায় সমগ্র ভর কেন্দ্রীভূত থাকে। বৈসাদৃশ্যঃ ১. রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেলে শক্তিস্তরের আকার ও আকৃতি সম্বন্ধে কোন ধারণা দেওয়া হয়নি। কিন্তু বোরের পরমাণু মডেলে বৃত্তাকার শক্তিস্তরের ধারণা দেওয়া হয়েছে। ২. রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেলের সাহায্যে পারমাণবিক বর্ণালী ব্যাখ্যা করা যায় না। কিন্তু বোরের পরমাণু মডেলে বর্ণালী সম্পর্কে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। ৩. রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেল ইলেকট্রনের কৌণিক ভরবেগের ধারণা দেয় না। কিন্তু বোরের পরমাণু মডেলে ইলেকট্রনের কৌণিক ভরবেগের ধারণা দেওয়া হয়েছে। ৪. শক্তির শোষণ বা বিকিরণ সম্বন্ধে কোন ধারনা ...