রাসায়নিক বন্ধন গঠনের কারণ?

রাসায়নিক বন্ধন গঠনের কারণ?




পর্যায় সারণিতে 18 নম্বর গ্রুপের মৌলসমূহের সর্ববহিঃস্থ  শক্তিস্তরে আটটি করে ইলেকট্রন বিদ্যমান থাকায় এরা রাসায়নিকভাবে নিষ্ক্রিয় অর্থাৎ স্থিতিশীল। 
পর্যায় সারণির অন্য মৌলগুলো ক্ষেত্রে দেখা যায় তাদের সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরে নিকটতম নিষ্ক্রিয় গ্যাস অপেক্ষা এক বা একাধিক ইলেকট্রন কম বা বেশি থাকে। এজন্য মৌল সমূহ স্থিতিশীলতা লাভের জন্য তাদের সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরে এক বা একাধিক ইলেকট্রন গ্রহণ, বর্জন বা শেয়ারের মাধ্যমে তাদের নিকটতম নিষ্ক্রিয় গ্যাসের ইলেকট্রন বিন্যাস লাভ করে স্থিতিশীলতা অর্জনের চেষ্টা করে। 
একই মৌলের বা বিভিন্ন মৌলের দুটি পরমাণু যখন কাছাকাছি অবস্থান করে তখন তারা তাদের সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরে ইলেকট্রন গ্রহণ, বর্জন বা শেয়ার ঘটে। এর মাধ্যমে তারা তাদের নিকটতম নিষ্ক্রিয় গ্যাসের ইলেকট্রন বিন্যাস অর্জন করে। 
এর মাধ্যমে তাদের মধ্যে এক ধরনের আকর্ষণের সৃষ্টি হয় যাকে আমরা রাসায়নিক বন্ধন বলি। 
কাজেই বলা যেতে পারে রাসায়নিক বন্ধন গঠনের মূল কারণ হলো পরমাণুগুলোর সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরের ইলেকট্রন গুলো নিষ্ক্রিয় গ্যাসের স্থিতিশীল ইলেকট্রন বিন্যাস লাভের প্রবণতা।
 
যেমনঃ দুটি ক্লোরিন পরমাণু নিজেদের মধ্যে একটি করে ইলেকট্রন শেয়ারের মাধ্যমে ক্লোরিন অনু গঠন করে এবং আর্গনের ইলেকট্রন বিন্যাস লাভ করে স্থিতিশীলতা অর্জন করে। 
আবার পানি অণুতে একটি অক্সিজেন পরমাণুর সাথে দুটি হাইড্রোজেন পরমাণু ইলেকট্রন শেয়ারের মাধ্যমে পানি অনু গঠিত হয়। 
এতে অক্সিজেনের বাইরে শক্তিস্তরে আটটি ইলেকট্রন এবং হাইড্রোজেনের বাইরে শক্তিস্তরে দুটি ইলেকট্রন পূর্ণ করে। 
আবার পটাশিয়াম ক্লোরাইড অণুতে পটাশিয়াম তার সর্ববহিঃস্থ শক্তি স্তর থেকে একটি ইলেকট্রন ক্লোরিন পরমাণু কে দান করে পটাশিয়াম তার নিকটতম নিষ্ক্রিয় গ্যাস আর্গনের ইলেকট্রন বিন্যাস লাভ করে 
অন্যদিকে ক্লোরিন পরমাণু পটাশিয়াম থেকে একটি ইলেকট্রন তার সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরে গ্রহণ করে নিকটতম নিষ্ক্রিয় গ্যাস আর্গনের ইলেকট্রন বিন্যাস লাভ করে এভাবে মৌল সমূহ তাদের সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তর থেকে এক বা একাধিক ইলেকট্রন গ্রহণ বর্জন বা শেয়ারের মাধ্যমে নিকটতম নিষ্ক্রিয় গ্যাসের ইলেকট্রন বিন্যাস লাভ করে স্থিতিশীলতা অর্জন করে।
অর্থাৎ মৌলসমূহের রাসায়নিক বন্ধন গঠনের মূল কারণ তাদের সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরে নিষ্ক্রিয় গ্যাসের স্থিতিশীল ইলেকট্রন বিন্যাস লাভ করা।

Comments

Popular posts from this blog

কপার(Cu) ও ক্রোমিয়ামের(Cr) ইলেকট্রন বিন্যাস ব্যতিক্রম কেন?

মুক্তজোড় ইলেকট্রন ও বন্ধন জোড় ইলেকট্রন কাকে বলে।

জারণ সংখ্যা নির্ণয়ের সহজ পদ্ধতি।

COD ও BOD কাকে বলে?

জারক ও বিজারক কাকে বলে? কিভাবে জারক ও বিজারক সহজেই চেনা যায়।

সালফার পরিবর্তনশীল যোজনী প্রদর্শন করে কেন?

প্রাইমারি স্ট্যান্ডার্ড ও সেকেন্ডারি স্ট্যান্ডার্ড পদার্থ কাকে বলে?

মোলার গ্যাস ধ্রুবক এবং এর মাত্রা, তাৎপর্য ও মান নির্ণয়।

প্রতীক ও সংকেতের মধ্যে পার্থক্য কি?

রাদারফোর্ড ও বোর পরমাণু মডেলের মধ্যে তুলনা।