কপার(Cu) ও ক্রোমিয়ামের(Cr) ইলেকট্রন বিন্যাস ব্যতিক্রম কেন? কপার ও ক্রোমিয়াম এর ইলেকট্রন বিন্যাস নিম্নরূপঃ Cu (29)----> 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3p⁶ 4s¹ 3d¹º Cr (24) -----> 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3p⁶ 4s¹ 3d⁵ ইলেকট্রন বিন্যাস থেকে দেখা যায়, কপারের ক্ষেত্রে 4s² 3d⁹ থেকে 4s¹ 3d¹º হয়েছে এবং ক্রোমিয়াম এর ক্ষেত্রে 4s² 3d⁴ থেকে 4s¹ 3d⁵ হয়েছে। কোন মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাসে যদি সর্ববহিঃস্থ শক্তির অরবিটাল অর্ধপূর্ণ বা পূর্ণ অবস্থায় থাকে তবে ঐ মৌলের স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি পায়। এজন্য কপারের ইলেকট্রন বিন্যাসে বহিঃস্থ শক্তিস্তরে 4s² 3d⁹ এর পরিবর্তে 4s¹ 3d¹º হয় এবং ক্রোমিয়াম এর ক্ষেত্রে 4s² 3d⁴ এর পরিবর্তে 4s¹ 3d⁵ হয়। স্থিতিশীলতার জন্য কপার ও ক্রোমিয়ামের ইলেকট্রন বিন্যাসের ব্যতিক্রম দেখা যায়।
মুক্তজোড় ইলেকট্রন ও বন্ধন জোড় ইলেকট্রন কাকে বলে। মুক্তজোড় ইলেকট্রনঃ কোন পরমাণুর যোজ্যতা স্তরে বা সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরে যে ইলেকট্রন গুলো বন্ধন গঠনে অংশগ্রহণ করে না তাদেরকে মুক্তজোড় ইলেকট্রন বলে। যেমন ঃ ক্লোরিনের ইলেকট্রন বিন্যাস করলে দেখা যায় Cl (17) ---> 1s² 2s²2p⁶ 3s² 3Px² 3Py² 3Pz¹ এখানে, ক্লোরিনের সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তর অর্থাৎ তৃতীয় শক্তিস্তরে 3s² 3Px² 3Py² অরবিটাল গুলোতে দুটি করে ইলেকট্রন বিদ্যমান থাকে। এই ইলেকট্রনগুলি বন্ধন গঠনে অংশগ্রহণ করে না। এজন্য এই ইলেকট্রনগুলি কে মুক্তজোড় ইলেকট্রন বলে। এখানে ক্লোরিনের তিন জোড়া মুক্তজোড় ইলেকট্রন আছে। বন্ধন জোড় ইলেকট্রনঃ পরমাণু যোজ্যতা স্তরে বা সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরে যে ইলেকট্রনগুলি বন্ধন গঠনে অংশগ্রহণ করে তাদেরকে বন্ধন জোড় ইলেকট্রন বলে। কোন পরমাণু ইলেকট্রন বিন্যাস করলে তার সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরে যে বেজোড় ইলেকট্রন গুলি থাকে সেই ইলেকট্রনগুলি বন্ধন গঠনে অংশগ্রহণ করে। কাজেই বলা যায়, কোন পরমাণুর সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরে যতটি বেজোড় ইলেকট্রন থাকে ঐ পরমাণু ততটি বন্ধন গঠন করতে পারে। যেমনঃ ক্লোরিনের ইলেকট
জারণ সংখ্যা নির্ণয়ের সহজ পদ্ধতি। জারণ সংখ্যাঃ যৌগ গঠনের সময় একটি মৌল অপর মৌলের সাথে যুক্ত হতে যে কয়টি ইলেকট্রন আদান প্রদান করে সেই আদান প্রদানকৃত ইলেকট্রনের সংখ্যাকে জারণ সংখ্যা বলে। জারণ সংখ্যা ধনাত্মক, ঋণাত্মক, ভগ্নাংশ এবং শূন্য হতে পারে। একটি মৌলের একাধিক জারণ সংখ্যা হতে পারে। একে পরিবর্তনশীল জারণ সংখ্যা বলে। কোন যৌগে নির্দিষ্ট মৌলের অজানা জারণ সংখ্যা নির্ণয়ের জন্য কিছু নির্দিষ্ট মৌলের জারণ সংখ্যা মনে রাখা প্রয়োজন। জানা মৌলের জারণ সংখ্যার সাহায্যে কোন মৌলের অজানা জারণ সংখ্যা সহজেই নির্ণয় করা যায়। যেসব মৌলের জারণ সংখ্যা মনে রাখা প্রয়োজন তা নিম্নরূপঃ ১. চার্জ নিরপেক্ষ পরমাণুর জারণ সংখ্যা শূন্য হয়। যেমনঃ Na ; K ; Mg ; Ca ; Fe ইত্যাদি। ২. দ্বি-মৌলিক গ্যাসের জারণ সংখ্যা শূন্য। যেমনঃCl₂ ; Br₂ ; I₂ ; N₂ ; O₂ ; F₂ ; H₂ ইত্যাদি। ৩. নিষ্ক্রিয় গ্যাসের জারণ সংখ্যা শূন্য। যেমনঃ He ; Ne ; Ar ; Kr ; Xe ; Rn. ৪. গ্রুপ- 1 এর মৌল সমূহের জারণ সংখ্যা +1. যেমনঃ H ; Li ; Na ; K ; ইত্যাদি। ৫. গ্রুপ -2 এর মৌলসমূহের জারণ সংখ্যা +2. যেমনঃ Be ; Mg ; Ca ইত্যাদি।
COD ও BOD কাকে বলে? COD : কোন নমুনা পানিতে মোট কতটুকু রাসায়নিক দ্রব্য আছে তা পরিমাপের মানদন্ডকে Chemical Oxygen Demand বা সংক্ষেপে COD বলা হয়। BOD : কোন নমুনা পানিতে জৈব দূষক পচনের জন্য কি পরিমাণ অক্সিজেন দরকার তার মানদণ্ডকে Biological Oxygen Demand বা BOD বলে।
জারক ও বিজারক কাকে বলে? কিভাবে জারক ও বিজারক সহজেই চেনা যায়। জারকঃ যে সকল রাসায়নিক পদার্থ অন্য রাসায়নিক পদার্থকে জারিত করে এবং সেই সাথে নিজে বিজারিত হয় তাকে জারক বলে। যেমন - জিংক এবং কপার সালফেটের বিক্রিয়ায় কপার সালফেট জারক হিসেবে কাজ করে। রাসায়নিক বিক্রিয়ার সময় জারক ইলেক্ট্রন গ্রহন করে। Zn +CuSO4 ------> ZnSO4 +Cu এই বিক্রিয়ায় কপার আয়ন দুটি ইলেক্ট্রন গ্রহন করে কপার ধাতুতে পরিনত হয়েছে। অর্থাৎ কপারের বিজারন ঘটেছে। বিজারন বিক্রিয়ায় যারা অংশগ্রহন করে তারা জারক।কাজেই এই বিক্রিয়ায় কপার জারক। জারক যেহেতু ইলেক্ট্রন গ্রহন করে সেহেতু জারকের ধনাত্বক আধান উৎপাদে হ্রাস পায়। অর্থাৎ সকল জারন- বিজারন বিক্রিয়ায় যে বিক্রিয়কের জারন সংখ্যা বা ধনাত্বক আধান উৎপাদে হ্রাস পায় সেই বিক্রিয়কটিই জারক। কিছু জারকের উদাহরন - সকল অধাতু, হ্যালোজেন, KMnO4, K2Cr2O7, HNO3, গাঢ় H2SO4, SO2, ইত্যাদি। বিজারক ঃ যে সকল রাসায়নিক পদার্থ অন্য রাসায়নিক পদার্থকে বিজারিত করে এবং সেই সাথে নিজে জারিত হয় তাকে বিজারক বলে। বিজারক পদার্থ রাসায়নিক বিক্রিয়ার সময় ইলেক্ট্রন ত্যাগ করে। জারন বিক্রিয়ায় যারা অংশগ্রহন
সালফার পরিবর্তনশীল যোজনী প্রদর্শন করে কেন? যেসব মৌলের একাধিক যোজনী বিদ্যামান তাদেরকে পরিবর্তনশীল যোজনী বলা হয়। আধুনিক সংজ্ঞা মতে অধাতব মৌলের সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরে বিজোড় ইলেকট্রনের সংখ্যা ঐ মৌলের যোজনী নির্দেশ করে। সালফারের স্বাভাবিক ও উত্তেজিত অবস্থায় ইলেকট্রন বিন্যাস নিম্নরূপঃ S(16)----> 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3Px² 3Py¹ 3Pz¹ S*(16)---> 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3Px¹ 3Py¹ 3Pz¹3dxy¹ S²*(16)--->1s² 2s² 2p⁶ 3s¹ 3Px¹ 3Py¹ 3Pz¹ 3dxy¹ 3dyz¹ S এর ইলেকট্রন বিন্যাস থেকে দেখা যায় স্বাভাবিক অবস্থায় বহিঃস্থ শক্তিস্তরে বেজোড় ইলেকট্রন দুইটি আছে। এ কারণে সালফারের স্বাভাবিক অবস্থায় যোজনী 2. আবার প্রথমবার উত্তেজিত করলে 3Px অরবিটাল থেকে 3dxy অরবিটালে একটি ইলেকট্রন স্থানান্তরিত হয়। এ অবস্থায় সালফারের চারটি বিজোড় ইলেকট্রন পাওয়া যায়। এজন্য সালফারের যোজনী 4 হয়। আবার সালফারকে দ্বিতীয় বার উত্তেজিত করলে 3s অরবিটাল থেকে 3dyz অরবিটালে আরেকটি ইলেকট্রন স্থানান্তরিত হয়। এই অবস্থায় বিজোড় ইলেকট্রন পাওয়া যায় 6 টি। এজন্য সালফার এর যোজনী 6 হয়। যেহেতু সালফারের যোজনী 2,4,
প্রাইমারি স্ট্যান্ডার্ড ও সেকেন্ডারি স্ট্যান্ডার্ড পদার্থ কাকে বলে? প্রাইমারি স্ট্যান্ডার্ড পদার্থঃ যেসব পদার্থ রাসায়নিক নিক্তিতে ওজন করা যায়, বাতাসের জলীয় বাষ্প, কার্বন-ডাই-অক্সাইড ইত্যাদির সাথে বিক্রিয়া করে না এবং যাদের দ্বারা তৈরিকৃত দ্রবণের ঘনমাত্রা দীর্ঘদিন অপরিবর্তিত থাকে তাদেরকে প্রাইমারি স্ট্যান্ডার্ড পদার্থ বলে। যেমনঃ সোডিয়াম কার্বনেট (Na₂CO₃), অক্সালিক এসিড (C₂H₂O₄ .2H₂O) ,K₂Cr₂O₇ ইত্যাদি। প্রাইমারি স্ট্যান্ডার্ড পদার্থের বৈশিষ্ট্যঃ ১. রাসায়নিক নিক্তিতে ওজন করা যায় এবং নিক্তির কোন ক্ষতি করে না। ২. বায়ুমণ্ডলের জলীয় বাষ্প, কার্বন-ডাই-অক্সাইড এদের সাথে বিক্রিয়া করে না। ৩. তৈরিকৃত দ্রবণের ঘনমাত্রা দীর্ঘদিন অপরিবর্তিত থাকে। ৪. ত্বকের কোনো ক্ষতি করেনা।। ৫. সাধারণ তাপমাত্রায় এরা কঠিন অবস্থায় থাকে। সেকেন্ডারি স্ট্যান্ডার্ড পদার্থঃ যে সকল পদার্থ রাসায়নিক নিক্তিতে ওজন করা যায় না, বায়ুমন্ডলের জলীয়বাষ্প, কার্বন ডাই অক্সাইড এদের সাথে বিক্রিয়া করে এবং এদের দ্বারা তৈরিকৃত দ্রবণের ঘনমাত্রা কিছুক্ষণ পরে পরিবর্তিত হয়ে যায় তাদেরকে সেকেন্ড
মোলার গ্যাস ধ্রুবক এবং এর মাত্রা, তাৎপর্য ও মান নির্ণয়। মোলার গ্যাস ধ্রুবকঃ আদর্শ গ্যাস সমীকরণ মতে নির্দিষ্ট তাপমাত্রা ও চাপে 1 মোল পরিমাণ সকল গ্যাসের আয়তন ধ্রুব। এ ধ্রুবকে মোলার গ্যাস ধ্রুবক বলে। একে R দ্বারা সূচিত করা হয়। এ কে সর্বজনীন গ্যাস ধ্রুবকও বলে। মোলার গ্যাস ধ্রুবক এর মাত্রা নির্ণয়ঃ আদর্শ গ্যাস সমীকরণ হতে পাই - PV = nRT R = (PV) ÷ (nT) এখানে, P = চাপ, V = আয়তন, n = মোল সংখ্যা, R = মোলার গ্যাস ধ্রুবক, T = তাপমাত্রা। একক ক্ষেত্রফলে প্রযুক্ত বলকে চাপ বলে। অর্থাৎ চাপ P = (বল ÷ ক্ষেত্রফল) P = বল ÷(দৈর্ঘ্য)² আয়তন V = (দৈর্ঘ্য)³ অতএব R =[ (বল ÷ ক্ষেত্রফল) x আয়তন] ÷ [মোল সংখ্যা x তাপমাত্রা] R = [বল x (দৈর্ঘ্য)³]÷ [ (দৈর্ঘ্য)² x মোল সংখ্যা x তাপমাত্রা] R = (বল x দৈর্ঘ্য) ÷ (মোল সংখ্যা x কেলভিন) R = কাজ x মোল সংখ্যা-¹ x কেলভিন-¹ (যেহেতু বল x দৈর্ঘ্য = কাজ) এটিই হচ্ছে R এর মাত্রা। তাৎপর্যঃ R = কাজ x মোল সংখ্যা-¹ x কেলভিন-¹ এখান থেকে দেখা যায়, চাপ স্থির রেখে এক মোল আদর্শ গ্যাসের তাপমাত্রা এক কেলভিন বৃদ্ধি করলে যে পরিমাণ সম্প্রসারণ
প্রতীক ও সংকেতের মধ্যে পার্থক্য কি? প্রতীক ও সংকেতের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপঃ ১. কোন মৌলের পূর্ণনামের সংক্ষিপ্ত প্রকাশকে প্রতীক বলে। অন্যদিকে, সংকেত হচ্ছে কোন পদার্থের সংক্ষিপ্ত প্রকাশ। ২. প্রতীক শুধু মৌলিক পদার্থের জন্য লেখা হয়। কিন্তু, সংকেত মৌলিক ও যৌগিক উভয় পদার্থের জন্য লেখা হয়। ৩. প্রতীক মৌলের একটি পরমাণুকে নির্দেশ করে। অপরদিকে, সংকেত পদার্থের একটি অনুকে নির্দেশ করে।
রাদারফোর্ড ও বোর পরমাণু মডেলের মধ্যে তুলনা। রাদারফোর্ড ও বোর উভয়ে পরমাণু মডেলের ব্যাখ্যা করলেও তাদের মধ্যে কিছু সাদৃশ্য বৈসাদৃশ্য বিদ্যামান আছে। নিচে রাদারফোর্ড ও বোর মডেলের তুলনা করা হলোঃ সাদৃশ্যঃ ১. রাদারফোর্ড ও বোর মডেল দ্বারা শুধু এক ইলেকট্রন বিশিষ্ট পরমাণুর গঠন ব্যাখ্যা করা যায়। ২. উভয় মডেল অনুসারে পরমাণুর অভ্যন্তরস্থ বেশিরভাগ স্থান ফাঁকা। ৩. রাদারফোর্ড ও বোর মডেল অনুসারে পরমাণুর কেন্দ্রে ধনাত্মক আধান ও প্রায় সমগ্র ভর কেন্দ্রীভূত থাকে। বৈসাদৃশ্যঃ ১. রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেলে শক্তিস্তরের আকার ও আকৃতি সম্বন্ধে কোন ধারণা দেওয়া হয়নি। কিন্তু বোরের পরমাণু মডেলে বৃত্তাকার শক্তিস্তরের ধারণা দেওয়া হয়েছে। ২. রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেলের সাহায্যে পারমাণবিক বর্ণালী ব্যাখ্যা করা যায় না। কিন্তু বোরের পরমাণু মডেলে বর্ণালী সম্পর্কে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। ৩. রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেল ইলেকট্রনের কৌণিক ভরবেগের ধারণা দেয় না। কিন্তু বোরের পরমাণু মডেলে ইলেকট্রনের কৌণিক ভরবেগের ধারণা দেওয়া হয়েছে। ৪. শক্তির শোষণ বা বিকিরণ সম্বন্ধে কোন ধারনা রাদারফোর্ডের পরমাণু
Comments
Post a Comment